ম্যানেজিং কমিটি নিয়োগ: এবার আদালতে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়

শিক্ষা মন্ত্রণালয়
শিক্ষা মন্ত্রণালয়  © ফাইল ছবি

বেসরকারি স্কুল-কলেজ রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত রাখতে সরকারি কর্মকর্তাদের দিয়ে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করে নীতিমালায় আমূল পরিবর্তন আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ সিদ্ধান্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের পাশাপাশি সচেতন নাগরিক এবং অভিভাবকরাও সন্তোষ প্রকাশ করেন। তবে ম্যানেজিং কমিটি গঠন সংক্রান্ত নীতিমালা বৈষম্যমূলক উল্লেখ করে আদালতে রিট দায়ের করা হয়। রিটের প্রেক্ষিতে ম্যানেজিং কমিটি গঠন সংক্রান্ত পরিপত্র স্থগিত করে আদালত। আদালতের এ স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছে, স্কুল-কলেজের ম্যানেজিং কমিটিকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন একটি সুপারিশ করেছিল। সেই সুপারিশে ম্যানেজিং কমিটিতে সরকারি চাকরিজীবীদের রাখার সুপারিশ করা হয়। ওই সুপারিশ বাস্তবায়নে নীতিমালা এভাবে তৈরি করা হয়েছে। এটিকে বাধাগ্রস্থ করার চেষ্টা চলছে। এই চেষ্টার বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘ম্যানেজিং কমিটি গঠন সংক্রান্ত যে নীতিমালা করা হয়েছে, তা নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী অভিভাবক সবাই স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। আমাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। আদালতে রিটের বিষয়টি আমরা আদালতের মাধ্যমেই মোকাবেলা করব। বিষয়টি নিয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। শিগগিরই আপিল করা হবে।’

আপিলে মন্ত্রণালয় কী বলবে, ‘এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা আদালতকে বিষয়টি বোঝাব। বিষয়টি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশের প্রেক্ষিতে করা হয়েছে। এই বিষয়টি আদালতকে বলা হবে। এর পর আদালত বিষয়টি নিয়ে কী সিদ্ধান্ত দেয় সেটির জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’

এর আগে নিয়মিত কমিটি গঠন ও অ্যাডহক কমিটি বিলুপ্তির সময়সীমাসংক্রান্ত পরিপত্র স্থগিত চেয়ে আদালতে রিট করেন আইনজীবী ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেন, নয়টি বোর্ড ম্যানেজিং কমিটি পরিচালনাসংক্রান্ত প্রবিধানমালায় সংশোধন আনে। এতে দেখা যায় সরকারি, আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কর্মরত নবম গ্রেডের নিচে নন এমন কর্মকর্তা এবং অবসরপ্রাপ্ত হলে পঞ্চম গ্রেডের কর্মকর্তা— সভাপতি হতে পারবেন। অর্থাৎ বেসরকারি এসব প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পাবলিক সার্ভেন্ট ছাড়া কেউ হতে পারবে না; যা বৈষম্যমূলক। আগে সভাপতি নির্বাচনের মাধ্যমে হতেন। প্রবিধানমালার সংশোধিত ১৩(১) এবং ৬৪(৩) বিধির বৈধতা নিয়ে রিটটি করা হয়।

এই আইনজীবী আরও বলেন, সংশোধিত ১৩(১) এবং ৬৪(৩) বিধি কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। অ্যাডহক কমিটি বিলুপ্তসংক্রান্ত ৮ সেপ্টেম্বরের পরিপত্রের কার্যক্রম স্থগিত করেছেন আদালত। ফলে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গঠিত অ্যাডহক কমিটি কাজ চালিয়ে যেতে পারবে। আদালতে রুলের বিষয়ে পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, আদালতের নির্দেশনার প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমরা জবাব দেব। রিটের পক্ষে যে রুল জারি করা হয়েছে, সেটি স্থগিত করার জন্য বিষয়টি আইনিভাবেই মোকাবেলা করা হতে পারে।’ 


সর্বশেষ সংবাদ