পরীক্ষা না হলে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির মূল্যায়ন কীভাবে?

চলতি বছর থেকে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে কোনও পরীক্ষা হবে না
চলতি বছর থেকে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে কোনও পরীক্ষা হবে না  © ফাইল ফটো

চলতি বছর থেকে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে কোনও পরীক্ষা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। শিক্ষার্থীদের প্রচলিত পরীক্ষা বা মডেল টেস্ট নেওয়া যাবে না। এ দুই শ্রেণিতে নতুন কারিকুলামে পাঠদান চলছে। তবে অনেকে দ্বিধায় পড়েছেন, পরীক্ষা না হলে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন কীভাবে হবে?

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্রে জানা গেছে, এ দুই শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক মূল্যায়ন চলছে। তবে প্রচলিত দুই বা তিন ঘণ্টার যে পরীক্ষা প্রক্রিয়া, তা আর চলবে না। এর পরিবর্তে সারা বছর যে সব কার্যক্রম চলে, তার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন হবে।

অর্থ্যাৎ শিক্ষার্থীরা সারা বছর যেসব কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকবে, তার মূল্যায়ন হবে। এর ৬০ শতাংশ নিয়ে ছয় মাস ও ১২ মাস পরপর মূল্যায়ন পরীক্ষা হবে। এ দুই সময়ে শিক্ষার্থীদের দু’টি পরীক্ষা হবে। তবে সেটিও প্রচলিত লিখিত পরীক্ষার মতো নয়। শিক্ষার্থীরা বাস্তবে কী শিখছে, তার প্রায়োগিত পরীক্ষা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে এনসিটিবির সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, পরীক্ষা শব্দটির দীর্ঘদিনের চর্চার কারণে এমন ধারণা জন্মেছে যে, একটি নির্দিষ্ট দিনে দুই বা তিন ঘণ্টা নির্দিষ্ট সময়ে লিখে উত্তরপত্র জমা দেবে। তবে আমরা ধারাবাহিক মূল্যায়নের কথা বলেছি শুরু থেকেই। এর মানে হলো, শিক্ষার্থীরা সব সময় কোনও না কোনও প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান আরও বলেন, এর কিছু এভিডেন্স তৈরি হচ্ছে। তার ভিত্তিতে মূল্যায়নটা হয়। বইয়ের মধ্যেই মূল্যায়ন ছক দেওয়া আছে। অন্য জায়গায়ও দেওয়া আছে। শিক্ষকেরা সেটি অনুসরণ করে শিক্ষকেরা মূল্যায়ন করে যাচ্ছে। তবে কথা বলা হচ্ছে, পরীক্ষাটা তো হচ্ছে না। আসলে শিক্ষকেরা প্রতিনিয়ত পরীক্ষা নিচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, আগের মতো তিন বা দুই ঘণ্টার পরীক্ষা না। অনেকটা প্রয়োগিক বা প্র্যাকটিক্যাল টাইপের পরীক্ষা হবে। এখন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক কারিকুলাম। কাকে বলে, কত প্রকার কি কি? এ জাতীয় নয়। যেটা জানে সেটা করতে পারে কি-না, তা যাচাই করা হবে। যেমন- কেমন করে সাতার কাটে সেটা বইতে লিখে দেওয়া হলো। কিন্তু আসলে সাতার পারে কি-না, সেটার প্রমাণ পাওয়া যাবে না।

অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান আরও বলেন, সাতার কাটলেই জানা যাবে যে, সাতার পারে কি-না। কাজটা দক্ষতার সঙ্গে করতে পারছে কি-না, সে যোগ্যতা আছে কি-না, সেটি জানা। এটা করতে গেলে আসলে তিন ঘণ্টার পরীক্ষায় বোঝা যাবে না। সে জন্য এভাবে পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে।

এর আগে মাউশির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন হবে এনসিটিবির গাইডলাইন অনুযায়ী। এর বিষয়ে পরে স্কুলগুলোকে জানিয়ে দেওয়া হবে। নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিখন-শেখানো ও মূল্যায়ন কার্যক্রমের ক্ষেত্রে এনসিটিবির নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে। প্রচলিত পরীক্ষা বা মডেল টেস্ট নেওয়া যাবে না। 

নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তারা নিয়মিত পরিবীক্ষণ জোরদার করবেন। নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে সবাইকে সচেষ্ট ও সচেতন থাকতে হবে। এর কোনও ব্যত্যয় ঘটলে সংশ্লিষ্টদের দায়ী করা হবে। এ নির্দেশনার বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে এনসিটিবির পক্ষ থেকে।


সর্বশেষ সংবাদ