অবৈজ্ঞানিকভাবে এগিয়েছে ঢাবি, মন চেয়েছে বিভাগ খুলেছি ছাত্র বাড়িয়েছি

ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভা
ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, শতবর্ষী বিশ্ববিদ্যালয়টি যেভাবে এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, সেভাবে আমরা এগিয়ে যেতে পারিনি। এর মূল কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্প্রসারণ ঘটেছে অবৈজ্ঞানিকভাবে। অতীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরিকল্পিত উন্নয়ন হয়েছে।

তিনি বলেছেন, মন চেয়েছে আমরা বিভাগ খুলেছি, ছাত্র বাড়িয়েছি, যেখানে খুশি ভবন নির্মাণ করেছি। ক্লাসরুমের ধারণক্ষমতার কথা ভাবিনি, হলের আবাসনের কথাও বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন, চিকিৎসাসেবা সবকিছুতেই এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক বেড়েছে। ১০০ বছর আমরা পার করেছি কোনো মাস্টারপ্ল্যান ছাড়াই।

শনিবার বিকেলে ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। 'শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়' উপলক্ষে বছরব্যাপী বিভিন্ন আয়োজনের অংশ হিসেবে অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন এ আলোচনার আয়োজন করে।

উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য মাস্টারপ্ল্যান (মহাপরিকল্পনা) তৈরি করা হচ্ছে। এক বছর ধরে এটির কাজ চলছে। বর্তমানে তা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। মুজিববর্ষের বড় উপহার এই মাস্টারপ্ল্যান, এটি তৈরি হয়ে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব উন্নয়ন পরিকল্পিতভাবে করা হবে।

ঢাবি উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বড় প্যারামিটার অ্যালামনাইরা। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবের ও গর্বের অংশ। জাতির মহৎ অর্জনে, জাতিসত্তার বিকাশে বিশ্বের এক নম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেতে পারে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ. কে. আজাদ। অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী, বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক লুৎফর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া।

সভাপতির বক্তব্যে এ. কে. আজাদ বলেন, অতীতে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। এখন ওয়ার্ল্ড র‌্যাংকিংয়ে কোনো কোনো ম্যাগাজিনের মতে ১০০ এর মধ্যে এ বিশ্ববিদ্যালয় আছে, কোনো কোনোটির মতে তাও নেই। শিক্ষা ও গবেষণার মান বাড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আগের সেই গৌরব ও ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হবে।

সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আজাদ চৌধুরী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মানসম্মান, কৃতিত্বের অংশীদার ছাত্র-শিক্ষক-অ্যালামনাই সবাই। তিনি উপাচার্যের দায়িত্ব পালনকালে এশিয়া উইকের র‌্যাংকিংয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এক নম্বরে এসেছিল। বর্তমানেও র‌্যাংকিংয়ে এগিয়ে যেতে যা দরকার তা করতে হবে। শিক্ষকদের উৎকর্ষ ও গবেষণার মান বাড়াতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ অর্থ খরচ হয় বেতন-ভাতা খাতে। গবেষণার জন্য ১০ শতাংশের বেশি টাকা থাকে না। এটি বাড়াতে হবে। আমরা থেমে নেই, তবে সব বিশ্ববিদ্যালয় যখন দৌড়ায় তখন আমরা হেঁটে চললে পিছিয়েই পড়ব। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, অক্সফোর্ড করোনোর ভ্যাকসিন আবিস্কারের প্রায় কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। এই ধরনের অবদানগুলো মাইলফলক হয়ে থাকে।

প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, গবেষণা ও প্রকাশনার মান বাড়িয়ে ঐতিহ্যের এ বিশ্ববিদ্যালয়কে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে নিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, একটা মাস্টারপ্ল্যান দরকার, আগামী ৫০ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা কেমন দেখতে চাই।

ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি রকিব উদ্দিন আহমদ বলেন, আমি এ বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে হতাশ নই। বঙ্গবন্ধু এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা কৃতিত্ব ও অর্জন বিরল, অসামান্য।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence