ইউএনওর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করা সেই ছাত্রীর সংবাদ সম্মেলন

টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে ছাত্রীর সংবাদ সম্মেলন
টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে ছাত্রীর সংবাদ সম্মেলন  © ফাইল ছবি

টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুর হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করা সেই কলেজ ছাত্রী সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

বুধবার (২৫ মে) দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু অডিটরিয়ামে লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী বলেন, প্রথমে মনজুর হোসেনের সাথে আমার ফেসবুকে পরিচয় হয়। ২০২১ সালের ২৮ জুলাই খালার বাড়ি বাসাইল থেকে নিজ বাড়িতে আসার সময় মনজুর হোসেন (তখন বাসাইলের ইউএনও ছিলেন) সাথে দেখা হয়। তখন লকডাউনের কারণে যানবাহন বন্ধ থাকায় আমার বাড়িতে যেতে সমস্যা হচ্ছিলো। ওই সময় মনজুর হোসেন আমাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেন। করোনার সময় মোবাইল কোর্ট থাকাকালীন গাড়ি বহরে আমাকে তুলেন এবং ডিউটি শেষ করে তার অফিসে গিয়ে চা খেতে বলেন।

আমি তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তার সাথে যাই। তখন তিনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে তার কক্ষে নিয়ে আমাকে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করেন। এতে আমি কান্নাকাটি করলে তিনি আমাকে তার তথ্য গোপন করে বিয়ের আশ্বাস দেন। পরবর্তীতে ওই বছরের ৩ আগস্ট টাঙ্গাইল শহরের এস এস এস রেস্ট হাউজে আমাকে রাখেন। পরবর্তীতে আমার বিয়ে ভেঙে দিয়ে ২২ আগস্ট কুমুদিনী কলেজ সংলগ্ন পাওয়ার হাউজের পিছনে একটি বাসায় আমাকে স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে উঠান। আমার বাসা থেকে খোঁজাখুঁজি করে এক পর্যায়ে ভাড়া বাসায় এসে আমার পরিবারের সদস্যরা আমাকে নিতে চাইলে মনজুর হোসেন বলেন আমাদের বিয়ে হয়েছে, তিন মাস পর কাগজ পাঠিয়ে দেবো।

এরপর আমি বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করলে তিনি আমাকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বিয়ের কথা বলে মেডিকেল ভিসায় গত বছরে ২৪ সেপ্টেম্বর ভারতে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর আমাকে একটি অপারেশন করান। যদিও আমার কোনও ধরণের শারীরিক সমস্যা ছিল না। কিন্তু তিনি আমাকে বলেছিলেন আমরা ভারতে গিয়ে বিয়ে করে সেখান থেকেই বাচ্চা নিয়ে দেশে আসবো। তার আশ্বাসেই আমি ভারতে যাই। সেখানে যাওয়ার পর তার ভিসা ও পাসপোর্টে দেখে আমি জানতে পারি তিনি বিবাহিত এবং তার দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তিনি আমাকে বিয়ের বিষয়টি গোপন করেছেন। ১২ দিন ভারতে অবস্থান করে ২০২১ সালের ৫ অক্টোবর আমরা বাংলাদেশে আসি।

এরপর তার সাথে আমার কোনও ধরনের যোগাযোগ হচ্ছিলো না। তার বন্ধুর কাছ থেকে জানতে পারি তাকে বাসাইল থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়েছে। ১২ জানুয়ায়ী ঢাকার ধানমন্ডিতে তার সাথে আমার দেখা হয়। এরপর থেকে মনজুর হোসেন আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। পরবর্তীতে আমি ২৬ জানুয়ারি নিজ থানায় মামলা দায়ের করি। ৩ ফেব্রুয়ারি জনপ্রশাসন মন্ত্রাণালয়ে লিখিত অভিযোগ দেই। এর প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সোহানা নাসরিন আমাকে এবং মনজুন হোসনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হয়। এর প্রেক্ষিতে গত ৯ এপ্রিল মনজুর হোসেনকে তার কর্মস্থল থেকে ক্লোজ করা হয়। এরপর থেকে তিনি এলাকার মাদকাসক্তের সাথে হাত মিলিয়ে আমাকে বিভিন্নভাবে মানসিক হেনস্থা করে যাচ্ছেন। এমনকি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা পর্নোগ্রাফি মামলাও করা হয়েছে। সেই মামলার ২নং স্বাক্ষীর বিরুদ্ধে মির্জাপুর থানায় মাদক, চুরি, ডাকাতি, খুন ও নারী নির্যাতনের মামলা রয়েছে।

সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়। তদন্ত কমিটি এতে আংশিক সত্যতা পেয়েছে বলে জানতে পেয়েছি। এর ফলে ইউএনও মনজুর হোসেন আমাকে নানাভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে আসছে। এতে আমি চরম নিরাপত্তাহীনতা এবং মানসিকভাবে বিপর্যন্ত হয়ে পড়েছি। একই সাথে তিনি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ভিডিও ছড়িয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করেছেন। এমনকি আমার ছবি এডিট করে নিজ এলাকায় ভূয়া সাংবাদিক পাঠিয়ে মিথ্যা সংবাদ ছাপিয়ে সামাজিকভাবে হেনস্থা করে যাচ্ছেন। গত ২১ মে আমি মিথ্যা সংবাদের বিরুদ্ধে মির্জাপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। আমি আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানচ্ছি। আমি এর সঠিক বিচার চাই। আমি আমার পাপ্য অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই। এজন্য আমি প্রধানমন্ত্রী, জনপ্রশাসন মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, জেলা পুলিশ সুপারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করছি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence