ইউটিউব-ফেসবুকে ভিডিও দেখে জঙ্গিবাদে তরুণ, বইমেলা থেকে গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার রুমেল
গ্রেপ্তার রুমেল  © সংগৃহীত

চট্টগ্রামের একুশে বইমেলা থেকে রুমেল (২২) নামে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রাম কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের (সিটিইউ)। গত সোমবার গ্রেপ্তারের দু’দিন পর বুধবার তার নাম-পরিচয় প্রকাশ করে সিটিইউ জানায়, এই যুবক নিষিদ্ধ সংগঠন আনসার আল ইসলামে যুক্ত।

ইউটিউব ও ফেসবুকে উগ্রবাদী ভিডিও দেখে এবং বক্তব্য শুনেই তিনি জঙ্গি কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়েন বলে জানিয়েছেন সিটিইউ অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) আহমেদ পেয়ার।

তিনি বলেন, রুমেলের বাড়ি নরসিংদীতে। ২০২০ সালে মামার সঙ্গে চট্টগ্রামে আসেন তিনি। চান্দগাঁও এলাকার একটি কারখানায় কাজ নেন তিনি, যেখানে তার মামাও চাকরি করেন। ওই কারখানার একটি কক্ষেই থাকতেন রুমেল।

“চট্টগ্রামে আসার পর শুরুতে সে স্বাভাবিক জীবনযাপন করলেও গত বছরের শেষ দিক থেকে এসে তার মধ্যে পরিবর্তন দেখা যেতে শুরু করে।”

তিনি আরও বলেন, রুমেল ইউটিউব এবং ফেসবুকে উগ্রবাদী কিছু বক্তব্য দেখে মূলত জঙ্গি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে বলে প্রাথমিকভাবে জেনেছি।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেন, আনসার আল ইসলামের ‘আধ্যাত্মিক নেতা’ মাহামুদুল হাছান গুনবীর ওয়াজ ও ‘উম্মাহ্ নেটওয়ার্ক’ নামে একটি ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে ‘উগ্রবাদী’ বক্তব্য শুনে রুমেলের মধ্যে পরিবর্তন আসে। সেখানে বিভিন্ন বিষয়ে মতামত দেওয়ার পর তার সঙ্গে ফেসবুক মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করে উগ্রবাদী দলের সদস্যরা। গত নভেম্বরে তাকে ‘টেলিগ্রাম’ অ্যাপে একটি গ্রুপে যুক্ত করে নেওয়া হয়। এর মাধ্যমে মূলত তিনি তাদের নেটওয়ার্কে যুক্ত হন।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, রুমেল একুশে ফেব্রুয়ারিতে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়াকে ‘খাম্বা ও পিলার’ পূজা বলে মনে করে একুশের বইমেলায় হামলার পরিকল্পনা করেন। মেলায় আসার আগে টেলিগ্রাম গ্রুপে একটি ভয়েস মেসেজও দিয়েছিলেন।

রুমেলের সঙ্গে জড়িত অন্যদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন এডিসি পেয়ার। তিনি বলেন, রুমেলের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা একটি মামলা হয়েছে। এটিইউ এর তদন্ত করবে।

মামলায় বলা হয়েছে, গ্রেপ্তারের পর রুমেলকে সঙ্গে নিয়ে চান্দগাঁও এলাকায় তার থাকার জায়গায় অভিযান চালায় পুলিশ। সেখান থেকে পুলিশ শহীদ মিনারে ফুল দেওয়াবিরোধী প্রচারপত্র, চট্টগ্রামের বইমেলায় ইসলামী বই বিক্রি করতে না দেওয়ার যে গুজব উঠেছিল সে সংক্রান্ত প্রচারপত্র জব্দ করে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের আরও কিছু জিহাদি কর্মকাণ্ড সম্বলিত প্রচারপত্রও জব্দ করা হয়।

এবারের বইমেলায় ‘মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদকে উৎসাহিত করে’- এমন বই রাখা যাবে না বলে গত রবিবার মেলা উদ্বোধনের আগে জানিয়েছিলেন সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন আয়োজিত এবারের একুশে বইমেলার স্টল বরাদ্দের আবেদন ফরমে বলা হয়, মেলার স্টলে স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ও পাইরেটেড কোনো বই রাখা যাবে না। এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ নিয়ে কয়েকদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়া যে বইমেলায় ‘ইসলামী বই বিক্রি করা যাবে না’। তার পরিপ্রেক্ষিতে মেয়র বলেছিলেন, ইসলামী ধর্মীয় বই রাখা যাবে না, এটা কোনোখানে বলা হয়নি।… জঙ্গিবাদের আশ্রয়দাতা যারা জঙ্গিবাদকে উৎসাহিত করে, যে বই পড়ে আমাদের তরুণ প্রজন্ম জঙ্গিবাদে উৎসাহিত হয়- সেসমস্ত বই এই মেলাতে রাখা যাবে না।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence