অসহায় মানুষের নামে ব্যাংক একাউন্ট খুলে ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ

সংবাদ সম্মেলন
সংবাদ সম্মেলন  © সংগৃহীত

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ গ্রামে গরিব-অসহায় মানুষের নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার নাম করে ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে প্রতারক চক্র। এরপর উল্টো মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে ভুক্তভোগীদের। 

শনিবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার চককীর্তি বাজারে ভুক্তভোগী আট পরিবার সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগের কথা জানায়। 

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০২২ সালে চককীর্তি ইউনিয়নের চক হরিপুর গ্রামের আফজালের ছেলে মাহিদুর ও গৌরি সংকরপুর গ্রামের উমর আলীসহ আরও ছয়জনের নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। এসব অ্যাকাউন্ট খোলার প্রলোভন দেন একই ইউনিয়নের গৌরি সংকরপুর এলাকার মোতাহার হোসেন, যিনি এন্তাজ আলীর ছেলে। পরে ২০২৩ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ওই আটটি অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে প্রায় ১০ কোটি টাকার লেনদেন করেন মোতাহার। বিদেশে লোক পাঠানোর কথা বলে তিনি বিভিন্ন জেলা থেকে এই অর্থ সংগ্রহ করেন এবং পরবর্তীতে তা দিয়ে জমি কেনেন এবং বাড়ি নির্মাণ করেন।

ভুক্তভোগী মাহিদুর রহমান বলেন, ‘ছোট থেকেই পরিচিত মোতাহার। একদিন হঠাৎ এসে আমার কাছে জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি চায়। আমি বিশ্বাস করে দিয়ে দিয়েছি। কিছুদিন পরে আমাকে ব্যাংকে নিয়ে গিয়ে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে সই করিয়ে নেয়। আমাকে মাসে মাসে আট হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা জানায়। কিন্তু একটি টাকাও দেয়নি। বিভিন্ন জেলার থেকে মানুষকে বিদেশে পাঠানোর নাম করে আমাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সে। এখন যারা টাকা দিয়েছেন (মোতাহারকে) তারা আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এতে আমরা বিপাকে পড়েছি। কারাগারেও থেকেছি বহুদিন।’

আরেক সিরাজুল ইসলাম ভুক্তভোগী বলেন, ‘এসব টাকা দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষকে বিদেশে পাঠানোর নামে নেওয়া হয়েছে। এখন আমাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট দেখে মামলা করছেন অনেকে। এখন পর্যন্ত আটজনের বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা মামলা হয়েছে। আমরা কারাগারেও থেকেছি। মিথ্যা মামলা কাঁধে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি আমরা।’

স্থানীয় বাসিন্দা উমর আলী বলেন, ‘আমাকে বন্ধু বানিয়ে আমার কাছে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে নিয়েছিলেন মোতাহার। কীভাবে টাকা লেনদেন করেছেন জানি না। হঠাৎ দেখি আমার বাড়িতে পুলিশ। জানায়, আমি নাকি লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছি। অথচ আমি এসবের কিছুই জানি না।’

অভিযুক্ত মোতাহার হোসেন এসব বিষয় অস্বীকার করে বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। আমি ২০০৭ সাল থেকে দুবাইয়ে অবস্থান করছিলাম। কিছুদিন আগেই বাড়িতে এসেছি। এসব অভিযোগের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’

 


সর্বশেষ সংবাদ