ভালো মানুষ সেজে উপজেলা চেয়ারম্যান হতে চেয়েছিলেন আবেদ আলী

সৈয়দ আবেদ আলী
সৈয়দ আবেদ আলী  © সংগৃহীত

বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনসহ (বিসিএসসি) ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির সাবেক চেয়ারম্যানের গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী হতে চেয়েছিলেন মাদারীপুরের ডাসার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। সেজন্য তিনি এলাকার মসজিদ, মন্দির, এতিমখানাসহ গরিবদের মাঝে দান করতেন মুক্ত হস্তে। চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হিসেবে লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে চালিয়েছেন প্রচার প্রচারণায়ও। 

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় অভাবের কারণে পড়াশোনা বাদ দিয়ে জীবন-জীবিকার জন্য ঢাকায় চলে যান। কুলির কাজ করেন। বহু রাত রেলস্টেশনে ঘুমিয়েছেন। এরপর হোটেলে খাবারের প্লেট ধোয়ার কাজ, রিকশা চালানো, চাল বিক্রিসহ যখন যে কাজ পেয়েছেন, করেছেন। রাতে কখনো কখনো ফুটপাতেও ঘুমিয়েছেন। এভাবেই তার শৈশব ও কৈশোর কেটেছে। এরপর গাড়ি চালানো শিখে চাকরি নেন পিএসসিতে। তারপর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। অর্জন করেছেন বিপুল সম্পদ ও ক্ষমতা। দীর্ঘদিন ধরে ডাসার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচনের জন্য প্রচার প্রচারণাও চালিয়ে যাচ্ছেন।

জানা গেছে, স্থানীয় রাজনীতির মাঠে-ময়দানে কোটি টাকার গাড়িতে চড়ে জনসংযোগ করেন আবেদ আলী ও তার ছেলে ছাত্রলীগ নেতা সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম। বাবা-ছেলে এলাকায় দান করেন দুই হাত ভরে। আবেদ আলী গ্রামের বাড়িতে নির্মাণ করেছেন বিলাসবহুল ভবন। বাড়ির পাশে করেছেন মসজিদ। এ ছাড়াও তিনি রাস্তার পাশে সরকারি জায়গা দখল করে নির্মাণ করছেন গরুর খামার ও শপিং সেন্টার। উপজেলার পান্তাপাড়া ও পূর্ব বোতলা গ্রামে কিনেছেন বিপুল সম্পদ।  

এলাকাবাসীরা জানান, ঢাকায়ও তার একাধিক বাড়ি রয়েছে। পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় একটি থ্রি-স্টার হোটেলও রয়েছে তার। আবেদ আলীর ছেলে সিয়াম একাধিক দামি গাড়ি ব্যবহার করেন। লেখাপড়া করেছেন ভারতের শিলংয়ে। তারপর দেশের একটি ব্যয়বহুল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়েছেন। তিনি ডাসার উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। তবে আবেদ আলীর এ অপকর্মের কথা গ্রামের সাধারণ মানুষের কাছে ছিল অজানা। গ্রামের সহজ-সরল মানুষ তাকে ‘ভালো’ মানুষ হিসেবেই জানতেন।  

গ্রেপ্তারের আগে প্রশ্নফাঁসে অভিযুক্ত সৈয়দ আবেদ আলী জীবন একটি গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছে। এসময় সাংবাদিক আবেদ আলীর কাছে জানতে চান, আপনি গাড়িচালক হয়ে এ সম্পদের মালিক হলেন কি করে? উত্তরে আবেদ আলী বলেন, ‘গাড়িচালক ছিলাম ১৫ বছর আগে। এখন তো আমি ব্যবসায়ী’। প্রশ্নফাঁস করে কত টাকা কামিয়েছেন? উত্তরে তিনি বলেন, ‘প্রশ্নফাঁসে যে টাকা কামিয়েছি সব আল্লাহর রাস্তায় খরচ করেছি’।


সর্বশেষ সংবাদ