ইরফানের মৃত্যুর দায় এড়াতে পারে না বিশ্ববিদ্যালয়, বিচার দাবি মায়ের

ইরফানের ছবি হাতে কান্নায় ভেঙে পড়নে তার মা শাহেদ। পাশে তার বোন ওয়াজিহা নাওয়ার সুবাইতা
ইরফানের ছবি হাতে কান্নায় ভেঙে পড়নে তার মা শাহেদ। পাশে তার বোন ওয়াজিহা নাওয়ার সুবাইতা  © সংগৃহীত

মালয়েশিয়ার সারাওয়াক রাজ্যের কুচিং শহরে অবস্থিত সুইনবার্ন ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির শিক্ষার্থী ইরফান সাদিকের মৃত্যুর ঘটনার বিচার দাবি করেছেন তার মা শাহিদা আক্তার। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ঘটনার দায় এড়াতে পারে না উল্লেখ করে তাদের পদক্ষেপ জানতে চেয়েছেন তিনি।

২১ বছর বয়সী ইরফান সাদিক বিশ্ববিদ্যালয়টির হিউম্যান রিসোর্স অব ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। ২০২২ সালের ৩ আগস্ট ইরফান মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। এর আগে এক বছর তিনি অনলাইনে ক্লাস করেছিলেন। গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইরফানের পরিবারকে তার মৃত্যুর খবর জানান। পরে ইরফানের লাশ দেশে পৌঁছায় ২৫ সেপ্টেম্বর।

শাহিদা আক্তার বলেন, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হিসেবে ছেলের বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন কাউন্সেলর থাকার কথা। ছেলের মানসিক অবস্থা খারাপ হয়ে থাকলে ওই কাউন্সেলর কী ভূমিকা পালন করেছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কী পদক্ষেপ নিল?

মালয়েশিয়ায় গিয়ে ইরফান প্রথম যে দুজন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সঙ্গে একই বাসায় থাকতেন তাদের ফোন করে শাহিদা আক্তার ছেলের কথা জানতে চেয়েছেন। একজন বাংলাদেশি শিক্ষককেও ছেলের কথা জানিয়ে খোঁজ রাখতে বলেছিলেন।

আরও পড়ুন: র‍্যাগিংয়েই মৃত্যু হয়েছে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি ছাত্রের, অভিযোগ পরিবারের

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এর দায় এড়াতে পারে না। আমার ছেলের তো আত্মহত্যা করার কথা না। যদি আত্মহত্যা করে থাকে এর পেছনে কারা দায়ী, তা জানতে চাই।

ইরফানের বাবা মো. ইসমাইল ব্যবসা করেন। ইরফানের তিন বোন। ওয়াজিহা নাওয়ার আর ওয়ালিয়া নাওয়ার যমজ। তারা দশম শ্রেণিতে পড়ছে। দিয়ানা জাহিন পড়ছে পঞ্চম শ্রেণিতে। তিন বোনের একমাত্র ভাই, বোনদের সঙ্গেও ইরফানের বন্ধুর মতো সম্পর্ক ছিল।

ইরফানের মৃত্যু নিয়ে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশন ২৬ সেপ্টেম্বর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, এই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর খবর জানার পর মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার অফিসের কাউন্সেলর পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশ দেন।

এতে বলা হয়, ওই কর্মকর্তা শিক্ষার্থীর মারা যাওয়ার স্থান পরিদর্শন করেন এবং তিন দিন অবস্থান করেন। মৃত শিক্ষার্থীর পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে লাশের ময়নাতদন্ত এবং পরবর্তী তদন্ত না করার জন্য আবেদন করা হয়। তাই ময়নাতদন্ত না করে লাশ বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর অনুমতি দেয় কর্তৃপক্ষ।


সর্বশেষ সংবাদ