৩৮ শতাংশ দুই ধরনের, ২৬ শতাংশ শিশু সাইবার নিপীড়নের শিকার

৫৯% ইন্টারনেট-ব্যবহারকারী শিশু সাইবার নিপীড়নের শিকার
৫৯% ইন্টারনেট-ব্যবহারকারী শিশু সাইবার নিপীড়নের শিকার  © সংগৃহীত

ইন্টারনেট ব্যবহারকারী মাধ্যমিকের অর্ধেকের বেশি শিক্ষার্থী যৌন নিপীড়নের শিকার। এমন তথ্য প্রকাশ করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) একদল গবেষক। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যেসব শিশু অন্যদের চেয়ে বেশি ইন্টারনেট ব্যবহার করে তাদের সাইবার নিপীড়নের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। গবেষণার ফলাফল অনুসারে, ৩৮ শতাংশ দুই ধরনের, ২৬ শতাংশ শিশু সাইবার নিপীড়নের শিকার।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল ইউনিভার্সিটির (বিএসএমএমইউ) এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে ইন্টারনেট ব্যবহার করা মোট শিশুর প্রায় ৫৯ শতাংশ অনলাইনে অন্তত এক ধরনের নিপীড়নের শিকার হয়েছে।

বিএসএমএমইউ-এর শহীদ ডা. মিলন হলে গবেষণার ফলাফল অনুসারে, ৩৮ শতাংশ শিশু অন্তত দুই ধরনের সাইবার নিপীড়নের শিকার হয়েছে এবং ২৬ শতাংশ শিশু অন্তত তিন ধরনের নিপীড়নের শিকার হয়েছে। দেশের গ্রামাঞ্চলে ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সী প্রায় ৩৩ শতাংশ শিশু ইন্টারনেট ব্যবহার করে। 

বিশ্ব শিশু দিবস উপলক্ষে বিএসএমএমইউয়ের জনস্বাস্থ্য ও তথ্যবিজ্ঞান বিভাগ কর্তৃক পরিচালিত অন্যান্য চারটি গবেষণার সঙ্গে 'সাইবার চাইল্ড অ্যাবিউজ ইন বাংলাদেশ: আ রুরাল পপুলেশন-বেজড স্টাডি' শীর্ষক গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়।

সমীক্ষায় বলা হয়েছে, শিশুরা জানিয়েছে, তারা সবচেয়ে বেশি যেসব সাইবার নিপীড়নের শিকার হয় সেগুলো হচ্ছে, বুলিং, উপহাস, গুজব বা অপমান (৩৬%), অসদুদ্দেশ্যে বেনামে যোগাযোগ করা (১৯%), সুস্পষ্ট যৌন বার্তা বা মন্তব্য (২১%) এবং যৌনতাপূর্ণ ছবি বা ভিডিও পাওয়া (১৭%)।

ছেলে শিশুরাও বিভিন্ন ধরনের সাইবার নিপীড়নের শিকার হয়েছে। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যেসব শিশু অন্যদের চেয়ে বেশি ইন্টারনেট ব্যবহার করে তাদের সাইবার নিপীড়নের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

গবেষণার প্রধান তদন্তকারী অধ্যাপক ডা. এম আতিকুল হক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'ইন্টারনেট ব্যবহারকারী শিশুরা ট্রল, বুলিং, ন্যুড ছবি চাওয়াসহ বিভিন্ন ধরনের সাইবার অপরাধের শিকার হয়। বাংলাদেশের মানুষের ইন্টারনেট লিটারেসি কম। শিশুদের ইন্টারনেট থেকে দূরে রাখা এ যুগে সম্ভব না। 

আরও পড়ুন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩তম সমাবর্তন শুরু

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইন্টারনেটের অপরাধ জগত থেকে শিশুদের রক্ষায় অভিভাবকদের সচেতনতা জরুরি।

বিএসএমএমইউর উপাচার্য প্রফেসর ডা. মো. শরফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে মোবাইল দেয়া ঠিক না। ষোলো বছরের কম বয়সী শিশুরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে অজান্তেই তারা অনেক অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। যেসব শিশু মোবাইলে আসক্ত, তাদের মোবাইল ফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে। তাদেরকে দিনে সর্বোচ্চ দুই ঘণ্টা, তবে একটানা আধাঘণ্টার বেশি মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে দেয়া যাবে না। এটি করতে পারলে হয়তো সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাবিইউজ থেকে শিশুদের রক্ষা করা যাবে।

প্রকাশিত আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ ১৬.২ শতাংশ। বেশি সময় বসে থাকা, স্থূলতা এবং শারীরিক পরিশ্রম না করাকে ঝুঁকির কারণ হিসেবে পাওয়া গেছে। কোভিড মহামারিকালে ২০ শতাংশ কিশোর-কিশোরী বিভিন্ন মাত্রার অনিদ্রায় আক্রান্ত হয়েছিল। তাদের মাঝে যথাক্রমে ১৮ শতাংশ, ১৪ শতাংশ এবং ১৬ শতাংশ শিশু বিষণ্নতা, উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তায় ভুগছিল।

গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিশু ফেসবুক, টিকটক, হোয়াটসঅ্যাপ এবং চ্যাটরুম ব্যবহার করে। তাদের ইন্টারনেটে যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।

বক্তারা বলেন, ২০২১ সালে বাংলাদেশের শহর ও গ্রামের নবম ও দশম শ্রেণীর ৪৫৬ জন শিক্ষার্থীর উপর পরিচালিত আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, ৫৬ শতাংশ কিশোর ও ৬৪ শতাংশ কিশোরী ইন্টারনেট মাধ্যমে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে। শহুরে শিশুদের মধ্যে ইন্টারনেটে যৌন নিপীড়নের ঘটনা গ্রামীণ শিশুদের চাইতে দেড় গুণেরও বেশি। 


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence