আরও ১০ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি
- টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:২৩ PM
টেকনাফের উপকূলে আবারও বাড়ছে আতঙ্ক। বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকার শেষে ফেরার পথে আরও এক ট্রলারসহ ১০ বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। এর আগে ৬ জেলে অপহরণের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই নতুন করে আরও জেলে নিখোঁজ হওয়ায় উপকূলজুড়ে চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, এ ধরনের ঘটনা এখন নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে, আর জেলেদের জীবিকাই সবচেয়ে বড় ঝুঁকিতে পড়েছে।
বুধবার বিকেলে এসব তথ্য স্বীকার করে টেকনাফ পৌরসভাস্থল কায়ুকখালী ঘাট বোট মালিক সমিতির সভাপতি সাজেদ আহমেদ বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরের মাছ শিকার শেষে ফেরার পথ সেন্টমার্টিনের কাছাকাছি থেকে আরও একটি ট্রলারসহ ১০ মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে গেছে। তার আগে ট্রলারসহ ছয় জেলেকে ধরে নিয়ে যায় আরাকান আর্মি। এ নিয়ে জেলেদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। যার কারনে আমরা সবাই আতঙ্কের মধ্য রয়েছি।’
ধরে নিয়ে যাওয়া ট্রলার মালিক মো. আমিনের বরাত দিয়ে সভাপতি সাজ্জাদ আরও বলেন, ‘ট্রলারটি গত সোমবার তাঁর ঘাট থেকে সাগরে মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে আমার ঘাট ত্যাগ করেন। সর্বশেষ মাছ শিকার ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটেছে।’
এদিকে মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল আরাকান নেটওয়ার্ক জানায়, গত ২৮ অক্টোবর আরাকান আর্মির উপকূলীয় নিরাপত্তা ইউনিট সমুদ্রপথে টহল জোরদার করে। টহলের সময় আরাকান রাজ্যের জলসীমা অতিক্রম করে মাছ ধরতে থাকা কয়েকটি বাংলাদেশি ট্রলার শনাক্ত করা হয়। সেখানে তারা চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত প্রায় ১৮৮ জন বাংলাদেশি জেলে ও ৩০টি নৌকা আটক করে পরবর্তী সময়ে মুক্তি দেওয়া হয়। কিন্তু এখন আইন অমান্য করার কারনে ফের এসব ট্রলার ধরা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন। এ ছাড়া আজকে সেখানে ১৬ জেলে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি প্রকাশ করে।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘ট্রলারসহ ১০ জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্থানীয়দের কাছ থেকে জেনেছি। এ বিষয়ে বিস্তারিত খোজঁ নেওয়া হচ্ছে।’
বিজিবি বলছে, গত ১১ মাসে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমারে নাফ নদসহ-সংলগ্ন এলাকা থেকে অন্তত ৩৫০ জেলেকে অপহরণ করে আরাকান আর্মি। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সহায়তায় এদের মধ্যে প্রায় ২০০ জনকে কয়েক দফায় ফেরত আনা হয়। এখনো ১৫০ জেলে আরাকান আর্মির হাতে রয়েছে। ফলে অনেক জেলে সাগরে মাছ শিকারে যেতে ভয় পাচ্ছে।