মৃত উদ্ধার ৪১ গরু, নিখোঁজ আরও ৬০টি— মুন্সিগঞ্জে মানবিক বিপর্যয়
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৪ মে ২০২৫, ১১:০৪ AM , আপডেট: ২৪ মে ২০২৫, ০৬:৪৯ PM
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় জোয়ারের পানির তোড়ে ভেসে গেছে প্রায় শতাধিক গরু। ৪১ টি গরুর মৃতদেহ উদ্ধার করা হলেও এখনো নিখোঁজ রয়েছে ৬০টি গরু। শুক্রবার (২৩ মে) বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের ভাটি বলাকী গ্রাম সংলগ খালে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, স্থানীয় কৃষক মহসিনের ৪টি, নাহিদের ৩টি, ইয়ানূরের ৩টি, এমার ২টি, মাসুমের ১টি, আবুল হোসেনের ৩টি, শাহজালালের ৩টি, কবির হোসেন খানের ৩টি, শরিফ শরিফ হোসেনের ৩টি, তরিকুল ইসলামের ২টিসহ শতাধিক গরু পানির তোড়ে ভেসে গেছে।
শ্যামল খান নামে ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আজকের দিনটি আমাদের গ্রামবাসীর জন্য একটি দুঃখের দিন হয়ে থাকবে। আমাদের গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। সবারই গরু রয়েছে। ভাটি বলাকী গ্রাম সংলগ্ন চরে ঘাস খাইয়ে গরুগুলো লালন-পালন করেন সবাই। গ্রাম এবং চরের মধ্যে ছোট একটি খাল আছে। খাল পাড়ি দিয়ে চরে গিয়ে ঘাস খেয়ে প্রতিদিন বিকেলে গরুগুলো আবার গোয়ালে ফিরে আসে। শুক্রবার বিকেলে খাল পাড় হওয়ার সময় হঠাৎ জোয়ারের পানির তোড়ে এবং কচুরিপানার চাপে শতাধিক গরু ভেসে যায়। এর মধ্যে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত ৪১টি মৃত গরু উদ্ধার করা হলেও এখনো পর্যন্ত প্রায় ৬০টির মতো গরু নিখোঁজ। এতে লাখ লাখ টাকা ক্ষতির মুখে পড়ে কৃষকরা পাগল প্রায়।
ঘটনার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী নেয়ামুল হক বলেন, দেখলাম কচুরিপানার চাপে ও জোয়ারের পানির তোড়ে একের পর এক গরু ভেসে যাচ্ছে। এ রকম অদ্ভুত ঘটনা আগে কখনো দেখিনি ।
ভুক্তভোগী কৃষক মহসিন বলেন, এমন ঘটনা জীবনেও ঘটেনি। এমন কিছু ঘটতে পারে তা আমরা চিন্তাও করিনি। আমার ৪টি গরু পানির তোড়ে ভেসে গেছে। আমি একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছি, পথের ফকির হয়ে গেছি।
আরেক ভুক্তভোগী আবু তালেব সুজন খান বলেন, ভাটি বলাকী গ্রামের ২৫/৩০টি পরিবারের ৫ শতাধিক গরু আছে। গরুগুলো গ্রামের পার্শ্ববর্তী চরে ছেড়ে দেওয়া হয়। শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে ঘাস খেয়ে চর থেকে গ্রামের দিকে ফেরার পথে তীব্র স্রোতে শতাধিক গরু পানির সঙ্গে ভেসে যায়। এখন পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত গরুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
হোসেন্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠু বলেন, এ রকম একটি খবর আমিও পেয়েছি। স্থানীয় ইউপি সদস্যকে এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে গজারিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ফয়সাল আরাফাত বিন ছিদ্দিক বলেন, বিষয়টি আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখছি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে রয়েছি আমরা। আমাদের অবস্থান থেকে যতটুকু সম্ভব আমরা তাদের সাহায্য করব।