সাংবাদিকের ফোন কেড়ে নিয়ে ভিডিও ডিলিট, পুলিশ বলছে—ভুল বোঝাবুঝি

মো. মাহফুজুর রহমান
মো. মাহফুজুর রহমান  © টিডিসি ফটো

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে পুলিশের বিশেষ অভিযানের সময় সাংবাদিকের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ভিডিও ও ছবি ডিলিট করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে চিলমারী উপজেলার নটার মোড়ে এই ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাতে জেলা পুলিশ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনার ব্যখ্যা করে জেলা পুলিশ। সেখানে বলা হয়, অভিযানের তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় ভিডিও ডিলিট করার ‘পরামর্শ’ দেয়া হয়েছিল। ওই তরুণ সাংবাদিক পরিচয় না দেওয়ায় ঘটনাটি ভুল বোঝাবুঝির মাধ্যমে ঘটেছে বলেও উল্লেখ করা হয়। এছাড়া, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগ এনে ‘সঠিক তথ্য’ প্রকাশের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

জানা যায়, গত ১০ এপ্রিল সকালে কুড়িগ্রামের চিলমারী ও গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর শহরের মোড় এলাকায় ঈদে চিলমারী-হরিপুর তিস্তা সেতুতে ঘুরতে যাওয়া মা-মেয়েকে উত্যক্তের অভিযোগ উঠে। পরে মাইকিং করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে কুড়িগ্রাম থেকে সেনাবাহিনীর টিম গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ওইদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান।

এসময় স্থানীয় সাংবাদিক, স্বদেশ পত্রিকার চিলমারী উপজেলা প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম সাদ্দাম ছবি ও ভিডিও করলে পুলিশ সুপারের নির্দেশে পুলিশের এক সদস্য তার ফোনটি কেড়ে নিয়ে ভিডিও ও ছবি ডিলিট করে ফোন ফেরত দেন। 

ভুক্তভোগী সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ঘটনাস্থলে পুলিশ সুপার আসার খবর শুনে সেখানে গিয়ে ভিডিও ও ছবি তোলার সময় পুলিশ সুপার আমার ফোন নিতে বলেন। সংবাদকর্মী পরিচয় পেয়েও আমার হাতে থাকা ফোনটি কেড়ে নিতে বলেন। ওনার সাথে থাকা এক পুলিশ সদস্য ফোনটি কেড়ে নিয়ে ছবি ও ভিডিও ডিলিট করেন। আমি সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরও আমার সাথে খারাপ আচরণ করেন।’ 

কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজার রহমান বলেন, ‘কোনও সরকারি কর্মকর্তা সাংবাদিকের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করতে পারে না। এজন্য তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।’

চিলমারী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে ১০টার পরে এসপি স্যার এসেছিলেন। গোপন অভিযানের ভিডিও ধারণ করা নিয়ে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে মাত্র।’

এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো, মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘এটি ভুল তথ্য। রাতে অভিযানের সময় একটা ইয়ং ছেলে অন্ধকারে ভিডিও করছিল, তাকে বলেছি ভিডিও করোনা, জাস্ট এটুকু। সেতো পরিচয় দেয়নি সে সাংবাদিক। তার আইডি কার্ডও ছিলনা। আমরা ভেবেছি ফেসবুকে ছাড়তে ভিডিও করেছে। এজন্য ডিলিট করে দেওয়া হয়। মিডিয়া নিয়ে আমরা এটা বলতে পারিনা।’


সর্বশেষ সংবাদ