আদিবাসী কোটা পুনর্বহাল না হলে ২৮ এপ্রিল থেকে অবরোধের হুঁশিয়ারি

আদিবাসী কোটা পুনর্বহালের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে
আদিবাসী কোটা পুনর্বহালের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে  © সংগৃহীত

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে ৫ শতাংশ আদিবাসী কোটা পুনর্বহালের দাবিতে আগামী ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ‘আদিবাসী কোটা সংরক্ষণ পরিষদ’ নামে একটি সংগঠন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোটা পুনর্বহাল না করা হলে ২৮ এপ্রিল থেকে দেশব্যাপী অবরোধের হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে।

দাবি আদায়ে আদিবাসী কোটা সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে ইতিমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরও একাধিক স্থানে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে সংগঠনটি। তারা জানান, শিক্ষাক্ষেত্রে তারা অনেক পিছিয়ে আছেন। এরপর যদি তাদের এই অধিকার কেড়ে নেওয়া হয় তাহলে আর বাঁচার জায়গা থাকবে না।

আরও পড়ুন: সরকারি চাকরিতে ৫ শতাংশ আদিবাসী কোটা পুনর্বহালের দাবি

এছাড়া একই দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্মারকলিপি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। স্মারকলিপিতে তারা বলেছেন, ২০১৮ সালে কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বৃহৎ আন্দোলনের ফলে সরকার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সব ধরনের কোটা বাতিল করে দেয়। সঙ্গে সঙ্গে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে তারা অন্তত অনগ্রসর আদিবাসী কোটা পুনর্বহালের দাবি জানায়।

দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সেই বছরের ২৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, কোটা বাতিল হলেও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রার্থীরা সব সময় অগ্রাধিকার পাবেন। কিন্তু কোটা বাতিল-পরবর্তী ৪০তম বিসিএসের সম্প্রতি প্রকাশিত চূড়ান্ত ফলাফলে আদিবাসীদের প্রতি সরকারের কোনো অগ্রাধিকার বা বিবেচনা দেখা যায়নি। বিষয়টি তাদের অত্যন্ত অবাক ও হতাশ করেছে। তাদের দাবি, আদিবাসীসহ দেশের অনগ্রসর মানুষের জন্য সরকারি চাকরিতে কোটার প্রয়োজনীয়তা এখনো ফুরিয়ে যায়নি।

আদিবাসী কোটা সংরক্ষণ পরিষদের সদস্যসচিব অলিক মৃ আজ শুক্রবার সকালে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ২০১৮ সালে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি চাকরিতে সব ধরনের কোটা বাতিল করা হয়। সে সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি চাকরিতে আদিবাসী প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি প্রকাশিত ৪০তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফলে আমরা সেই প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন দেখতে পাইনি।

তিনি বলেন, সরকারি চাকরিগুলোর প্রিলি-রিটেন কিন্তু যে যার মত করেই এগিয়ে যাচ্ছে। শুধুমাত্র আমরা ভাইভাতে কোটার সুবিধাটা পেতাম। আমরা যারা আদিবাসী রয়েছি, তারা বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে সংগ্রাম করেই এ পর্যন্ত আসতে হয়েছে। পাহাড়ে আমাদের ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই, থাকলেও দেখা গেছে ভালো শিক্ষক নেই। ভাষা জটিলতা তো আছেই।

গত শুক্রবার (০৮ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির নিয়োগে ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটা পুনর্বহালে সরকারকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়।

আরও পড়ুন: ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটা পুনর্বহালে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত আলটিমেটাম

এর আগে ২০১৮ সালে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীদের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের পর নবম থেকে ১৩ তম গ্রেডের সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা বাতিলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রিসভা। এর মাধ্যমে ৪৬ বছর ধরে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে যে কোটা ব্যবস্থা ছিল তা বাতিল হয়ে গেল।

কোটা সংস্কারের পরিপত্রে বলা হয়, সব সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত বা আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে নবম গ্রেড (আগের প্রথম শ্রেণি) এবং ১০ থেকে ১৩তম গ্রেডে (আগের দ্বিতীয় শ্রেণি) মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ করা হবে এবং বিদ্যমান কোটা বাতিল করা হলো।


সর্বশেষ সংবাদ