সরকারি চাকরিতে বয়স বৃদ্ধির দাবি বাস্তবায়নে উদাসীন সরকার

চাকরিতে বয়স বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন
চাকরিতে বয়স বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন  © সংগৃহীত

সরকারি চাকরিতে বয়স বৃদ্ধির দাবি বহুদিনের। দাবি আদায়ে লাগাতার আন্দোলন করছেন চাকরিপ্রত্যাশীরা। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি শাহবাগে মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। এদিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে কয়েক দফায় বয়স বাড়ানোর সুপারিশ সরকারের কাছে পাঠানো হলেও তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। চাকরিপ্রত্যাশীরা বলছেন, সরকারের উদাসীনতার কারণেই স্বপ্ন ভঙ্গ হচ্ছে লাখো শিক্ষার্থীর।

করোনার কারণে ২০২০ সালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের পরপরই চাকরি পরীক্ষাগুলোও বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে করোনার সংক্রমণ কমে আসায় নিয়োগ পরীক্ষাগুলো আবার শুরু হলেও বয়স না বাড়ানোয় বিপাকে পড়েছেন অনেক চাকরিপ্রত্যাশী।

চাকরিপ্রত্যাশীরা বলছেন, করোনার কারণে সরকার অন্য সব সেক্টরে মনোযোগ দিলেও চাকরি ক্ষেত্রে তাদের তেমন মনোযোগ নেই। ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগ সরকারি চাকরিতে বয়স বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানিয়েছিলো। এখন আরেকটি নির্বাচন চলে এসেছে। নিজেদের কথাই আওয়ামী লীগ এখনো বাস্তবায়ন করতে পারেনি।

তারা বলেন, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা খাতকে ঢেলে সাজাতে সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে। ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা দিচ্ছে। কিন্তু বয়স বাড়ানোর বিষয় নিয়ে কোনো দৃশ্যমাণ পদক্ষেপ নিচ্ছে না। কয়েকটি নিয়োগ পরীক্ষায় তারিখ পিছিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হলেও সেটি মানছেন না আন্দোলনকারীরা। তারা স্থায়ীভাবে বয়স বাড়ানোর পক্ষে।

আরও পড়ুন- সরকারি চাকরিতে বয়স বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়ন

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বলছে, সরকারি চাকরিতে প্রবেশে বয়স বৃদ্ধির বিষয়টির প্রস্তাবনা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। তবে কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। যেহেতু চাকরিতে প্রবেশের বয়স বৃদ্ধির বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ এবং সরকারের নীতি নির্ধারণী বিষয়। তাই উচ্চ পর্যায়ের সম্মতি প্রয়োজন। তবে বিষয়টি নিয়ে যেকোন সময় সিদ্ধান্ত হতে পারে।

হিসাবে কষে দেখা গেছে, বাংলাদেশে কোনভাবেই ২২ বছরের আগে শিক্ষাজীবন শেষ হয় না। অথচ দেশে সরকারি চাকরিগুলোয় আবেদনের সর্বনিম্ন বয়স ১৮ বছর। হিসাব অনুযায়ী, মাত্র ৫ বছরে শিক্ষাজীবন শুরু হলেও শুধু মাধ্যমিক পড়তেই জীবনের ১৫টি বছর চলে যায়। আর উচ্চমাধ্যমিক (১৭বছর), স্নাতক (২১বছর) ও স্নাতকোত্তর পড়তে লাগে ২২ বছর। সেক্ষেত্রে নন-পিএসসি চাকরি ক্ষেত্রে আবেদন শুরুর বয়স ১৮ বছর রাখার আইনটি একেবারেই অকার্যকর। আবার বর্তমানে ক্যাডারের ক্ষেত্রে ২১ বছর বয়সে আবেদনের আইনটিও গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। 

আরও পড়ুন- আরবি হরফে বাংলা লেখা চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা হয়েছিলো যেভাবে

শিক্ষা সংশ্লিষ্টরাও বলছেন, সরকারি চাকরিতে আবেদন করার আগেই যদি জীবনের ৪টি বছর চলে যায়; তবে প্রবেশের  বয়স কেন ৩৫ হবে না? এ দাবি একেবারেই ‘যৌক্তিক ও ন্যায়সংগত’। তারা বলছেন, কর্মে যোগদানের অধিকার আমাদের সাংবিধানিক অধিকার; সুনির্দিষ্ট বয়স দিয়ে তা থামিয়ে দেয়ার অধিকার কারো নেই। তাছাড়া চাকরিতে ৩০ রাখাটা তারুণ্যকে বেঁধে রাখার মত একটা ব্যাপার। এটা অনুচিত।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদের মুখপাত্র ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। দাবি আদায়ে লাগাতার আন্দোলন চললেও সরকারের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখছি না। আমরা রাষ্ট্রপতিসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সবার সঙ্গেই কথা বলেছি। সবাই শুধু আশ্বাসই দিয়েছেন। দ্রুত দাবি আদায় না হলে চাকরিপ্রত্যাশীরা আরও কঠোর কর্মসূচি দেবে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দাবি শুধু বয়স বৃদ্ধি না। সেই সঙ্গে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস বন্ধ, সব নিয়োগ পরীক্ষার ফি ১০০ টাকা নির্ধারণ এবং পরীক্ষাগুলো বিকেন্দ্রিকরণ করার দাবি জানিয়েছি। একদিনে একাধিক পরীক্ষা নেয়া যাবে না।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence