দ্বন্দ্ব ভুলে ঐক্যবদ্ধ কমিটি ঘোষণা ৩৫ চাই আন্দোলনকারীদের
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৫ জুন ২০১৯, ০৬:০৩ PM , আপডেট: ১৫ জুন ২০১৯, ০৬:৫৮ PM
অবশেষে অবসান হলো ৩৫ চাই আন্দোলনকারীদের নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব। নিজেদের মধ্যে বিদ্যমান বিভেদ ভুলে গিয়ে ঐক্যের ডাক দিয়েছে আন্দোলনকারীদের সব পক্ষ। আজ শনিবার নতুন করে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
কমিটির মুখপাত্র হলেন- সঞ্জয় দাস ও ইমজিয়াজ হোসেন। আর সমন্বয়ক হলেন- এম এ আলী ও হারুন অর রশিদ।
নতুন কমিটির মুখপাত্র ইমজিয়াজ হোসেন বলেন, ৩৫ দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বৃহৎ আন্দোলনের স্বার্থে বিদ্যমান গ্রুপগুলির সকলের সম্মতিতে ঐক্যের রুপলেখা প্রকাশ করা হলো। এছাড়া তিনি সবাইকে দ্রুত কর্মসূচি দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে ঐক্যের ব্যাপারে সকলকে মতামত দেয়ার আহ্বানও জানান।
এদিকে টানা কয়েক বছর ধরে কোটা সংস্কার ও চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা। সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলন সফলতার মুখ দেখলেও এখনো চলছে ‘৩৫ চাই’ আন্দোলন। চলতি বছরে এসেও কয়েক দফা কর্মসূচি পালন ও পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব ও মতবিরোধ প্রকট হয়ে উঠে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানিয়েছে, প্রায় একইসঙ্গে চলে আসা কোটা সংস্কার আন্দোলনের মত ব্যাপক বিস্তার লাভ করতে পারেননি ‘৩৫ চাই’ আন্দোলন। এতে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। এছাড়া আলনকারীদের মধ্যে একাধিক গ্রুপও তৈরি হয়েছে। তাদেরকে চলতি মাসেই আলাদা কর্মসূচি ঘোষণা করতে দেখা গেছে। এতে নেতাকর্মীদের মধ্যে মনোমালিন্যও দেখা গেছে।
সূত্রের তথ্য, নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে পক্ষগুলো আলাদা কর্মসূচি ডাক দেওয়ায় বিভ্রান্ত হচ্ছেন সাধারণ আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীরা। কোন গ্রুপের কর্মসূচিতে যোগ দিলে দাবি আদায় হবে- তা নিয়েও দ্বিধায় পড়েছেন তারা। ফলে অধিকাংশ কর্মসূচিতেই কাঙ্ক্ষিত উপস্থিতি থাকছে না বলে তারা জানিয়েছেন।
আন্দোলনের নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ‘৩৫ চাই’ আন্দোলনে এখন অনেকেই নেতৃত্ব পর্যায়ে আসতে চায়। তাদের অনেকেই শিগগিরই আন্দোলন সফল হতে পারে- এমন ধারণায় এ অবস্থান নিতে চাইছেন। ফলে সাধারণ চাকরিপ্রার্থীরা কাদেরকে সমর্থন দেবেন বুঝতে পারছেন না। ফলে আন্দোলন ধীরে ধীরে স্তিমিত হয়ে পড়ছে। যদিও তাদের দাবি, মতবিরোধ থাকবে, তবে দাবি আদায় করাই মূল উদ্দেশ্য। এজন্য যে পদ্ধতিতে এগুলে ভালো হয়, সেটাই তারা করবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এখান যাদের বয়স ৩৫ ছাড়িয়ে গেছে তাদের অনেকেই নেতৃত্ব দিতে চায়। অন্যদিকে যাদের বয়স ৩৫ এর কম তারাও অনেকে নেতৃত্ব চান। মূলত যাদের বয়স ৩৫’র বেশি; তারা ২০১২ সাল থেকে আন্দোলন করে আসছেন বলে দাবি করেছেন। এত দিন ধরে আন্দোলন করার কারণে তারা নেতৃত্বে আসতে চান। এরমধ্যে কর্মব্যস্ততার কারণে অনেকেই নেতৃত্ব তাদের ‘কাছের ছোট ভাই’কে দিতে চান।
অন্যদিকে, যাদের বয়স ৩৫‘র কম তারাও নেতৃত্ব নিজেদের হাতে নিতে চান। তাদের মতে, যাদের বয়স ৩৫’র বেশি তারা এ আন্দোলনে থাকা যৌক্তিক নয়। এই প্রশ্নে তারা ৩৫’র বেশি বয়সীদের হাতে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে নারাজ। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কয়েকটি গ্রুপ থাকলেও শুরু থেকেই নেতৃত্ব দিয়ে আসা ইমতিয়াজ হোসেন, সঞ্জয় দাসের নেতৃত্বাধীন গ্রুপ উল্লেখ্যযোগ্য।
সঞ্চয় দাস গ্রুপের সমর্থকদের মতে, তিনি আগে থেকেই এ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাই তিনি এতে নেতৃত্ব দিতে চান। অন্যদিকে ইমতিয়াজ গ্রুপের মতে, সঞ্জয় চাকরি করেন। তিনি আগে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ (বাসাছাপ) কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে সাধারণ সম্পাদক এম এ আলী।
জানা গেছে, এ দু’গ্রপের নেতা আলাদা থাকার পাশাপাশি তাদের ফেসবুক গ্রুপও আলাদা। কর্মসূচিও আলাদাভাবে পালন করছেন তারা। এছাড়া আরও বেশ কিছু গ্রুপের মাধ্যমে এ আন্দোলন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এরমধ্যে একটি গ্রুপ চলতি মাসের ২৯ তারিখে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। অপর গ্রুপ আগামী ১২ এপ্রিল থেকে তিনদিনের কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে।