গবেষণা ব্যয়ে সর্বনিম্ন শিক্ষা ও শিল্পখাত: বিবিএস

  © সংগৃহীত

দেশের সরকারি, বেসরকারি ও শিক্ষা খাতসহ সব খাতের মোট গবেষণা ব্যয় হয়েছে ১০ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। দেশের সব খাত মিলিয়ে মোট গবেষক ১৮ হাজার ২৫ জন। এর মধ্যে পূর্ণকালীন গবেষক ১২ হাজার ৭৯৭ জন। সবচেয়ে কম গবেষণা ব্যয় শিক্ষা ও  শিল্প খাতে। শিল্পখাতে মাত্র ৩৩১ কোটি টাকা, সবচেয়ে বেশি কৃষি খাতের গবেষণায় ৩ হাজার ৮৭৫ কোটি টাকা।

যেখানে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করার কথা সেই শিক্ষা খাতের ব্যয় তলানিতে। আবার মৌলিক গবেষণা সবচেয়ে কম। এটিকে উদ্বেগজনক হিসেবে অভিহিত করেছে জরিপকারী সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।

বিবিএস রবিবার রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সার্ভে ২০২২ প্রকাশ করেছে। এতে দেখানো হয়েছে, দেশে গবেষণা ও গবেষকের সংখ্যা বেড়েছে। তবে অর্থনীতির এ ক্রান্তিলগ্নে যেখানে গবেষণা হওয়া প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি সরকারি প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা সবচেয়ে কম।

বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের ৮৬ শতাংশই আসে পোশাক শিল্প থেকে। ওষুধ রপ্তানি শিল্পও আছে সম্ভাবনাময় শিল্প হিসেবে। জরিপ বলছে, বাংলাদেশের মোট গবেষণা ব্যয়ের মধ্যে শিল্প খাতে ব্যয় মাত্র ৩ দশমিক ১৬ শতাংশ। টাকার অঙ্কে তা মাত্র ৩৩১ কোটি টাকা।

গবেষকরা বলছেন, মৌলিক গবেষণায় ব্যয় করার কথা সবচেয়ে বেশি। কোরিয়া, চীনের মতো উন্নত দেশ যখন বাংলাদেশের পর্যায়ে ছিল তারা গবেষণা খাতে যে পরিমাণ ব্যয় করেছিল সেটিকে উদাহরণ হিসেবে নেন না নীতিনির্ধারকরা। তাছাড়া দেশে পর্যাপ্ত ল্যাব সুবিধা না থাকা ও অন্য আনুষঙ্গিক সুবিধা না থাকায় অনেক গবেষক বিদেশ থেকে দেশে ফিরে এসেও হতাশ হন। ফলে ভালো গবেষকরাও দেশে থাকতে চান না।

গবেষণা ব্যয়ের ক্ষেত্রে যেখানে ব্যয় করার কথা সবচেয়ে বেশি সেই মৌলিক গবেষণায় ব্যয় সবচেয়ে কম। জরিপ বলছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশের মৌলিক গবেষণায় ব্যয় হয়েছিল মাত্র ৯৪১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, যা মোট ব্যয়ের মাত্র ৮ দশমিক ৯৮ শতাংশ।

প্রতি বছর গবেষণায় ব্যয় বাড়লেও মৌলিক গবেষণায় ব্যয় ধারাবাহিকভাবে কমছে। এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট ব্যয়ের ৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ ব্যয় ছিল এ ধরনের গবেষণায়, ২০১৮-১৯ এ ছিল ১০ দশমিক ২৫ শতাংশ। বিবিএস উদ্বেগ জানিয়ে জরিপ প্রতিবেদনে মন্তব্য করেছে, এ প্রবণতাটি নির্দেশ করে, গবেষণা ও উন্নয়নে ব্যয় করা প্রতিষ্ঠানগুলো মৌলিক গবেষণায় বিনিয়োগ করার পরিবর্তে নতুন পণ্য ও প্রক্রিয়াগুলো বিকাশের দিকে অধিকতর মনোনিবেশ করছে। এ পরিবর্তনটি স্বল্পমেয়াদি উদ্ভাবনের ওপর নতুনভাবে আলোকপাত করলেও দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের অনুপস্থিতি আমাদের উদ্বিগ্ন করেছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, এটি লক্ষ্য করাও গুরুত্বপূর্ণ যে, মৌলিক গবেষণার জন্য সম্পদের পর্যাপ্ত বরাদ্দের অভাব উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি এবং যুগান্তকারী আবিষ্কারগুলো উন্মোচন করার ক্ষমতায় একটি কার্যকরী সীমাবদ্ধতা সৃষ্টি করতে পারে।

এ জরিপটি ২০২২ সালের হলেও তথ্য দেওয়া হয়েছে ২০২০-২১ অর্থবছরের। ওই বছর দেশের রপ্তানি আয় হয়েছিল ৩০ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার। সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরের রপ্তানি আয় হয়েছে প্রায় ৬০ বিলিয়ন ডলার। রপ্তানি আয় ধারাবাহিকভাবে বাড়লেও প্রতিযোগীদের তুলনায় উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন নেই। অথচ ঘাড়েই নিঃশ্বাস ফেলছে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের প্রভাব। এটি উত্তরণের পর বিভিন্ন দেশে শুল্কমুক্ত সুবিধা কমে যাবে, তখন কীভাবে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা থাকবে তা নিয়ে উল্লেখযোগ্য গবেষণা নেই সরকারি বা বেসরকারি কোনো পর্যায়। 


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence