মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানবাধিকার কমিশনে ৩৫ প্রত্যাশীদের স্মারকলিপি

স্মারকলিপি প্রদান শেষে মানবন্ধন করেন চাকরি প্রত্যাশীরা
স্মারকলিপি প্রদান শেষে মানবন্ধন করেন চাকরি প্রত্যাশীরা  © টিডিসি ফটো

সম্প্রতি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করার দাবিতে আন্দোলনকারীদের কর্মসূচিকে ঘিরে শাহবাগ থানায় বিভিন্ন সময় ২৫ জনের নাম উল্লেখসহ ৫০০ জন অজ্ঞাতনামা করে মামলা করা হয়েছে। এর আগেও নানা সময়ে আন্দোলন করতে গিয়ে মামলার শিকার হয়েছে তারা। রবিবার (১৯ মে) এসব মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে ৩৫ প্রত্যাশীদের স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। এ সময় স্মারকলিপি প্রদান শেষে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন চাকরিপ্রত্যাশীরা।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা স্থায়ীভাবে বৃদ্ধি চাই অর্থাৎ আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী ৩৫ চেয়ে আন্দোলন করে আসছে। সরকার বিষয়টি উপলব্ধি করে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের পাতা নং ৩৩ এর শিক্ষা, দক্ষতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি অনুচ্ছেদে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে মেধা ও দক্ষতা বিবেচনায় রেখে বাস্তবতার নিরিখে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছিলো। কিন্তু দুঃখের বিষয় গত ৫ বছরে এই বয়সসীমা বৃদ্ধি হয়নি।

আরো পড়ুন: চাকরিতে ৩৫ প্রত্যাশী ৫০০ আন্দোলনকারীর বিরুদ্ধে মামলা

বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষিত চাকরিপ্রার্থীরা বিগত প্রায় ১২ বছর (২০১২ সাল) থেকে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ করার লক্ষ্যে দীর্ঘ সময় ধরে রাজপথে আন্দোলন করে যাচ্ছে।মাঝে ২০২০ সালের করোনা মহামারি চাকরির বাজারে করুন প্রভাব ফেলেছে তবুও বাংলাদেশ সরকার স্থায়ীভাবে বয়সসীমা বৃদ্ধি করেনি। যেখানে বিশ্বের প্রতিটি দেশে করোনার ক্ষতিপূরণ হিসেবে আরো কয়েক বছর বাড়িয়ে স্থায়ীভাবে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি করেছিলো। যেখানে বিশ্বের ১৬২ দেশে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ সেখানে শুধু পাকিস্তান ও বাংলাদেশে বয়সসীমা ৩০ বছরকে অনুসরণ করে আসছে।

এছাড়াও বলা হয়, দ্রুত প্রজ্ঞাপন চেয়ে ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য দাবি বাস্তবায়নে ১১ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে শিক্ষার্থী সমাগমের মধ্য দিয়ে গণভবন মুখী পদযাত্রা করলে শাহবাগ প্রশাসন শিক্ষার্থীদের ব্যারিকেড দিয়ে আটকিয়ে দেয় এবং ছাত্ররা সেখানে শান্তিপূর্ণ ভাবে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করলে বিকালে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং ১২ জনকে গ্রেফতার করে আন্দোলনের মুখপাত্র ও ঢাবি সমন্বয়কসহ ৪০০/৫০০ অজ্ঞাতনামা মিথ্যা মামলা প্রদান করেন। গত ১২মে হাইকোর্ট জামিন মঞ্জুর করেন।

এর আগে, গত বছর ১০ জুন ২০২৩ সালে ১০ জন শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে ঢাবি সমন্বয়ক সহ ৪০০/৫০০ অজ্ঞাতনামা মিথ্যা মামলা প্রদান করেন। ১৩ দিন কারাগার বরণ করে ২৩ জুন ২০২৩ সালে শিক্ষার্থীরা মুক্তি পেয়েছিলেন। প্রতি মাসে মামলার হাজিরা চলমান রয়েছে। ৩৫ দাবি বাস্তবায়নে দ্রুত প্রজ্ঞাপন চেয়ে সেই সাথে ২ দফায় মোট ২৫ জনের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করার দাবিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশ বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হলো। দ্রুত সময়ের মধ্যে উক্ত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আকুল আবেদন জ্ঞাপন করছি।

এ বিষয়ে আন্দোলনকারীর আহবায়ক শরীফুল হাসান শুভ বলেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, গত ১১ মেসহ এর আগে করা আমার সহযোদ্ধাদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আজকে আমরা মানবাধিকার কমিশনে একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছি। এরপর পূর্বে ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী মানববন্ধন করা হয়েছে।

 

সর্বশেষ সংবাদ