টিউশন দেওয়ার প্রলোভনে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রকে অপহরণ-মুক্তিপণ আদায়, গ্রেপ্তার ৩
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:৩১ AM , আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:৩১ AM
ময়মনসিংহে টিউশন শেষে ফেরার পথে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সাজিদ হাসান (২০) অপহরণের শিকার হয়েছেন। অপহরণকারীরা তাকে নির্যাতন করে মুক্তিপণ হিসেবে ৩০ হাজার টাকা আদায় করে। পুলিশি অভিযানে তিনজন অপহরণকারী গ্রেপ্তার এবং মুক্তিপণের ২৪ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী সাজিদ হাসান শহীদ শামসুল হক হলের আবাসিক ছাত্র। তিনি জানান, গত মঙ্গলবার রাত ৭টার দিকে কোতোয়ালি থানার আলিয়া মাদ্রাসা রোডে টিউশন শেষে নাফিজ আহম্মেদ জয় (১৯) নামে এক ব্যক্তি তাকে আরও একটি টিউশনি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ফুয়াদের বাসার তৃতীয় তলার ছাদে নিয়ে যান। সেখানে জয় ছাড়াও সানজিদ আলম (১৯) ও মুশফিকুর রহমান ফুয়াদ (১৫) উপস্থিত ছিলেন।
তারা সাজিদকে আটক করে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাকে মারধর করা হয়। জয় তার মানিব্যাগের ৫০০ টাকা ও এটিএম কার্ড ছিনিয়ে নেন এবং সানজিদ ছুরি দেখিয়ে পাসওয়ার্ড আদায় করেন। ফুয়াদ সাজিদের মোবাইল নিয়ে তার বাবার কাছে ফোন করে মুক্তিপণ হিসেবে ১ লাখ টাকা দাবি করেন।
ভয়ে সাজিদের বাবা বিকাশের মাধ্যমে তিন ধাপে ২০,২০০ টাকা পাঠান। এ ছাড়া অপহরণকারীরা ভিসা কার্ড থেকে ৯,৫০০ টাকা এবং বিকাশ থেকে আরও ১৯,৫০০ টাকা উত্তোলন করেন।
মুক্তির সময় অপহরণকারীরা হুমকি দেয়, বিষয়টি কাউকে জানালে তাকে হত্যা করা হবে। মুক্তি পাওয়ার পর সাজিদ হলে ফিরে শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. আবদুল আলীম তাকে থানায় নিয়ে যান।
বাকৃবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলীম জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে এবং পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। উপাচার্য এবং ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছেন।
এ ঘটনায় পুলিশ বলাশপুর এলাকা থেকে জয়কে গ্রেপ্তার করে। তার কাছ থেকে ১৫,০০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। জয় থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কেওয়াটখালী এলাকা থেকে সানজিদ ও ফুয়াদকে আটক করা হয় এবং তাদের কাছ থেকে আরও ৯,০০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. সফিকুল ইসলাম খান জানান, তিনজন আসামির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং তারা বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। ৩০ হাজার টাকার মধ্যে ২৪ হাজার টাকা উদ্ধার করা গেছে। বাকি টাকা আসামিরা খরচ করে ফেলেছেন। ঘটনাটি তদন্তাধীন, তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।