ঢাবিসহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকেন্ড টাইমের দাবিতে শিক্ষামন্ত্রীকে স্মারকলিপি

স্মারকলিপি জমা দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা
স্মারকলিপি জমা দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকেন্ডটাইম ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ দাবিতে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন ২০২১ সালের এইচএসসি উত্তীর্ণরা।

বৃহস্পতিবার (০১ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে এই স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের পক্ষে আশরাফ হোসাইন অভি, গোলাম সারোয়ার অভি এবং ইসরাত জাহান ইমা এই স্মারকলিপি জমা দেন। স্মারকলিপিতে তারা ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ছয়টি সমস্যা এবং সেগুলোর সমাধান তুলে ধরেন।

১. একজন মানুষের পাঁচটি মৌলিক অধিকার রয়েছে। এর মধ্যে ‘শিক্ষা’ অন্যতম। একমাত্র শিক্ষাই পারে একটি জাতিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে। আমাদের পড়ানো হয়েছে, একবার না পারিলে দেখো শতবার। কিন্তু বাংলাদেশে সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠগুলোতে শিক্ষাখাতে একবারের বেশি সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। অথচ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিশ্বের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সুযোগ দেয়া হচ্ছে বার বার।

আরও পড়ুন: মানবিকের শিক্ষার্থীরা কীভাবে ঢাবির বিজ্ঞান বিষয়ে পড়বেন, জানালেন ডিন

২. ২০২০ সালে করোনার সূত্রপাত হয় এবং কিছুদিনের মধ্যে সারা দেশে লকডাউন দেয়া হয়। অনির্দিষ্টকালের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ দেড় বছর পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করা হয়। ২০২১ ব্যাচ-এর শিক্ষার্থীরা প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখা থেকে বঞ্চিত হয়। সকল শিক্ষার্থী শিক্ষা থেকে দূরে সরে যায় এবং তাদের পড়ালেখার মধ্যে বাঁধা সৃষ্টি হয়। ২০২১ সালের এইচএসসি বোর্ড পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে শুধু মাত্র বিভাগ ভিত্তিক বিষয় গুলোর উপর অনুষ্ঠিত হয়। ফল স্বরূপ অনেক তথ্য ২০২১ শিক্ষার্থীদের অজানা থেকে যায়। এছাড়াও ভর্তি পরীক্ষা সম্পূর্ণ সিলেবাসে নাকি সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে হবে এই বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীরা দোটানায় ছিল। তাই অনেক শিক্ষার্থী পরীক্ষার জন্য সঠিক প্রস্তুতি নিতে পারেনি এবং ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি। এছাড়া ২০২১-২০২২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সিট সংখ্যা কমিয়ে দেয়া হয় তাই চান্স পাওয়া টা কষ্টকর হয়ে উঠে।

৩. ২০২১-২০২২ সালের ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি এবং প্রশ্ন ফাঁসের মতো ঘটনাও ঘটতে দেখা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়-এর প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে ৬ শিক্ষককে আটক করা হয়। ফল স্বরূপ অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায়নি। বঞ্চিত হয়েছে তাদের মৌলিক অধিকার থেকে।

৪. ১ ঘণ্টার একটি ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে নির্বাচন করা হয় মেধাবী শিক্ষার্থীকে। অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ মার্ক অথবা ০.২৫/০.৫০ মার্কের জন্য নির্বাচিত হতে পারে না। তাছাড়াও আরও অনেক প্রতিবন্ধকতা থাকে। যেমন: যানজটের শহরে সঠিক সময়ে পরীক্ষার হলে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়, কারো বাবা-মা-এর আকস্মিক মৃত্যু হতে পারে, কেও অসুস্থতার কারণে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে না ইত্যাদি।

৫. ফার্স্ট টাইম পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ না হলে সমাজ/ পরিবার তাদের অযোগ্য মনে করেন এবং অনেক তাচ্ছিল্য করেন। যে কারণে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়। অনেকে তা সহ্য করতে পারেন না তাই আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। বাংলাদেশে আত্মহত্যার হার কমানোর জন্য দ্বিতীয়বার পরীক্ষার সুযোগ একটি সুন্দর পদক্ষেপ হতে পারে। দেশের জনগন মানবসম্পদে রূপান্তর না হলে দেশের উন্নতি বাধা গ্রস্থ হবে।

৬. বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বরাবরই মেধাবী শিক্ষার্থী নির্বাচন করে। যে মেধাবী ও দক্ষ সে চান্স পাবে তাহলে কেন দ্বিতীয়বার সুযোগ নয়? বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ করে দিন। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার পরীক্ষার সুযোগ চাই।


সর্বশেষ সংবাদ