ডোপ টেস্ট কি? ধরা পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া যাবে?

  © টিডিসি ফটো

আসন্ন ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ডোপ টেস্টের শর্ত যুক্ত করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এর ফলে ভর্তি প্রক্রিয়ার অন্যান্য কার্যক্রমের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ডোপ টেস্টও সম্পন্ন করা হবে। উচ্চশিক্ষায় প্রবেশের শুরু থেকে শিক্ষার্থীদের মাদকমুক্ত রাখতে এমন পদক্ষেপের কথা জানিয়েছেন ২০ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা কমিটির যুগ্ম আহবায়ক এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, বিগত বছরেও আমরা ডোপ টেস্টের মাধ্যমে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ভর্তি করিয়েছি। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে মাদকের ব্যাপারে সচেতনতার বিষয়টি আমরা উপলব্ধি করেছি। শিক্ষার্থীদের নিজেদের সচেতন করতে পারলে মাদক নির্মূল করা সম্ভব হবে।

তিনি আরও বলেন, ভর্তি পরীক্ষার বাকি ৮-১০টা কার্যক্রমের মতো করেই এ ডোপ টেস্ট সম্পন্ন করা হবে। শাবিপ্রবিতে আমাদের বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগ এ কাজটি সম্পন্ন করছে। আমরা প্রথমে কিট সংগ্রহ করে রাখছি। পরে ভর্তি পরীক্ষার যাবতীয় কার্যক্রমের সঙ্গে এটিও করা হবে। এছাড়া আমরা সারা বছরজুড়েই এ কার্যক্রম অব্যাহত রাখবো। যখন যাকে সন্দেহ হবে তাকে আমরা পরীক্ষা করবো।

এদিকে, বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন, দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে শিক্ষার্থীদের ভর্তির আগে ডোপ টেস্ট ব্যবস্থা চালু করার প্রক্রিয়া চলছে।

তিনি বলেন, শুধু কলেজ-বিশ্বদ্যিালয়ের ভর্তির ক্ষেত্রে নয় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগেও ডোপ টেস্ট করা হবে, সেটা বিসিএস হলেও। এমনকি যারা চাকরিতে আছেন তাদের বিরুদ্ধে মাদক গ্রহণের অভিযোগ পাওয়া গেলে ডোপ টেস্ট করা হবে।

সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ডোপ টেস্টের মাধ্যমে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হবে জানিয়ে ২০ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, এতে শিক্ষার্থীদের বিচলিত হওয়ার কোন কারণ নেই। নিয়ম মেনেই এ এটি করা হবে। শিক্ষার্থীদের মাদকমুক্ত থাকার আহবান জানিয়েছেন তিনি।

ডোপ টেস্ট কি?
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাদক বা এলকোহলসহ বেশকিছু নেশা জাতীয় দ্রব্য আছে যা গ্রহণ করার পরও এর রেশ শরীরে থেকে যায়। আর এগুলোই ডোপ টেস্টের মাধ্যেমে শনাক্ত করা হয়।

যেভাবে এই টেস্ট করা হয়
সাধারণত অভিযুক্তদের মুত্র বা রক্ত, আবার কখনো দু’টিরই নমুনা পরীক্ষা করা হয়। ডোপ টেস্টে মাদক গ্রহণ করার শেষ ১ সপ্তাহ মূখের লালার মাধ্যমে, শেষ ২ মাস রক্তের মাধ্যমে, শেষ ১২ মাস বা ১ বছর চুল পরীক্ষার মাধ্যমে মাদক শনাক্ত হবে। এছাড়াও, ডোপ টেস্টে স্প্যাইনাল ফ্লুইড পরীক্ষার মাধ্যমে গত পাঁচ বছরের মধ্যে যদি কেউ মাদক গ্রহণ করে তবে এ পরীক্ষায় ধরা পড়বে। বর্তমানে মূত্র পরীক্ষার মাধ্যমে ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে এবং এই পরীক্ষার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি শেষ ১০ দিনে কোনো মাদক গ্রহণ করেছেন কি না তা জনা যাবে।

পজিটিভ আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া যাবে?
শাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য কোন নির্বাচিত ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর যদি ডোপ টেস্টে রিপোর্ট পজিটিভ আসে তাহলে সে শিক্ষার্থীর জন্য আমরা কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা রেখেছি। তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। তাদের জন্য সাইকোলজিস্ট নিয়োগ করা হবে। হতাশ হওয়ার কিছু নেই। আমরা শিক্ষার্থীদের জন্যই কাজ করছি।

যেহেতু এবারে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ডোপ টেস্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তির কথা বলা হচ্ছে সেক্ষেত্রে ভর্তি পরীক্ষায় এর কোন প্রভাব পড়বে কিনা এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের কল্যাণ চাই। আমরা চাই তারা মাদক থেকে ফিরে আসুক। ডোপ টেস্টের কথায় তাদের হতাশ বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। এতে ভর্তি পরীক্ষায় কোন প্রভাব পড়বে না।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence