‘মদের আসর’ নিয়ে ঢাবিতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ

শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল
শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন রানা ও সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসেনের নেতাকর্মীদের মাঝে গতকাল মধ্যরাতে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে মদের আসর নিয়ে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের নেতাকর্মীরা এই সংঘর্ষে জড়ায়। 

বৃহস্পতিবার (২৬ আগষ্ট) দিনগত রাত দেড়টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। হল ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, এ ঘটনায় ছাত্রলীগের ১০‌ জন কর্মী আহত হয়েছেন। 

আরও পড়ুন: ভারতের ২১ বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘ভুয়া’ ঘোষণা করল ইউজিসি

প্রত্যক্ষদর্শী হল ছাত্রলীগের একাধিক কর্মী জানান, রাত ১১ টার দিকে হল ছাত্রলীগ সভাপতি কামাল উদ্দিন রানার সক্রিয় কর্মী মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ফরিদ হল সভাপতি রানার কাছ থেকে টাকা নিয়ে মদ নিয়ে আসেন। রাত ১  টা পর্যন্ত ফরিদ ও তার গ্রুপের কর্মীরা তাদের মদের আসর জমাতে থাকে। মদ খেয়ে মাতাল হয়ে ফরিদ রাত বারোটার দিকে হল বারান্দায় হাঁটাহাঁটি করেন।

এদিকে সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসেনের গ্রুপের রাহী, শান্তসহ প্রায় ২০-২৫ জন নেতাকর্মী ওই হলের ছাদে বসে বিয়ার খাচ্ছিলেন। কিন্তু, রাত দেড়টার দিকে মদ ও বিয়ার খাওয়ার জেরে বাকবিতন্ডায় জড়ায় দুই দল। বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে সভাপতি গ্রুপের সমর্থক ফরিদ সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের সমর্থক পালি এন্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী  রাহীকে চড় দিলে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়। এতে গুরুতর  আহত হন সাধারণ সম্পাদকের গ্রুপের শান্ত নামের এক শিক্ষার্থী।

পরিস্থিতির অবনতি হলে প্রথমে রানার দলের সমর্থকরা প্রথম বর্ষের ছাত্রদের স্ট্যাম্প, রড নিয়ে আসার জন্য‌ নির্দেশ দেন। পরে সভাপতি-সম্পাদকের পক্ষ হয়ে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী রড,স্ট্যাম্প নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। তখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে এগিয়ে আসেন সভাপতি রানা ও সাধারণ সম্পাদক রুবেল। পরে রাত আড়াইটার দিকে তারা দুজনে  আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।

জানা গেছে, সভাপতি রানার দলের সমর্থক ফরিদ আগামী হল সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী। অভিযোগ আছে, ফরিদ অনেক উগ্র স্বভাবের এবং মাঝে মাঝেই এমন ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ততা থাকে। ছাত্রলীগের গেস্ট রুম, প্রোগ্রাম না করলে শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে নির্যাতন করে থাকেন‌ তিনি।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মী ফরিদের কাছে মাদক সেবনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বিগত তিন বছর ধরে নামাজ পড়ি। আপনারা যদি আমার ডোপ টেস্টও করেন তারপরও কিছুই পাবেন না। আর ওই ঘটনা মূলত জুনিয়রের বসা নিয়ে তর্কাতর্কি হয়েছিল। মাদক সেবন নিয়ে নয়।

এই ঘটনার ব্যাপারে সভাপতি কামাল উদ্দিন রানা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এখানে মাদক সেবন নিয়ে কোন ঝামেলা হয়নি। হলের ছাদে জুনিয়র শিক্ষার্থীরা উচ্চস্বরে গান গাওয়া নিয়েই ঝগড়ার সূত্রপাত ঘটে। আমরা গিয়ে তাদের থামিয়ে দিয়েছি।

এ ঘটনা সম্পর্কে জানতে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রহিমকে বেশ কয়েকবার ফোন দেওয়া হলে তার কাছ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

হল সভাপতি কামাল উদ্দিন রানা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী এবং সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি আল নাহিয়ান জয়ের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।


সর্বশেষ সংবাদ