ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সকাল ৮টায় হলের বন্ধ দুয়ার খুলছে, মানতে হবে যেসব নিয়ম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর বন্ধ দুয়ার খুলছে আজ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর বন্ধ দুয়ার খুলছে আজ  © ফাইল ফটো

দীর্ঘ দেড় বছর বন্ধ থাকার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর বন্ধ দুয়ার খুলছে আজ মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর)। স্নাতক চতুর্থ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীরা করোনা প্রতিরোধ টিকা কমপক্ষে একডোজ নেওয়ার সনদ দেখিয়ে সকাল আটটা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে হলে উঠতে পারবেন।

শিক্ষার্থীদের আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নিতে ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরইমধ্যে বিভিন্ন হলের দেয়ালে নতুন রঙ দেওয়া হয়েছে। হল থেকে বের হওয়া ও প্রবেশের আগে শিক্ষার্থীদের হাতধোয়ার জন্য বসেছে বেসিন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্নাতক চতুর্থ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের যেসব শিক্ষার্থী করোনার অন্তত প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন, তারা স্বাস্থ্যবিধি ও স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর নীতিমালা অনুসরণ করে টিকা নেওয়ার কার্ড বা সনদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ পরিচয়পত্র সংশ্লিষ্ট হল কর্তৃপক্ষকে দেখিয়ে সকাল আটটা থেকে থেকে নিজ নিজ হলে উঠতে পারবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান সকাল ১০টায় বিজয় একাত্তর হল এবং সকাল সাড়ে ১০টায় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল পরিদর্শন করবেন।

শিক্ষার্থীদের হলে ওঠার বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করবে হল প্রশাসন। এ প্রসঙ্গে প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি এবং বিজয় একাত্তরের হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির বলেন, শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিতে আমাদের সব হল প্রস্তুত। শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ড ও টিকা কার্ড দেখে হল প্রশাসন তাদের ওঠাবে। চতুর্থ বর্ষ ও মাস্টার্স শিক্ষার্থীদের তালিকা আইসিটি সেল থেকে প্রতিটি হল প্রশাসনকে পাঠানো হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের বরণ করবে হল প্রশাসন

সকাল ৮টায় বিভিন্ন হলের হাউস টিউটররা চেয়ার-টেবিল নিয়ে ফটকে বসবেন। স্যার এ এফ রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান বলেন, সকালে আমাদের টিউটররা মূল ফটকে চেয়ার-টেবিল নিয়ে বসবেন। যারা ঢুকবে তারা আমাদের হলের শিক্ষার্থী কিনা তা নিশ্চিত করবেন তারা। এরপর শিক্ষার্থীদের ফুল, চকলেট ও বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো সংবলিত মাস্ক দিয়ে বরণ করে নেওয়া হবে।

আবাসিক হল সংক্রান্ত নিয়ম

* কক্ষের বাইরে গেলে সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে নিয়মিত ও সার্বক্ষণিক সঠিক নিয়মে নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরতে হবে।

* স্বাস্থ্যবিধি পালনের জন্য সাবান দিয়ে হাতধোয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে। 

* স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী পরস্পরের কাছ থেকে কমপক্ষে ১ মিটার (৩ ফুট) দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

* কোনো কক্ষের মেঝেতে শোয়া যাবে না। এক বিছানায় একাধিক ব্যক্তি শোয়া যাবে না। কেবল আবাসিক ও ধৈতাবাসিক শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করতে পারবে।

* কোনো বহিরাগত বা বাহির থেকে আসা কাউকে কক্ষে অবস্থান করতে দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনসাপেক্ষে কক্ষে ও কক্ষের বাহিরে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।

* শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ শুরু এবং কক্ষের প্রয়োজনীয় আশপাশ সবসময় নিজ দায়িত্বে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং এক্ষেত্রে হল প্রশাসন সহযোগিতা প্রদান করবে।

* হল ডাইনিং, ক্যান্টিন, মেস, দোকান, সেলুন, টিভি রুম, অডিটোরিয়াম, অতিথিকক্ষ, পাঠাগার, মসজিদ ও উপাসনালয়ে ভিড় করা যাবে না। এসব স্থানে সামাজিক দূরত্ব মেনে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।

* ডাইনিংয়ে পালাক্রমে খেতে হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত অতিথিকক্ষে শিক্ষার্থীদের সমাবেশ বন্ধ থাকবে।

* বেড়ানো ও ঘোরাঘুরি থেকে বিরত থাকতে হবে এবং সভা-সমাবেশ, রেস্তোরাঁ, পার্টি ও গণপরিবহন এড়িয়ে চলতে হবে।

ক্যান্টিন-ক্যাফেটেরিয়ার জন্য নিয়ম

* নিয়মিত ও সার্বক্ষণিক নিয়মমাফিক নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।

* স্বাস্থ্যবিধি পালনের জন্য সাবান দিয়ে হাতধোয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী পরস্পরের কাছ থেকে কমপক্ষে ১ মিটার (৩ ফুট) দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

* প্রবেশ-বহির্গমন পথে ভিড় এড়িয়ে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে।

* ক্যান্টিন-ক্যাফেটেরিয়ায় একাধিক ফটক থাকলে সেগুলোর মধ্যে একটি প্রবেশের জন্য এবং অন্যটি বহির্গমনের জন্য ব্যবহার করতে হবে।

* সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বসার ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং অপ্রয়োজনীয় আসবাবপত্র অপসারণের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

* ক্যান্টিন-ক্যাফেটেরিয়ায় পালাক্রমে খাবার খেতে হবে। তবে বোতলজাত পানীয় এবং ডিসপোজেবল পাত্রে খাবার সংগ্রহ করে রুমে বসে খাওয়া নিরাপদ।

* একই সময়ে কর্মীদের সংখ্যা সীমিত রাখতে ১০-১৫ মিনিটের ব্যবধানসহ শিফট পরিচালনা করতে হবে।

* স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে ব্যবহৃত ছুরি-চামচ, খাবারের পাত্র, কাপ ইত্যাদি পুনর্ব্যবহারের আগে ডিটারজেন্ট দিয়ে যথাযথভাবে পরিষ্কার করতে হবে।

* প্রত্যেকবার ব্যবহারের আগে খাবারের টেবিলসহ অন্যান্য আসবাবপত্র জীবাণুমুক্ত করতে হবে।  কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সর্বক্ষণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।

* দরজা ও জানালা খোলা রেখে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

* কোনো নির্দিষ্ট সমস্যার ব্যাপারে দায়িত্বরত ম্যানেজার বা সুপারভাইজারকে জানাতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ