২৬ ঘণ্টা অনশনে চবির ৯ শিক্ষার্থী, অসুস্থ দুই

মূল ক্যাম্পাসে ফেরার দাবিতে

অনশনরত শিক্ষার্থীরা
অনশনরত শিক্ষার্থীরা  © টিডিসি ফটো

মূল ক্যাম্পাসে ফেরার দাবিতে ২৬ ঘণ্টা ধরে অনশন করছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউটের ৯ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে দু’জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাদের স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছেন তারা। 

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সরেজমিনে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে কাঁথা-বালিশ বিছিয়ে অনশন করছেন। একজন ছেলে ও একজন মেয়ে শিক্ষার্থী অসুস্থ হওয়ায় দু’জনকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। 

গতকাল বেলা ৩টা থেকে অনশন শুরু হয়েছে, ২৬ ঘণ্টা পার হতে চললেও অনশন ভাঙেননি শিক্ষার্থীরা। ৯ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাঁচজন ছেলে ও চারজন মেয়ে। 

তারা হলেন চারুকলা ইন্সটিটিউটের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী মো. শাহরিয়ার হাসান সোহেল, ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী খন্দকার মাসরুল আল ফাহিম, ২০১৯-২০ সেশনের নূর ইকবাল সানি, ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান ইয়ামিন, একই সেশনের শিক্ষার্থী মালিহা চৌধুরী, ইসরাত জাহান, নুসরাত জাহান ইপা, ২০২৩-২৪ সেশনের তরিকুল ইসলাম মাহী ও একই সেশনের শিক্ষার্থী মাহমুদুল ইসলাম মিনহাজ। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগ ও কয়েকটি রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরাও সংহতি প্রকাশ করেছেন। 

শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে গত বছরের ডিসেম্বরে জানানো হয়েছিল যে এ বছরের ৩১ মার্চের মধ্যেই এই স্থানান্তর সম্পন্ন করা হবে। সে সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও এখনো তেমন কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি। প্রশাসনের দেওয়া সময় পেরিয়ে গেছে অনেক আগেই। আমরা বারবার আশ্বাস পাচ্ছি, কিন্তু কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। 

জানতে চাইলে অনশনরত শিক্ষার্থী ফাহিম বলেন, ‘আমরা ২৬ ঘণ্টা ধরে অনশনে আছি। প্রশাসনের অনেকেই আমাদেরকে বুঝানোর চেষ্টা করছেন। আমাদের দাবি হলো একটা যৌক্তিক সমাধানের মাধ্যমে চারুকলা ইন্সটিটিউটকে যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনা হয়। এখনও কেন এই কাজে বিলম্ব হচ্ছে এটা আমাদের প্রশ্ন। এর আগে আমরা দীর্ঘদিন ক্যাম্পাসে ফেরার আন্দোলন করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রশাসন আমাদের আশ্বাস দিলেও চারুকলা ক্যাম্পাসের আলোর মুখ দেখছে না। এখানে আমাদের চারুকলার যেসব শিক্ষক রয়েছেন, তারাই মূলত বাঁধা প্রদান করছেন। তারা সহযোগিতা না করায় আমরা ক্যাম্পাসে ফিরতে পারছি না। দ্রুত সময়ের মধ্যে চারুকলাকে ক্যাম্পাসে দেখতে চাই। আমরা মরে গেলেও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চলবে।’ 

উল্লেখ্য, আবাসন সংকট, জীবনযাত্রার অত্যধিক খরচ, চারুকলার ভবনসমূহের বেহাল দশাসহ অন্যান্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকার কারণে দীর্ঘদিন ধরেই ক্যাম্পাসে ফিরতে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। সর্বশেষ গত বছরের ডিসেম্বরে আন্দোলনের পর প্রশাসন ১ এপ্রিল থেকে ক্যাম্পাসে ক্লাস করার আশ্বাস দিলেও তা কার্যকর না হওয়ায় অনশন শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা।


সর্বশেষ সংবাদ