রাবিতে হল প্রাধ্যক্ষের অপসারণসহ ৭ দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান
- রাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:৪৬ PM , আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:৫০ PM

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সৈয়দ আমীর আলী হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হারুনর রশীদ-এর বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে অবহেলা, স্বেচ্ছাচারিতা, বৈষম্যমূলক আচরণ এবং আবাসিক শিক্ষার্থীদের সেশনভিত্তিক অনলাইন গ্রুপের তথ্য গোপনে নজরদারিসহ ১০ অভিযোগে তার অপসারণ দাবি করেছেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) উপাচার্য ও প্রক্টর বরাবর পৃথক দুটি স্মারকলিপিতে তারা ৭ দফা দাবি উপস্থাপন করেন। এর আগে, গত বৃহস্পতিবার একই দাবিতে প্রাধ্যক্ষের কক্ষে তালা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
তাদের অভিযোগ, হল প্রাধ্যক্ষ শিক্ষার্থীদের প্রতি সহানুভূতিশীল নন এবং শিক্ষার্থীবান্ধব আচরণ করেন না। শিক্ষার্থীরা তার কাছে সহযোগিতা চাইলে তিনি দীর্ঘক্ষণ বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখেন, কেউ তার সিদ্ধান্তের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করলে তিনি তাদের প্রতি রূঢ় ব্যবহার করেন। তিনি শিক্ষার্থীদের গঠনমূলক সমালোচনা করতে বাধা দেন, যেকোনো সিদ্ধান্ত এককভাবে গ্রহণ করেন, আবাসিক কক্ষ বরাদ্দের ক্ষেত্রে স্বচ্ছ স্কোরিং নম্বর প্রকাশ করেন না, হলের সিঙ্গেল রুম বরাদ্দের ক্ষেত্রে মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের উপেক্ষা করে জুনিয়রদের বরাদ্দ দেন, শিক্ষার্থীরা পরামর্শ দিলে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন এবং অপমানজনক মন্তব্য করেন।
স্মারকলিপিতে লেখা হয়েছে, হলের বর্তমান প্রাধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ হারুনর রশীদ দায়িত্ব পালনে চরম অবহেলা, স্বেচ্ছাচারিতা ও বৈষম্যমূলক আচরণ করছেন। তার একপাক্ষিক সিদ্ধান্ত, শিক্ষার্থীদের প্রতি অবহেলা ও অসহযোগিতামূলক মনোভাবের কারণে হলের পরিবেশ ক্রমাগত অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে। এছাড়া তিনি ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রদের ব্যক্তিগত মেসেঞ্জার গ্রুপের তথ্য গোপনে সংগ্রহ করেন। এ ব্যাপারে ছাত্ররা তার কাছে জানতে চাইলে তিনি তার বিভাগের এক শিক্ষার্থীর মাধ্যমে এই কাজ করা হয়েছে বলে দাবি করেন। কিন্তু উক্ত শিক্ষার্থী তা সম্পূর্ণ অস্বীকার করে।
তাদের অন্যান্য দাবিসমূহ হলো— হল প্রাধ্যক্ষকে গোপনীয়তা লঙ্ঘন ও মিথ্যাচারের জন্য নীতিমালা অনুযায়ী শাস্তি প্রদান করতে হবে, শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে, শিক্ষার্থী হয়রানির বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে, শিক্ষার্থীদের গোপনীয়তা রক্ষার জন্য কঠোর নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে, পক্ষপাতমূলক আচরণের কারণে হলের বিভিন্ন বরাদ্দ পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে এবং ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের যে সকল শিক্ষার্থীর আবাসিকতা শেষ হয়েছে তাদের পবিত্র মাহে রমজানের সময়টুকু অতিরিক্ত সময় বর্ধিত করতে হবে।
আবাসিক শিক্ষার্থীরা বলেন, হলের বর্তমান প্রাধ্যক্ষকে শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে অপসারণের দাবি তোলা হয়েছে। এমন রূঢ় ব্যবহারের দাম্ভিক, গুপ্তচরবৃত্তিকারী প্রাধ্যক্ষকে হলের শিক্ষার্থীরা চায় না।
জানতে চাইলে সৈয়দ আমীর আলী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হারুনর রশীদ বলেন, ‘আমার বিষয়ে আনীত অভিযোগগুলো মিথ্যা ও বানোয়াট। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের অনেক শিক্ষার্থীর পরীক্ষা শেষ হয়েছে। যাদের সিটগুলো নিয়ম অনুযায়ী আমি অন্যদের বরাদ্দ দিয়ে দিয়েছি। কিন্তু কয়েকজন শিক্ষার্থী আছে যারা হলে আরও সময় থাকতে চায়। তারা হল ছাড়তে রাজি না। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটিতে তাদের নাম তোলার জন্য উল্লেখ করেছি। মূলত এসব কারণেই আমার বিরুদ্ধে তারা অভিযোগ তুলেছে।’