দেশে প্রথমবারের মতো ঢাবির দুই শিক্ষার্থী পেলেন আইইই-ইডিএস ফেলোশিপ

ছবিতে বাম থেকে ডানে অধ্যাপক ড. উপমা কবির, ইয়াসিন আরাফাত প্রীতম, নাজমুল হাসান নাঈম, উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান ও ড. মাইনুল হোসাইন
ছবিতে বাম থেকে ডানে অধ্যাপক ড. উপমা কবির, ইয়াসিন আরাফাত প্রীতম, নাজমুল হাসান নাঈম, উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান ও ড. মাইনুল হোসাইন  © সংগৃহীত

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দুই শিক্ষার্থী পেয়েছেন মর্যাদাপূর্ণ আইইই-ইডিএস ফেলোশিপ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলোজি অনুষদের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল (ইইই) বিভাগ থেকে ইয়াসিন আরাফাত প্রীতম এবং নাজমুল হাসান নাঈম আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ও মাস্টার্সে এ ফেলোশিপ পেয়েছেন।

২০২৩ ও ২০২৪ সালের জন্য দুই শিক্ষার্থী IEEE Electron Devices Society (EDS) এর এ ফেলোশিপ পেয়েছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বুধবার (১২ ফ্রেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান দুই শিক্ষার্থীর হাতে এ সংক্রান্ত অ্যাওয়ার্ড তুলে দেন। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলোজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. উপমা কবির ও ইইই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মাইনুল হোসেন। ইয়াসিন এবং নাজমুল দুজনই বাংলাদেশ থেকে এ ফেলোশিপ অর্জনকারী প্রথম শিক্ষার্থী।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতামূলক আইইই-ইডিএস ফেলোশিপ অসাধারণ গবেষণা দক্ষতা প্রদর্শনকারী মেধাবী শিক্ষার্থীদের স্বীকৃতি দিয়ে থাকে। যারা ইলেকট্রন ডিভাইসের ক্ষেত্রে গবেষণায় সক্রিয়ভাবে যুক্ত এবং প্রকৌশল শিক্ষায় উৎকর্ষের প্রমাণ রেখেছে, তারাই এই ফেলোশিপের জন্য নির্বাচিত হয়ে থাকেন। 

২০২৩ সালে ইয়াসিন ছিলেন বিশ্বব্যাপী একমাত্র শিক্ষার্থী, যিনি আইইই-ইডিএস আন্ডারগ্র্যাজুয়েন অর্জন করেন। ২০২৪ সালে নাজমুল ছিলেন বিশ্বব্যাপী তিনজন মাস্টার্স ফেলোশিপ প্রাপ্তদের মধ্যে একজন। বাকি দুই পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী হলেন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি এবং মেক্সিকোর ন্যাশনাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে।

নাজমুল বর্তমানে নেগেটিভ ক্যাপাসিট্যান্স এফইটি-ভিত্তিক গ্যাস সেন্সর এর মডেলিং নিয়ে গবেষণা করছেন, যা নেগেটিভ ক্যাপাসিট্যান্স এর Steep-switching বৈশিষ্ট্যকে ব্যবহারের মাধ্যমে উচ্চ সংবেদনশীল এবং উচ্চ কার্যকারিতাসম্পন্ন সেন্সর তৌরি করতে সক্ষম।

আরো পড়ুন: ১৩ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রজ্ঞাপন কবে, যা জানাচ্ছে মন্ত্রণালয়

ইয়াসিন ন্যানোস্কেল এফইটি আর্কিটেকচার ডিজাইন ও সিমুলেশনে মেশিন লার্নিংয়ের ব্যবহার নিয়ে গবেষণা করছেন, যা আধুনিক সেমিকন্ডাক্টর প্রযুক্তি উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। নাজমুল ও ইয়াসিন অত্যন্ত আশাবাদী যে, তারা ইডিএস ফেলোশিপের সহায়তায় নতুন সেন্সর ও লজিক অ্যাপ্লিকেশনের জন্য উন্নত ও নির্ভরযোগ্য ডিভাইস মডেল তৈরি করতে পারবে। 

তাদের গবেষণার তত্ত্বাবধায়ক ইইই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মাইনুল হোসেন, যিনি লো-পাওয়ার কম্পিউটিং, বায়োসেন্সিং এবং এনার্জি হারভেস্টিংয়ের জন্য উন্নত সেমিকন্ডাক্টর ডিভাইসের গবেষণায় অত্যন্ত আগ্রহী। উল্লেখযোগ্য সাফল্য বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক স্থাপন করেছে, যা সেমিকন্ডাক্টর ডিভাইসের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতিকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরছে। 

ইয়াসিন এবং নাজমুলের এ সাফল্য যে শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অপরিসীম গর্ব বয়ে এনেছে তা নয়, বরং বিশ্বমঞ্চে তরুণ বাংলাদেশি গবেষকদের সম্ভাবনার দ্বারকেও উন্মুক্ত করেছে।


সর্বশেষ সংবাদ