সেই হলেই সিট পেলেন রাবি শিবির সভাপতি মোহাইমিন

আব্দুল মোহাইমিন
আব্দুল মোহাইমিন  © সংগৃহীত

আট বছর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের তৎকালীন ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের হাতে নির্যাতিত হন বর্তমান রাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আব্দুল মোহাইমিন। অবশেষে সেই হলেই এমফিলের শিক্ষার্থী হিসেবে আবাসিকতা পেয়েছেন তিনি। হলে উঠে সেই নির্যাতনের কথা স্মরণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন।

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) রাতে হলে উঠে তিনি তার ব্যক্তিগত আইডি থেকে পোস্টটি করেন।

আব্দুল মোহাইমিন পোস্টে লেখেন, ‘৮ বছর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ঘটে যাওয়া নির্মম নির্যাতনের স্মৃতিগুলো আজও আমার মনে তাজা। সেদিন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী তাণ্ডব, তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার নেতৃত্বে সেক্রেটারি ফয়সাল আহমেদ রুনুর ২২৯ নম্বর কক্ষে ঘটে যাওয়া নির্মমতার স্মৃতিগুলো আজও আমার মনে অমলিন। সেই ভয়াবহ রাত সেই নির্যাতনের রক্তাক্ত অধ্যায় আজও আমাকে তাড়া করে।’

আরও পড়ুন: এবার জানা গেল রাবি শিবির সভাপতির পরিচয়

তিনি লেখেছেন, ‘আজ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফলস্বরূপ ক্যাম্পাসগুলো ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী (নিষিদ্ধ) সংগঠন ছাত্রলীগের দখলমুক্ত। এই পরিবর্তন এক দিনে আসেনি। অসংখ্য শিক্ষার্থীর সংগ্রাম, ত্যাগ এবং সাহসের ফলেই ক্যাম্পাসগুলো আজ সত্যিকারের স্বাধীনতার স্বাদ পাচ্ছে।’

‘দীর্ঘ সময় পর সেই একই হলে নতুন পরিচয়ে ফিরেছি। এই নতুন স্বাধীনতার আলোয় বঙ্গবন্ধু হলে আবার ফিরে আসতে পেরে আমি আবেগে আপ্লুত। এমফিল শিক্ষার্থী হিসেবে এই হলে আমার জন্য বরাদ্দ হওয়া রুমটি আমার কাছে শুধু থাকার জায়গা নয়, বরং এটি অতীতের দুঃখকে জয় করার এবং ভবিষ্যতের জন্য নতুন এক অধ্যায় রচনা করার সুযোগ।’

রাবি শিবির সভাপতি লেখেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ও হলগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য শুধু থাকার জায়গা নয়, বরং এটি জ্ঞানচর্চা, একাডেমিক উন্নয়ন, এবং পারস্পরিক বন্ধুত্বের একটি নিরাপদ ক্ষেত্র। শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ও মননশীলতাকে বিকশিত করার জন্য এগুলো হওয়া উচিত সহিংসতামুক্ত ও শান্তির আশ্রয়। তবে আজ আমি শুধু আমার নিজের জন্য নয়, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।’

আরও পড়ুন: এবার জানা গেল রাবি শিবির সেক্রেটারির নাম

তিনি ফেসবুকে আরও লেখেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে যেন শিক্ষার্থীরা আর কখনো সহিংস রাজনীতি বা অন্যায় অত্যাচারের শিকার না হয়। শিক্ষার্থীদের জন্য হলগুলো হবে জ্ঞানচর্চা ও বন্ধুত্বের নিরাপদ স্থান, ত্রাস ও বিভেদের নয়।’

প্রসঙ্গত, ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর গত ২৩ সেপ্টেম্বর প্রকাশ্যে আসেন রাবি শাখা ছাত্র শিবিরের এই সভাপতি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্ট্যাডিজ বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী। বর্তমানে তিনি এমফিল করছেন।


সর্বশেষ সংবাদ