গবেষণার জন্য নিজস্ব তহবিলের কার্যক্রম শুরু ঢাবির

  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) শিক্ষা ও গবেষণার উন্নয়নে একটি নিজস্ব ফান্ড প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় উপাচার্য অফিস সংলগ্ন অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে ‘দ্য ঢাকা ইউনিভার্সিটি ফান্ড’ শীর্ষক এই ফান্ডের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান প্রধান অতিথি হিসেবে এই ফান্ডের তহবিল সংগ্রহ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

এসময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান দাতাবৃন্দকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, প্রাথমিকভাবে আজকে অনুদান গ্রহণের মাধ্যমে এই ফান্ডের কার্যক্রম শুরু হলো। এই ফান্ড একেবারে আচানক কোনো ঘটনা নয়। সিন্ডিকেটে অনুমোদনের ভিত্তিতে অনেক আগেই  এই ফান্ড গঠন করা হয়েছে। এটি চলমান থাকবে এবং প্রতিবছরই একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই, সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিবর্গ, স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান, ধনাঢ্য, দানবীর, শিক্ষা ও গবেষণায় অনুরাগী ব্যক্তিবর্গের নিকট থেকে অনুদানের চেক গ্রহণ করা হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণাকে আরও সমৃদ্ধ করতে এই ফান্ডের তহবিল আরও বৃদ্ধি করার জন্য দেশে- বিদেশে সুপ্রতিষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাইসহ দানশীল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি উপাচার্য আহ্বান জানান।

এছাড়াও এই ফান্ডের মূলধন ১ হাজার কোটিতে উন্নীত করা সম্ভব হবে বলে উপাচার্য আশাবাদ ব্যক্ত করেন। প্রথম দিনে ফান্ডে ১ কোটি ১১ লক্ষ টাকা জমা হয়েছে বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন: প্রচলিত শিক্ষানীতিতে ১২ বছরে শিক্ষাখাতের সমস্যা প্রকট হয়েছে: ঢাবি অধ্যাপক

উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, ভারতবর্ষে দানের ভিত্তিতেই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও তার বহির্ভূত নয়। এখানেও অনেক মানুষের দান রয়েছে, জমি রয়েছে। দার্শনিকরা পুণ্যকে পর্যন্ত দান করার কথা বলেছেন। কিন্তু বর্তমান সময়ে আমাদের সমাজে মানুষ সৎ না হয়ে সচ্ছল হচ্ছে প্রতিদিন, জ্ঞানী বা প্রজ্ঞাবান না হয়ে ধূর্ত হচ্ছে এবং হৃদয়বান না হয়ে বিশিষ্ট হচ্ছে। এ সমস্ত কারনে এই দর্শন গুলো ধীরে ধীরে স্তিমিত হয়ে যাচ্ছে।

গবেষণা নিয়ে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে রিসার্চ সেটা তো আসলে একটা কাজ করেই সফল হয় না। গবেষণা করতে টাকা লাগবে আবার টাকা হলেও যে ভালো গবেষণা হবে তারও কোনো গ্যারান্টি নাই। এখন গবেষণার জন্য টাকা চাই আবার টাকা ফিরেও যাচ্ছে আমাদের ইউনিভার্সিটি থেকে। আমাদের ইউনিভার্সিটি হচ্ছে পাঠদান গ্রাজুয়েট তৈরির ইউনিভার্সিটি এজন্য গবেষণার কাজে আমরা এগিয়ে যেতে পারি না। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ মমতাজউদ্দীন আহমেদ বলেন, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের থেকে যে অর্থ নেয় সে অর্থ দিয়ে তাদের গবেষণা কার্যক্রম চালানো খুব একটা সহজ নয়। কিন্তু আমাদের গবেষণা কার্যক্রম এমনভাবেই চালাতে হয় যতটুকু বাজেট গবেষণা কাজে ইউজিসি আমাদেরকে দেয়। এসময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অন্যান্যদের এই গবেষণা কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আহবান জানান।

তহবিলে অর্থদান করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী,  পিএইচপি গ্রুপের প্রতিষ্ঠা চেয়ারম্যান সূফী মীজানুর রহমান, পপুলার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ও ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী। 

এছাড়াও ঢাবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেটিং বাড়ানোর জন্য আমাদের রিসার্চ পাবলিকেশন বাড়াতে হবে। ব্যবসায় শ্রেণি যদি তাদের রিসার্চগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে প্রেস করেন তাহলে আমাদের শিক্ষার্থীরা বেশি রিসার্চ করার সুযোগ পাবে। এভাবে রেটিংটা বাড়বে। বিশ্ববিদ্যালয়কে উপরে নিয়ে যেতে হলে ব্যবসায় শ্রেণিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে এক হয়ে কাজ করতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন এবং বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষবৃন্দ।


সর্বশেষ সংবাদ