রাবির বঙ্গবন্ধু হল

জরাজীর্ণ টেবিল-নেই পর্যাপ্ত চেয়ারও, শিক্ষার্থীরা পড়ছেন ফ্লাশ লাইটের আলোয়

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের রিডিং রুম নিয়ে শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে রয়েছেন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের রিডিং রুম নিয়ে শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে রয়েছেন  © টিডিসি ফটো

পড়ার টেবিলের ঘুণে খাওয়া কাঠে জীর্ণ-শীর্ণ অবস্থা, রয়েছে চেয়ার সংকট, নেই পর্যাপ্ত বই রাখার তাক, বিদ্যুৎ চলে গেলে নেই বিকল্প কোনো ব্যবস্থাও-এটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের পড়ার ঘরের (রিডিং রুম) চিত্র। তবুও এখানে শিক্ষার্থীরা আসেন অনেকটা বাধ্য হয়েই। আর সমস্যা সমাধানে হল প্রশাসন তাকিয়ে আছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দিকে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, তারা চান সমস্যার দ্রুত অবসান।

ক্যাম্পাসের কেন্দ্রে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে আবাসিক শিক্ষার্থীর রয়েছেন ৫ শতাধিক। হলে তাদের পড়াশোনার জন্য রিডিং রুমে আসন রয়েছে মাত্র ৩০টি। চেয়ার সংকটের পাশাপাশি নেই কোনো আইপিএস-এর ব্যবস্থা। ফলে বিদ্যুৎ চলে গেলে মোবাইলের আলো জ্বেলে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের। বই রাখার জন্য নেই কোনো বই রাখার তাক (বুকসেলফ)। ফলে পড়ার টেবিলেই গাদাগাদি করে রাখতে হচ্ছে বই; আর রিডিং রুমের ৪টি ডেস্কে শিক্ষার্থীদের জন্য বই সংরক্ষণ করে রাখার কথা থাকলেও কয়েক বছর ধরে সেগুলো রয়েছে তালাবদ্ধ অবস্থায়। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রিডিং রুমে শিক্ষার্থীর তুলনায় সংকট রয়েছে আসনের। পর্যাপ্ত চেয়ার না থাকায় শিক্ষার্থীদের হলের খাবার রুম থেকে চেয়ার এনে ব্যবহার করতে দেখা গেছে; নেই বিদ্যুতের কোনো বিকল্প ব্যবস্থা। ফলে বিদ্যুৎ না থাকলে হলটির আবাসিক শিক্ষার্থীদেরকে মোবাইলের টর্চ-লাইটের আলোতে পড়াশোনা করতে হয়। রিডিং রুমের এমন দুর্দশার বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বারবার অভিযোগ জানালেও হল প্রশাসন কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পারেনি। যার ফলে প্রতিনিয়তই চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হলটির আবাসিক শিক্ষার্থীদের।

আরও পড়ুন: রাবিতে একবছর মেয়াদি পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমায় ভর্তি বিজ্ঞপ্তি

এ নিয়ে রাবির বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থী হাবিব রেজা জানান, আমাদের হলের রিডিং রুমের টেবিলগুলো পোকায় খাওয়া। বই রাখার জন্য কোনো তাকের ব্যবস্থা নেই। ফলে অনেক সমস্যা পোহাতে হয় আমাদেরকে। এত অল্প আসন যে জায়গা না পেয়ে অনেক সময় ফিরে যেতে হয়। হলের ডাইনিং ক্যান্টিনে আইপিএস থাকে অথচ রিডিং রুমে কোনো আইপিএস নেই। বিদ্যুৎ চলে গেলে ফোনের আলো জ্বেলে পড়তে হয়; এটি খুবই লজ্জাজনক। হল প্রশাসনকে এ বিষয়ে জানালেও তাঁরা এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আমরা দ্রুত এর সংস্কার চাই।

তুহিনুজ্জামান নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের রিডিং রুম আকারে তুলনামূলক ছোট। বিদ্যুৎ চলে গেলে রুমে পড়াশুনায় অনেক সমস্যা দেখা যায় আইপিএস ব্যবস্থা না থাকার কারণে। বই রাখার কোনো সেলফ নেই। নেই পর্যাপ্ত চেয়ার টেবিলের ব্যবস্থা। এছাড়াও রুমে ওয়াইফাই-এর পর্যাপ্ত গতির সমস্যা রয়েছে। রিডিং রুমের পাশে একটি ওয়াশরুম থাকলেও সেটা শুধু  হল অফিসের কর্মকর্তারা ব্যবহার করেন এবং অন্যান্য সময় তালাবদ্ধ দেখা যায়। ফলে আমাদের ওয়াশরুম ব্যবহার করার জন্য পাশে খানিকটা দূরে অন্য ব্লকের ওয়াশরুমে যেতে হয়।

রিডিং রুমের সমাগ্রিক অব্যবস্থাপনার বিষয়ে জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু হলের প্রাধ্যক্ষ শাইখুল ইসলাম মামুন জিহাদ বলেন, হলের শিক্ষার্থীরা আমাদের কাছে রিডিং রুমের আসন সংখ্যা বাড়ানোর জন্য লিখিত আবেদন দিয়েছেন। আমরা সেটি বিবেচনা করে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে চিঠি পাঠিয়েছি। কিন্তু সেখান থেকে এখনো আমরা কোনো রকম আশ্বাস পায়নি। আমরা চাইলেই রিডিং রুমের আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারবো না; তার জন্যে মোটা অংকের অর্থের প্রয়োজন; যা হল প্রশাসনের নেই। তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতা প্রয়োজন।

আর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুলতান-উল-ইসলাম বলেছেন, মূলত হলের নকশার কারণে এই সংকট দেখা দিয়েছে। হল নির্মাণের আগে পরিকল্পনা করে রিডিং রুমের জন্য একটি বড় রুম বরাদ্দ করলে এ সমস্যার সম্মুখীন হওয়া লাগতো না। তবে অবকাঠামো জরাজীর্ণের বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করা হবে বলেও জানান তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence