ফেনীতে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ

৬ দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ
৬ দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ  © টিডিসি ফটো

জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ কোটা বাতিলসহ ৬ দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছে ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দুপুরে ফেনীর পরশুরাম-ফুলগাজী সড়কে শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করে।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা বাতিলসহ মোট ৬ দফা দাবিতে তাদের এ আন্দোলন।

অবরোধ চলাকালে শিক্ষার্থীরা ৬ দফা দাবি জানিয়েছেন। দাবিগুলো হলো— জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে অবিলম্বে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের ৩০% প্রমোশন কোটা বাতিল করতে হবে, জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর (টেক) পদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বাধ্যতামূলক “ডিপ্লোমা প্রকৌশল” থাকতে হবে, ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর সহ দেশের কারিগরি সকল পদে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ দিতে হবে, কারিগরি (পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট শিক্ষার্থীদের জন্য) সকল বিভাগীয় শহরগুলোতে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে, কারিগরি শিক্ষা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পদে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের চাকরির আবেদনের সুযোগ বাস্তবায়ন করতে হবে এবং ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের জন্য প্রাইভেট সেক্টরে সর্বনিম্ন বেতন স্কেল নির্ধারণ করে দিতে হবে।

মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী সুসান সানি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোনোভাবেই নিয়োগ দেওয়া উচিত নয়। এই পদে সংশ্লিষ্ট টেকনোলজির ডিপ্লোমা গ্রাজুয়েটদেরই নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর হিসেবে কর্মরত ব্যক্তিদের অধিকাংশই এইচএসসি বা অনার্স সম্পন্ন করা শিক্ষার্থী, যাদের কাছ থেকে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবহারিক জ্ঞান সঠিকভাবে অর্জন করতে পারছি না। যদি তাদের জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে নিয়োগ দেওয়া হয়, তাহলে আমাদের অ্যাকাডেমিক ও ব্যবহারিক শিক্ষায় বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হবে।’

রাহিম নামের অপর এক শিক্ষার্থী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘ক্রাফট ইন্সট্রাক্টররা কারিগরি ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসেন না। তারা মূলত ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের ল্যাব সহকারী কর্মচারী এবং অষ্টম শ্রেণি বা এসএসসি পাস। তাদের ডিপ্লোমার শিক্ষক হওয়ার মতো কোনো যোগ্যতা নেই। যদি তারা ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান, তাহলে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মান কতটুকু নিশ্চিত হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদটি শুধুমাত্র ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত। তাই ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর হিসেবে প্রমোশন দেওয়ার সিদ্ধান্তকে কারিগরি শিক্ষা ধ্বংসের ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছি।’

অবরোধ চলাকালে সড়কে যান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ক্রাফট ইন্সট্রাক্টররা জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে প্রমোশনের জন্য আদালতে মামলা করলে সোমবার (১৮ মার্চ) আদালত তাদের পক্ষে রায় দেন। আর এই রায় প্রত্যাখান করে সারাদেশের পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা বুধবার (১৯ মার্চ) থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ছয় দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছে।


সর্বশেষ সংবাদ