আওয়ামী লীগের কমিটি-উপকমিটিতেই ভোটার ২ কোটির বেশি: সাবেক জবি ভিসি

‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান
‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান  © টিডিসি ফটো

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেছেন, আওয়ামী লীগের নিবন্ধিত এবং অনিবন্ধিত মিলিয়ে বিভিন্ন কমিটিতে থাকা তালিকাভুক্ত লোকের সংখ্যা ২ কোটিরও বেশি। কিন্তু তারা সবাই ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে আসে না। যদি তারা ভোট দিতে আসত, তাহলে ভোটগ্রহণ মাত্র ১০ শতাংশের মতো হতো না। ভোটগ্রহণের এ হার আরও বেশি হতো। 

শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের মওলানা আকরম খাঁ হলে এডুকেশন রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ইআরডিএফবি) আয়োজিত ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জবির সাবেক এই উপাচার্য বলেন, দেশের স্বাধীনতার যত বিপক্ষের পার্টি বা পক্ষ রয়েছে তাদের মঞ্চ হচ্ছে বিএনপি। বিএনপির সিদ্ধান্ত লন্ডন থেকে আসে জানিয়ে তিনি বলেন, যারা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য আলোচনার কথা বলছেন, তাদের জানা উচিত বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত লন্ডন থেকে নেয়াই আছে। ফলে আলোচনায় কোনো সমাধান আসবে না।

নির্বাচন কমিশনের বরাত দিয়ে ড. মীজানুর রহমান বলেন, এখন আর কোনো দলের যেহেতু অংশগ্রহণের সুযোগ নেই, তাই এখন আমাদের কাজ করতে হবে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে দেশের জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। সরকার দলীয় অনেকেই ভোটকেন্দ্রে আসে না জানিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের তালিকাভুক্ত সদস্যের সংখ্যাই ২ কোটির উপরে। তাহলে ভোটের হার কেন ১০ শতাংশ হবে? তিনি বলেন, এখন আমাদের একমাত্র কাজ নির্বাচনে যাওয়া এবং মানুষদের ভোট দিতে নিয়ে আসা।

আরও পড়ুন: দেশে ব্যয়বহুল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়ছে

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে। দেশীয় এবং দেশের বাইরের শক্তিগুলো সে অগ্রযাত্রাকে থামাতে চায়। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে জানিয়ে তারা বলেছেন, দেশের নির্বাচনকালীন চলমান সংকটে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে আবারও নির্বাচিত করতে কাজ করবে ইআরডিএফ। সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে হবে। নির্বাচন নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, নব-গঠিত সরকার আরও বেশি প্রভাবশালী হবে বলেও জানিয়েছেন বক্তারা।

এসময় সাংবাদিক অজয় দাসগুপ্ত বলেন, বাংলাদেশকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এক সময় ধারণা ছিল, এ দেশটি তাদের সহায়তা ছাড়া টিকবে না। কিন্তু তাদের সে ধারণা পাল্টে দিয়ে এ দেশ ৫৩ বছরে দাঁড়িয়ে সাধারণ নির্বাচনে উপনীত হচ্ছে। এর আগে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য কোনো সরকার এতো বেশি অর্থনৈতিক সাফল্য নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেননি।

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় থেকে বাংলাদেশের বিরোধিতা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের সে চেষ্টা এখনও অব্যাহত রয়েছে। আগামী নির্বাচনে নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেরা নেওয়া এবং বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার মাধ্যমে তাদের সে প্রচেষ্টা রুখে দিতে হবে। 

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) হেপাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খাঁন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. জেবউননেছা, সাংবাদিক অজয় দাসগুপ্ত, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার।


সর্বশেষ সংবাদ