জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে যোগ দিলেন হাবিপ্রবি শিক্ষার্থী জাবেদ
- হাবিপ্রবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২২, ০৫:৪৭ PM , আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২২, ০৫:৪৭ PM
জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে যোগ দিলেন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ২০১৩ শিক্ষাবর্ষের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১০ম ব্যাচের শিক্ষার্থী জাবেদ আরেফিন। গত ১১ অক্টোবর জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো’তে যোগদান করেছেন।
জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই জাতিসংঘের বিশ্বস্ত ও পরীক্ষিত বন্ধু হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। বিশ্বের সকল প্রান্তের দুর্গত, নিপীড়িত ও নিরীহ মানুষের সেবায় এ শান্তিরক্ষীদের হাত সর্বদা প্রসারিত। সংঘাতপূর্ণ ও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে নিজের জীবনের চরম ঝুঁকি নিয়েও তারা আর্তমানবতার সেবা করে চলেছেন।
আরও পড়ুন: গুগলে চান্স পাওয়া ছিল স্বপ্নের মতো: জাবি শিক্ষার্থী নোশিন
শান্তিপ্রিয় জাতি হিসেবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি হচ্ছে ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কার সাথে বৈরিতা নয়’। বিশ্বের বিরোধপূর্ণ স্থানে জাতিসংঘের ডাকে শান্তি স্থাপন করা এই সশস্ত্র বাহিনীর জরুরি দায়িত্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাতিসংঘের এই শান্তি রক্ষা বাহিনী। জাতিসংঘকে শান্তি স্থাপনে সহায়তা দেয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ হয়ে উঠছে বিশ্বের কাছে অধিক সম্মানীয় ও গৌরবের অধিকারী।
জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে যোগ দেওয়ার অভিজ্ঞতা জানিয়ে হাবিপ্রবি’র সাবেক শিক্ষার্থী জাবেদ আরেফিন বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিলো সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে দেশের সেবা করা, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কাজ করা, দেশের জন্য গৌরব বয়ে আনা। জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে এসে যখন এই বিদেশের মাটিতে লাল সবুজের পতাকা উড়তে দেখি, জলপাই কালারের ইউনিফর্ম পরে যখন বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করি, তখন অসম্ভব ভালো লাগে। যখন দেখি কঙ্গোলিজরা আমাদের বাংলায় গান গায়, বাংলায় কথা বলে, বাংলাদেশের কথা বলে, নিজেদের বাচ্চাদের নাম আমাদের নামে রাখে তখন স্বজনবিহীন এতটা দূরে থাকার সকল কষ্ট ভুলে যাই।’
অনুজদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের অধীনে স্নাতক পাশ করেও সেনাবাহিনীতে যুক্ত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ, সিএসই অনুষদ, ডিভিএম ও বিবিএ থেকে সেনাবাহিনীতে আবেদন করা যায়। যদি কারো স্বপ্ন থাকে দেশ মাতৃকার জন্য কাজ করার, বুকে থাকে দুর্বার সাহস, যদি রাজি থাকে সকল ত্যাগে, দেশের প্রয়োজনে এগিয়ে আসতে চায় সবার আগে তাহলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে স্বাগতম।’
উল্লেখ্য, জাবেদ আরেফিন হাবিপ্রবি থেকে ২০১৮ সালে স্নাতক পাস করার পর ২০১৯ সালে এলজিআরডি মন্ত্রনালয়ের অধীনে সহকারি পরিচালকের দায়িত্বে চাকরি শুরু করেন। পরবর্তীতে সেখান থেকে তিনি বাংলাদেশ আর্মিতে সুযোগ পেলে বিএমএ তে ট্রেনিং এর জন্য জয়েন করেন। ট্রেনিং শেষে সরাসরি ক্যাপ্টেন হিসেবে টাংগাইলের ঘাটাইল সেনানিবাসে যোগদান করেন। এর পর ২০২০ সালের মে মাসে পার্বত্য চট্টগ্রামে ‘অপারেশন উত্তরণ’ এর আওতায় বান্দরবন অঞ্চলে বিজিবিতে ক্যাম্প কমান্ডার হিসেবে যোগদান করেন। বিজিবিতে থাকাকালীন পার্বত্য অঞ্চলের সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি দেশের বান্দরবন-মিজোরাম সীমানার সার্বভৌমত্ব নিশ্চিতকরনের মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। অবশেষে ২০২২ সালের ১১ই অক্টোবরে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো'তে যোগদান করেন।