গেস্টরুমতো একটি আবদ্ধ কক্ষ, আছে অনেক বাতাসও: জয়

ঢাবিতে ছাত্রলীগের মানববন্ধন কর্মসূচি
ঢাবিতে ছাত্রলীগের মানববন্ধন কর্মসূচি  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রতিটি আবাসিক হলে অতিথিদের জন্য রয়েছে ‘গেস্টরুম’। রাতে এসব গেস্টরুমে হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়— এমন অভিযোগ প্রতিনিয়তই ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে।

ছাত্রলীগের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে না যাওয়া, ছাত্রলীগের সিনিয়রদের সালাম না দেয়া, সালাম দিতে দেরি করা, বড় ভাইদের নির্দেশের বাইরে কিছু করা প্রভৃতি নিয়ম-কানুনের অবাধ্য হলে বা কর্মসূচিতে অংশ না নিলে রাতে গেস্টরুমে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ‘বিচার’ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

করোনা মহামারী স্বাভাবিক হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো খোলার পর থেকে এ পর্যন্ত ছাত্রলীগের এমন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন অন্তত ২৬ জন সাধারণ শিক্ষার্থী। গতকাল শনিবার (২৮ মে) দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পরের দিন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের দাবি, সাংবাদিকরা না জেনে গেস্টরুমকে টর্চারসেল বলে নিউজ করে। এসময় তিনি সাংবাদিকদের প্রতি প্রশ্ন রাখেন, বলেন, মিথ্যা তথ্য দিয়ে ছাত্রলীগকে নিয়ে কেন ষড়যন্ত্র করেন আপনারা? আজ রবিবার (২৯ মে) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের উপর বহিরাগত ছাত্রদল ক্যাডারদের সশস্ত্র হামলার প্রতিবাদ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে করা এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে এ মন্তব্য করেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভার্স্কযের পাদদেশে এটি অনুষ্ঠিত হয়।

আরও পড়ুন: প্রতিদিন চলে গেস্টরুমের নির্যাতন, ভয়ে মুখ খোলেন না ভুক্তভোগীরা

এসময় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, আপনারার বারবার বলেন গেস্টরুম সংস্কৃতি। আপনারা যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তারা কি ভুলে গেছেন? গেস্টরুম সংস্কৃতি বলতে যেটা নেগেটিভ অর্থে বুঝাচ্ছেন। আচ্ছা গেস্টরুম বলতে কি বুঝাচ্ছেন আপনারা? একটি হলে হাজার হাজার শিক্ষার্থী থাকে। তারা গেস্টরুমে বসে তারা তাদের মধ্যে মতবিনিময় করে তাহলে আপনাদের সমস্যা কি?

আরও পড়ুন: গেস্টরুম-গণরুমে নির্যাতনের ভয়, ঢাবি ছেড়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে

“আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাথী। আমি আমার বড়ভাদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার জন্য আমি আমার রুমে, গেস্টরুমে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বা যেকোন জায়গায় পরিচিত হতে পারি। কিন্তু আপনার না জেনে নিউজ করেন। গেস্টরুমকে ‘টর্চারসেল’ বলেন। ‘টর্চারসেল’ বলতে আপনার কি বুঝাচ্ছেন?”

আরও পড়ুন: ৮ মাসে ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার ২৬ শিক্ষার্থী

তিনি আরও বলেন, গেস্টরুম একটি আবদ্ধ কক্ষ। সেখানে জানালা আছে ৫-৬টি। সেখানে অনেক বাতাস, অনেক কিছু আছে.....টয়লেটও আছে সেখানে। তাহলে কেন আপনারা বারবার গেস্টরুমকে ‘টর্চারসেল’ হিসেবে মিথ্যে কথা বলে ছাত্রলীগকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করেন?

আরও পড়ুন: গেস্টরুমে ছাত্রকে ‘ধোয়া না ছেড়ে সিগারেট শেষ করতে’ বাধ্য করলো ছাত্রলীগ নেতারা

“আমি আবারও বলছি আপনাার যারা আছেন, সুশীলরা যারা আরামে রাতে ঘুমান তাদেরকে বলছি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আছে বিদায় আপনার আরামে আছেন। কারণ আজকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোন টেন্ডারবাজি হয়না। চাঁদাবাজি হয়না। আজ শিক্ষার্থীরা আরামে ঘুমাতে পারে। তাদের অস্ত্রের শব্দে লাফিয়ে উঠতে হয়না।”

আরও পড়ুন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হলে হলে ছাত্রলীগের ‘গেস্টরুম আদালত’

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। মানববন্ধনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের নেতাকর্মী, বিভিন্ন হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ সংবাদ