জাবি ভিসি বাসভবন দখলে রাখায় প্রশাসনিক স্থবিরতা
- জাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২২, ১১:১০ PM , আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২২, ১১:৪০ PM
মেয়াদ শেষ হওয়ার এক মাস পরেও ভিসির বাসভবন দখলে রেখে প্রশাসনিক স্থবিরতা সৃষ্টি করেছে। বাসভবন দখল করে রাখা সাবেক ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের দুর্নীতিপরায়ণতা, স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মপ্রীতির প্রমাণ এতে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেছে বলে এক বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ।
আজ সোমবার (৪ এপ্রিল) জাবি সংসদের দপ্তর সম্পাদক ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এসব বলা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে সাবেক ভিসির বাসভবন ছেড়ে না যাওয়ার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বলা হয়, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর আন্দোলনের মাধ্যমে ফারজানা ইসলামের দুর্নীতিবাজ ও নিপীড়ক চরিত্র সারা দেশের সর্বস্তরের মানুষের সামনে অনেক আগেই স্পষ্ট হয়েছে। দায়িত্ব শেষ হওয়ার পরেও বাসভবন ছেড়ে না যাওয়া এবং নানাভাবে বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে আধিপত্য বজায় রাখার প্রচেষ্টা চালানো তার চূড়ান্ত নির্লজ্জতার আরেকটি প্রমাণ।
আরও বলা হয়, ফারজানা ইসলাম সাবেক ভিসি হওয়া সত্ত্বেও অন্যায়ভাবে একজন ভিসির সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। ভিসির বাসভবনটি দখল করে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ১৯ জন কর্মচারীকে খাটানো হচ্ছে। তার পরিবার নিয়মবহির্ভূতভাবে এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ২টি গাড়ি ব্যবহার করছে। তাছাড়া সম্প্রতি হাজারখানেক ফাইল আটকে রেখে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের তার আজ্ঞাবহ করে রাখার ঘৃণ্য প্রচেষ্টার কথাও আমরা জানতে পেরেছি। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে উদ্ভূত প্রশাসনিক স্থবিরতার ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী সহ সকল অংশীজন।
সাবেক ভিসি ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে আনীত দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ করার কথাও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, একজন সাবেক ভিসি এতশত অনিয়ম, দুর্নীতি করে শাস্তির মুখোমুখি না হলে, তা বাংলাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি বাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
অবিলম্বে ভিসির বাসভবন ত্যাগ না করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে ফারজানা ইসলামকে ভিসির বাসভবন থেকে অপসারণ করা হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
এ ব্যাপারে জাবি অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, মেয়াদ শেষ হলে সাথে সাথেই বাসভবন ছেড়ে দেওয়া উচিত। যদি সমস্যা থাকে তাহলে আবেদন করে সময় নিতে পারে। কিন্তু ভিসির বাসভবনে কোনও প্রকার কাগজপত্র থাকার বৈধতা নেই। ভিসি না হয়েও ভিসির মতো কাজ করা বা আচরণ করা অপরাধ; এসব কাজ বৈধ নয়।
“এখানে অন্যতম সমস্যা হচ্ছে, সরকার এই বিষয়টাকে ঝুলিয়ে রেখেছে। নতুন ভিসি নিয়োগ দিয়ে এসব সমস্যার সমাধান করা উচিত।”
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক দিল আফরোজ বলেন, সাধারণত মেয়াদ শেষ হলে ভিসির বাসভবনে থাকা উচিত না। যতক্ষণ নতুন ভিসি না হবে ততক্ষণ সেই বাসভবন খালি থাকা উচিত। কিন্তু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ব্যাপারে নিজস্ব কোনও নিয়ম আছে কি না তা জানা নেই।
মেয়াদ শেষ হওয়ার পর বাসভবনে থাকার কোনও নিয়ম আছে কি না জানতে চাইলে রুটিন দায়িত্বে থাকা জাবির ভিসি অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, এরকম কোনও নিয়ম আছে বলে আমার জানা নেই।