আয়না ঘরকে জাদুঘর বানাতে হবে: মানবাধিকার কর্মী লেনিন

আলোচনা সভা
আলোচনা সভা  © টিডিসি ফটো

আয়না ঘরসহ অন্যান্য সকল টর্চার সেলগুলোকে খুঁজে বের করে তা জাদুঘরে রূপান্তর করতে বলেছেন লেখক ও মানবাধিকার কর্মী রেজাউর রহমান লেনিন।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আর সি মজুমদার অডিটোরিয়ামে "মায়ের ডাক" কর্তৃক আয়োজিত 'গুম বিচ্ছেদ ও ব্যবচ্ছেদ' শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন মায়ের ডাকের সমন্বয়ক সানজিদা আক্তার তুলি, গবেষক ও মানবাধিকার কর্মী রেজাউর রহমান লেনিন, লেখক ও গবেষক সহুল আহমদ এবং নৃতত্ত্ববিদ মুশফিকুর রহমান জোহান।

রেজাউর রহমান লেনিন বলেন, ২০১০ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত  ৭০৩টি জোরপূর্বক গুমের ঘটনা আমরা জানি। যার মধ্যে ১৫৩ জনের কোনো খোঁজ খবর এখনো পাওয়া যায়নি। দেশে বিদ্যমান নয়টি গোয়েন্দা সংস্থার প্রত্যেকটির বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ রয়েছে।  তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। 

তিনি বলেন, আইন কমিশন, দুদক, মানবাধিকার কমিশন ইত্যাদি কোনো সংগঠন গত ৫৩ বছরে গুমের বিরুদ্ধে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ  দেখাতে পারেনি। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর গতকাল বুধবার গুমের তদন্তের জন্য একটি কমিশন গঠন করা হয়। মাত্র ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিশন কিছুই করতে পারবে না। কমিশন গঠনে নাগরিকদের সম্পৃক্ত করা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ তার।

গবেষক এবং লেখক সহুল আহমদ বলেন, প্রত্যেক শাসনামলে কিছু গুমের কাহিনি ঘটেছে। কিন্তু ২০১০ এর পর থেকে গুম, ক্রসফায়ার এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে সিস্টেমেটিক ওয়েতে ব্যবহার করা হয়। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য এই প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়। ক্রসফায়ারকে কেউ কেউ  বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করলেও গুম নিয়ে মুখ খোলেনি ক্ষমতাসীন কেউ। এছাড়া প্রত্যেকটা ক্রসফায়ারের প্রেসনোট প্রায় সমান ছিল। "অস্ত্র পাওয়া গিয়েছে", "আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উপর হামলা করেছে" ইত্যাদি জাতীয় জীবনের জন্য হুমকিমূলক কার্যক্রমের সাথে জড়িত থাকার ব্যাখ্যা দিয়ে  ক্রসফায়ার বা বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে।

গুম হওয়া এক ব্যাক্তির পরিবারের সদস্য বলেন, প্রতিদিন দরজা নক হলেই মনে হতো এই বুঝি আমার স্বামী ফিরে এসেছেন। 

আরেক গুম হওয়া ব্যাক্তির স্ত্রী বলেন,আমার মেয়ে মীমের আড়াই বছর বয়সে তার বাবা গুম হয়। আমি ঘরে প্রচুর ছবি লাগিয়ে রাখি, যেন কখনো মিম রাস্তায়  তার বাবাকে দেখলে চিনতে পারে।


সর্বশেষ সংবাদ