মৌ চাষে সাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছে রাবি শিক্ষার্থী নাহিদ

রাবি শিক্ষার্থী নাহিদ
রাবি শিক্ষার্থী নাহিদ  © টিডিসি ফটো

পড়ালেখার পাশাপাশি মৌচাষের জন্য খামার করে নতুন উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন ফয়সাল আহমেদ নাহিদ। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র। ঠাকুরগাঁও জেলার সীমান্ত ঘেঁষা হরিপুর উপজেলার বকুড়াল গ্রামে তার বাড়ি। নাহিদের গড়ে তোলা মৌ খামারে এক বছরেই মধু উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে ৫ গুণ। তিনি ব্যাপক সম্ভাবনা দেখছেন এই খামার নিয়ে।

আরও পড়ুন: ক্ষুদা, দারিদ্র, অবহেলার সাথে লড়ে শিউলি ফুটলো ডাক্তার হয়ে

আগে প্রশিক্ষন নিয়েছিলেন মৌ চাষের উপর। গত বছর লকডাউনে তার বাব মারা যাওয়ার পর টিউশনির জমানো সাত হাজার টাকা দিয়ে শুরু করেন মৌ চাষ। শুরুতে মাত্র ২টি বাক্স দিয়ে মৌ চাষ শুরু করলেও এখন তার ১০টি মৌ বাক্স রয়েছে। প্রতি মৌসুমে প্রতিটি বাক্স থেকে ৮-১০ হাজার টাকার মধু সংগ্রহ করেন তিনি। গ্রামের সরিষা ক্ষেত, লিচুর মুকুল ও কুমড়া ক্ষেত থেকে মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহ করেন নাহিদ।

মৌ চাষ নিয়ে এখন স্বপ্ন দেখছেন তিনি। প্রতিদিন তার উৎপাদিত মধু কিনতে বাড়িতে ভিড় জমায় ক্রেতারা। প্রতি কেজি মধু বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকা দরে। আবার কুরিয়ারের মাধ্যমে তার মধু কিনতে বিভিন্ন জেলা থেকে ক্রেতারা যোগাযোগ করছেন।

মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহের প্রক্রিয়া সম্পর্কে নাহিদ বলেন, মৌ বাক্স ফসলের মাঠে রেখে দেই। দিনের বেলা মৌমাছিগুলো ফুল থেকে নেকটার (ফুলের রস) সংগ্রহ করে এবং প্রসেসিং এর মাধ্যমে ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে মধুতে পরিণত করে। নেকটার সংগ্রহের সময় তাতে পানির পরিমাণ থাকে ৫০-৬০ ভাগ। পরবর্তীতে সেটা সম্পূর্ণ হাতে স্পর্শ ছাড়া মধু সংগ্রহের মেশিন দিয়ে সংগ্রহ করতে হয়। মেশিনে সংগ্রহের ফলে মৌচাক কিংবা বাচ্চা কিছুই নষ্ট হয় না।

তিনি বলেন, শুরুতে শখ করে মৌ চাষ করলেও এখন এটির মাধ্যমে সাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছি। এখানে থেকে উপার্জিত অর্থ দিয়ে আমি পরিবারের পাশে দাড়াতে পারছি। ভবিষ্যতে আমি নিজেকে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই, যার শুরুটা মূলত এখান থেকেই করেছি। আমি প্রত্যাশা করি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আমার স্বপ্ন দ্রুত বাস্তবায়ন হবে।

আরও পড়ুন: দেশে ১৮৭ জনের ওমিক্রন শনাক্ত

স্থানীয় বাসিন্দা জানে আলম বলেন, নাহিদ অত্যন্ত মেধাবী ও পরিশ্রমী ছেলে। লেখাপড়ার পাশাপাশি তার এই মৌ খামার তাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে
তার খামারের মধুর মানও অনেক ভালো। খামারটি উপজেলায় বেশ আলোচনা সৃষ্টি করেছে।

এ বিষয়ে হরিপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নইমুল হুদার বলেন, মৌ খামার একটি দারুণ উদ্যোগ। এতে পরাগায়ন ঘটে এবং ফসলের ফলন ১৫-২০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। ভালো ফলনের জন্য আমরা কৃষককে ফসলের মাঠে দুটি করে মৌ বাক্স রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকি।


সর্বশেষ সংবাদ