এক-দুই পিস মাছ-মাংস বিক্রি করেন রাবি ছাত্র, দিচ্ছেন হোম ডেলিভারি

রাবি ছাত্র মো. সাগর ইসলামের উদ্যোগ
রাবি ছাত্র মো. সাগর ইসলামের উদ্যোগ  © টিডিসি ফটো

বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে সব থেকে বেশি বিপদে আছে ঘর ছেড়ে বাইরে থাকা শিক্ষার্থীরা। মাছ মাংস কাটছাঁট করেই চলছেন তারা। ফলে আমিষহীনতায় ভুগছেন অনেকে। এ পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি দূর করতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষার্থী হাতে নিয়েছেন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক টুকরো মাছ, মাংস, কলিজা বিক্রির কাজ শুরু করেন তিনি।

তরুণ এই উদ্যোক্তা হলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সাগর ইসলাম। মাত্র কয়েকদিনে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। 

সাগরের শুরুটা বেশ কঠিন ছিল বলে জানান তিনি। ‘এক টুকরো মাছ মাংস হোম ডেলিভারি বাজার’ নামে ফেসবুকে পেজ খুলে নানা নেতিবাচক মন্তব্যের শিকার হয়েছিলেন তরুণ এই উদ্যোক্তা। আবার অনেকে তার এমন কাজকে সাধুবাদ জানিয়েছিলেন বলে জানান সাগর।

সাগর বলেন, নতুন উদ্যোগ নিয়ে আমি যখন ফেসবুকে পেজ খুলি, তখন অনেকে হাসিঠাট্টা করেছে। আবার অনেকে উৎসাহও দিয়েছে। কিন্তু আমি মন থেকে চেয়েছিলাম অন্যদের থেকে ভিন্ন কিছু করতে। যেন রাজশাহীতে আমার মতো শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার পাশাপাশি খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ তৈরি হয়।

এরই মধ্যে সাগরের এই সেবা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজশাহী নগরীর নানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। পেজে পছন্দের পণ্য, পরিমাণ, ক্রেতার নাম, লোকেশন এবং ফোন নাম্বার লিখে এসএমএসের মাধ্যমে অর্ডার করলেই তা পৌঁছে দেন সাগর।

আরও পড়ুন: ঢাবিতে অনলাইন শপ রুট'স গুডস বিডির উদ্বোধন

জানা যায়, প্রতিটি পণ্যের রয়েছে আলাদা আলাদা মূল্য তালিকা। যা তিনি ফেসবুকে প্রচার করেছেন। প্রতি টুকরো মাছের মাথা ১৯ টাকা, এক টুকরো তেলাপিয়া মাছের লেজ ও মিড পিস ১২ টাকা, রুই মাছের মিড ১৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়াও মুরগীর মাংসের সঙ্গে ভোজনরসিকদের জন্য রয়েছে গরুর মাংস এবং গরুর কলিজা। এক টুকরো মুরগির মাংস ১৪ টাকা, গরুর মাংস প্রতি টুকরো ২৮ টাকা এবং দুই  টুকরো গরুর কলিজা ২৪ টাকা। আর ১০০ গ্রাম গরুর বট ৩৫ টাকায় পাওয়া যায়। কেউ চাইলে এক টুকরো করেও মাছ, মাংস, কলিজা কিনতে পারবেন।

কেমন চলছে তার উদ্যোগ? জানতে চাইলে সাগর বলেন, নিজের প্রত্যাশার তুলনায় ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। পর্যাপ্ত পুঁজি না থাকায় এবং নিজে একা ডেলিভারি অর্ডার সম্পন্ন করতে পারছি না। ঈদের পর থেকে বড় পরিসরে পরিকল্পনা মাফিক এগিয়ে যাব।

সাগর আরো বলেন, শুরুর দিকে বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশের এলাকা কেন্দ্রিক চিন্তা-ভাবনা থাকলেও বর্তমানে রুয়েট ক্যাম্পাস, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, আম চত্বরসহ শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে অর্ডার আসছে। একার পক্ষে দূর-দূরান্তে ডেলিভারি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। 

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে সাগর বলেন, সামনে বৃহৎ পরিসরে উদ্যোগ পরিচালনা করতে চাই। নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ রুয়েট, মেডিকেল শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই সেবা পৌঁছে দিতে চাই। এমনকি নিজের প্লাটফর্ম থেকে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের কাজের সুযোগ করে দিতে চাই। আমার এই প্লাটফর্ম এমন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে যার মাধ্যমে দেশব্যাপী কর্মসংস্থানের একটা সুযোগ তৈরি হবে।


সর্বশেষ সংবাদ