সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখার পুরস্কার পেলেন সাদিও মানে

সাদিও মানে
সাদিও মানে  © সংগৃহীত

সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখা ফুটবলারদের জন্য প্রথমবারের মতো এই ক্যাটাগরিতে পুরস্কার রেখেছে ফ্রান্স ফুটবল। সেসব কাজ দিয়ে সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখার পুরস্কারটা এবার পেলেন বায়ার্ন মিউনিখের তারকা ফরোয়ার্ড সাদিও মানে। মাঠের ফুটবলে বিভিন্ন কীর্তির পাশাপাশি বাইরের বিভিন্ন মানবিক কাজ দিয়ে প্রায়ই আলোচনায় চলে আসেন তিনি। ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠানের রাতে জিতলেন সক্রেটিস পুরস্কার। ৩০ বছর বয়সী মানে নিজ গ্রাম বামবালিতে একটি হাসপাতাল তৈরি করে দিয়েছেন, বিভিন্ন স্কুলের খরচ যুগিয়ে অবদান রাখছেন। 

সোমবার রাতে ফ্রান্সের প্যারিসে জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সাদিও মানের হাতে তুলে দেওয়া হয় সক্রেটিস পুরস্কার। গত মৌসুমে লিভারপুলের হয়ে দারুণ পারফর্ম করা মানে এবার খেলছেন বায়ার্নের হয়ে। পুরস্কার পেয়ে নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে ভুলেননি সেনেগালের এই তারকা।  

তিনি বলেন, ‘আমি খুবই খুশি এখানে অতিথি হতে পেরে। মাঝে মাঝে আমি লজ্জা পাই। তবে মানুষের জন্য কিছু করতে পেরে আমি সত্যিই অনেক খুশি।’

বায়ার্ন মিউনিখে খেলা এই সেনেগালিজ ফরোয়ার্ডে শেকড় ভুলে যাননি। সুযোগ পেলেই ছুটে যান নিজ জন্মভূমিতে। এমনকি নিজের 'পিছিয়ে পড়া' গ্রামকে শহরে পরিণত করার কাজও শুরু করে দিয়েছেন তিনি।  

ফুটবল ক্যারিয়ারে যশ, খ্যাতি ও ধন-দৌলত সবই ধরা দিয়েছে মানের হাতে। পেয়েছেন অগণিত সাফল্য। কিন্তু মাঠের বাইরে তিনি একেবারেই সাধারণ জীবনযাপন করেন। প্রাপ্তিগুলোকে তিনি শুধু নিজের জন্য নয়, কাজে লাগান নিজ দেশ ও গ্রামের মানুষদের কল্যাণেও। নিজের আয়ের বড় একটা অংশ তাদের পেছনেই খরচ করেন তিনি। চ্যাম্পিয়নস লিগ ও আফ্রিকান ন্যাশন্স কাপজয়ী এই ফুটবলার নিজের গ্রামে হাসপাতাল, স্কুল, পোস্ট অফিস ও পেট্রোল স্টেশন নির্মাণ করে দিয়েছেন।  

বায়ার্নে যোগ দেওয়ার কিছুদিন আগে সেনেগালে গিয়েছিলেন মানে। সেখানে তিনি সাবেক প্রিমিয়ার লিগ তারকা পাপিস সিসে এবং এল-হাজী দিউফের সঙ্গে এক চ্যারিটি ম্যাচে অংশ নেন। সেখান থেকে একটি হাসপাতাল পরিদর্শনে যান তিনি। এই হাসপাতালটি নির্মাণের জন্য ২০২১ সালে ৪ লাখ ৫৫ হাজার পাউন্ড বা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫ কোটি ৯ লাখ টাকা দিয়েছেন মানে। হাসপাতালটিতে আশেপাশের প্রায় ৩৪ গ্রামের মানুষ চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করতে পারছেন। 

আরও পড়ুন: ২৪ বছর পর ব্যালন ডি’অর জিতলেন করিম বেনজেমা

নিজ গ্রাম বাম্বালিতে আড়াই লাখ পাউন্ড বা প্রায় ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা খরচ করে মাধ্যমিক স্কুল নির্মাণ করে দিয়েছেন মানে। ২ হাজার গ্রামবাসীর সুবিধার জন্য পোস্ট অফিস নির্মাণ করার কাজও শুরু করেছেন তিনি। এজন্য সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন সাবেক সাউদাম্পটন তারকা। এছাড়া গ্রামে একটি পেট্রোল পাম্পের উদ্বোধন করতেও দেখা গেছে তাকে। এছাড়া গ্রামে ফোর-জি ইন্টারনেট সুবিধার ব্যবস্থাও করে দিয়েছেন তিনি।

এখানেই শেষ নয়, নিজ গ্রামের প্রতি পরিবারকে মাসিক ৭০ মার্কিন ডলার (প্রায় ৬ হাজার ৩০০ টাকা) সমমূল্যের সহায়তা প্যাকেজের ব্যবস্থাও করেছেন মানে। ওই গ্রামের হাই স্কুলের সেরা শিক্ষার্থীদের ৪০০ মার্কিন ডলার (৩৬ হাজার টাকার বেশি) করে উপহারও দিয়েছেন তিনি।

আফ্রিকার সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের মধ্যে ফুটবলের প্রতি আগ্রহ তৈরিতেও তার ভূমিকা আছে। লিভারপুলে নিজের জার্সি তিনি কয়েক শ এতিম শিশুকে উপহার হিসেবে পাঠিয়েছিলেন আফ্রিকার দেশ মালাউইয়ে। ২০১৮ সালে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালের আগে নিজ গ্রাম তথা দক্ষিণ সেনেগালের বাম্বালি গ্রামে লিভারপুলের ৩০০ জার্সি উপহার হিসেবে পাঠিয়েছিলেন মানে। তার নামে সেনেগালে একটি ফুটবল স্টেডিয়ামও আছে।

এছাড়াও সামাজিক উন্নয়নে তার নানা উদরাতার প্রমাণ রয়েছে। যে কারণে ফ্রান্স ফুটবল তাকে সক্রেটিস পুরস্কার প্রদান করে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence