দুই প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন নেন স্কুল শিক্ষিকা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২২, ০২:৩২ PM , আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২২, ০২:৪৮ PM
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান এবং শিক্ষক হিসেবে দুই প্রতিষ্ঠান থেকে অনৈতিকভাবে সরকারি বেতন-ভাতা ভোগ করেন বরিশাল সদর উপজেলার রেহানা বেগম। এক যুগ ধরে উভয় পদের সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আসছেন এই নারী।
একই সঙ্গে সরকারি দুই পদে থেকে বেতন-ভাতা উঠানো আইনের পরিপন্থি। এ কারণে তার বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কেন্দ্রীয় দপ্তরে সুপারিশ করেছে দুদকের বরিশাল কর্তৃপক্ষ।
অভিযুক্ত রেহানা বেগম বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান। একই সঙ্গে উপজেলার মাধমিক বিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগের সহকারী শিক্ষকের পদেও রয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে সান্ধ্য কোর্স বন্ধ হচ্ছে না
বরিশাল দুদকের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল লতিফ হাওলাদার জানান, সম্প্রতি ভাইস চেয়ারম্যান রেহানার বিরুদ্ধে একটি তদন্ত প্রতিবেদন দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জমা পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, ২০০৯ সালে ভাইস চেয়ারমান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে দুই প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন-ভাতা নিচ্ছিলেন রেহানা বেগম। তার বিরুদ্ধে দুদক তৎপর হওয়ার পর এক বছর আগে তিনি উপজেলা পরিষদের সম্মানী নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। এ বিষয়ে তাকে দু'বার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন সদর ইউএনও। কিন্তু কোনো জবাব দেননি রেহানা বেগম।
সদর ইউএনও মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, রেহানা বেগম গত এক বছর ধরে উপজেলা পরিষদ থেকে সম্মানী নিচ্ছেন না। সবশেষ গত ২৯ ডিসেম্বর উপজেলা সমন্বয় কমিটির সভায় আমিও সম্মানী না নেওয়ার কারণ জানতে চাই। এ সময় ভাইস চেয়ারম্যান জানান তিনি আর সম্মানী নেবেন না। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে এক মাসের সময় দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: দুই বছর ধরে অচল ডাকসুর সিসি ক্যামেরা
সূত্রগুলো জানিয়েছে, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য রেহানা বেগম ২০০৮ সালের ১৭ নভেম্বর কাগাশুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদ থেকে এক বছরের জন্য ছুটি নেন। ২০০৯ সালের নির্বাচনে ভাইস চেয়ানম্যান নির্বাচিত হলে তিনি ২০০৮ সালের ২০ নভেম্বর থেকে ২০১১ সালের ২৭ জুলাই পর্যন্ত দুই বছর বিনা বেতনে ছুটি মঞ্জুর করান।
তবে তিনি দুই বছরে বিদ্যালয় থেকে দুই লাখ ১৪ হাজার ৫৯৬ টাকা বেতন-ভাতা উত্তোলন করেন। ভাইস চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায়ই রেহানা বেগম ২০১১ সালের ২৮ জুলাই বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। পরে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের উপজেলা নির্বাচনেও তিনি ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন। একই সঙ্গে তিনি বিদ্যালয়ের বেতন-ভাতা এবং উপজেলা পরিষদের সম্মানী ভোগ করেন।
আরও পড়ুন:কলেজে ৫ লাখ আসন ফাঁকা থাকবে
দুদকের তদন্তে জানা গেছে, ভাইস চেয়ারম্যান রেহানা বেগম বিদ্যালয় থেকে বেতন-ভাতা বাবদ ১৯ লাখ ৬৭ হাজার ১৭৩ টাকা এবং ২০১১-২০১৯ সাল পর্যন্ত উপজেলা পরিষদের তহবিল থেকে সম্মানী হিসাবে ১৯ লাখ ২০ হাজার ৪৬৮ টাকা উত্তোলন করেন।
তবে ওই শিক্ষকাকে দুই প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন তোলার বিষয়ে জানাতে চাওয়া তিনি বলেনি, 'আমি বৈধভাবেই দুই জায়গা থেকেই বেতন নিচ্ছি।'