‘অবৈধ’ প্রক্রিয়ায় ৭২ শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ 

এনটিআরসির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা করেননি ভিকারুননিসার সাবেক অধ্যক্ষ

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও ইনসেটে সাবেক অধ্যক্ষ কামরুন নাহার
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও ইনসেটে সাবেক অধ্যক্ষ কামরুন নাহার   © ফাইল ছবি

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) মাধ্যমে স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা না করে অবৈধ প্রক্রিয়ায় ৭২ জন শিক্ষক-কর্মচারীকে অস্থায়ী নিয়োগ দিয়েছিলেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ কামরুন নাহার। এ নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষিত হওয়ার প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ঘটনায় কামরুন নাহারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুদক।

সম্প্রতি দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১-এর সহকারী পরিচালক মো. রুহুল হক এ মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকালে এ ঘটনার সঙ্গে অন্য কারও  জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ থাকাকালে কামরুন নাহার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০১৬ সালের ২০ এপ্রিল জারি করা প্রজ্ঞাপনের আদেশ ভঙ্গ করে অবৈধ প্রক্রিয়ায় ৭২ জন শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ দেন। মন্ত্রণালয়ের এ আদেশ ভঙ্গ করে তিনি অসদাচরণ এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

দুদকের অনুসন্ধানের তথ্যে দেখা যায়, মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল-কোনও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অ্যাডহক কমিটি কোনও শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ করতে পারবে না। তারপরও কামরুন নাহার ২০২২ সালের ১১ জানুয়ারি স্কুলের অভ্যন্তরীণ নোটিস বোর্ডে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করেন এবং একক স্বাক্ষরে ৭২ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দেন।

এজাহারে বলা হয়, এই প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত বেশ কয়েকজন শিক্ষক অবসর গ্রহণের কারণে নতুন করে এনটিআরসির মাধ্যমে শূন্যপদে স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ থাকার পরও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অস্থায়ীভাবে। স্কুল ফান্ড থেকে এদের যাবতীয় বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়েছে। এই অস্থায়ী নিয়োগপ্রাপ্তদের অব্যাহতি প্রদান বা পরবর্তীকালে এনটিআরসির মাধ্যমে স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগের কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি কামরুন নাহার।

এজাহারে অভিযোগ, যাদের নিয়োগ করা হয়েছে, তাদের কোনও ধরনের লিখিত কিংবা মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। শুধু অল্প কয়েকজনের ‘ডেমোনেস্ট্রেশন ক্লাস’ নেওয়া হয়েছিল। স্কুলের শিক্ষকদের নিয়ে নামমাত্র একটি নিয়োগ কমিটি করা হয়। এই কমিটির মাধ্যমে শুধু প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ যাচাই করে অধ্যক্ষ কামরুন নাহার এসব নিয়োগ দিয়েছেন। এতে পরবর্তী সময়ে এসব শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন প্রদান নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়।

এর মাধ্যমে সাবেক অধ্যক্ষ শিক্ষক নিয়োগে মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা উপেক্ষা করেছেন অভিযোগ করে বলা হয়, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ একটি এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান হওয়ার পরও তিনি এনটিআরসির মাধ্যমে শূন্য পদে স্থায়ী নিয়োগ না দিয়ে, কোনও জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করে, কোনও লিখিত পরীক্ষা না নিয়ে অভ্যন্তরীণ শিক্ষকদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে শুধু শিক্ষাগত সনদ যাচাই করেন। এতে প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষার মানের ক্ষতি হয়েছে।

 

সর্বশেষ সংবাদ