ইরানের পরমাণু কর্মসূচি বহু বছর পিছিয়ে গেল: নেতানিয়াহুর ভিডিও বার্তা

বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু  © সংগৃহীত

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েলের বিমান হামলা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে বহু বছর পিছিয়ে দিয়েছে এবং আরও বড় ধাক্কা আসছে। নেতানিয়াহু একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আমরা আয়াতোল্লাহদের শাসনের প্রতিটি স্থান এবং লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানব, যা তারা এখন পর্যন্ত অনুভব করেছে তা সামনের দিনের আঘাতের তুলনায় কিছুই নয়।’ তিনি আরও জানান, সামরিক বাহিনী এখন ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির ক্ষমতা ধ্বংস করছে।

এদিকে সেমি-অফিশিয়াল সংবাদ সংস্থা মেহর এবং একাধিকর ইরানি মিডিয়ার বরাতে আল-জাজিরার  রিপোর্ট, ইসরায়েল ইরানের দক্ষিণ বুছেহর প্রদেশের সাউথ পার্স গ্যাস ফিল্ডে হামলা চালিয়েছে। বোমা হামলা করার পর সেখানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলেও জানা গণমাধ্যমটি।

আল-জাজিরার রিপোর্টে আরও বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এবং মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা স্পষ্টভাবে বলেছেন যে তাদের মূল লক্ষ্য এখন ইরানের বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। তারা ইরানের পাল্টা হামলার সক্ষমতা কমাতে চায়। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় অঞ্চলের আশেপাশে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা অর্থনৈতিক জীবনের ওপরও বড় ধাক্কা দিতে চান তারা।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মতে, ইরানে হওয়া অধিকাংশ বিমান হামলার লক্ষ্যই ছিল ইরানের পাল্টা হামলার সক্ষমতা ধ্বংস করা।

গত ১৩ জুন ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে ইরানের বিভিন্ন পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় সুনির্দিষ্ট বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। হামলার পর তেহরানজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ইরান এই হামলাকে আন্তর্জাতিক আইনের ঘোরতর লঙ্ঘন বলে অভিহিত করে। প্রতিশোধ নিতে ইরান ১৪ জুন রাতে প্রায় ১০০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ইসরায়েলের দিকে নিক্ষেপ করে। এই পাল্টা হামলায় জেরুজালেম ও তেল আবিবে ক্ষয়ক্ষতির খবর মিলেছে। তবে বেশিরভাগ ড্রোন প্রতিহত করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল।

 
ইরানের পাশে চার পরমানু শক্তিধর: ইরানের প্রতিবেশী ও মুসলিম পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র পাকিস্তান জানায়, ইসরায়েলের হামলা ইরানের ‘সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ডগত অখণ্ডতা লঙ্ঘন করেছে’। ইসলামাবাদ এটিকে জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী বলেও উল্লেখ করে। পাকিস্তান আগে থেকেই ইসরায়েলবিরোধী অবস্থানে থাকলেও এবার তা প্রকাশ্যে জোরালো হয়ে উঠেছে।

উত্তর কোরিয়া ও ইরানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই গোপন অস্ত্র ও প্রযুক্তি সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে, যেটা ওয়াশিংটনের উদ্বেগের বড় কারণ। উভয় দেশের অভিন্ন মিত্র রাশিয়া হওয়ায় পিয়ংইয়ংয়ের অবস্থান এবার তেহরানের দিকেই থাকার সম্ভাবনা বেশি। এর আগে একাধিকবার ইসরায়েলবিরোধী মনোভাব প্রকাশ করেছে উত্তর কোরিয়া।

চীনও এবার প্রকাশ্যে ইসরায়েলবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। জাতিসংঘে চীনের রাষ্ট্রদূত গেং শুয়াং এক বিবৃতিতে বলেছেন, ইসরায়েল ইরানের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার প্রতি অগ্রাহ্য করেছে। এটি একটি রেডলাইন অতিক্রম করেছে। চীনের হাতে থাকা পরমাণু শক্তিও আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে এখন বড় ‘ডিটারেন্ট’ হিসেবে কাজ করছে।

ইরানের ঘনিষ্ঠ মিত্র রাশিয়া এই হামলার কড়া সমালোচনা করেছে। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়াবে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। উল্লেখ্য, পরমাণু অস্ত্র ও ভূরাজনৈতিক ইস্যুতে দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুতিনের রোষানলে পড়া ইসরায়েল-আমেরিকার জন্য বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence