বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষক, ক্লাস নেয় পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী

সিদ্ধান্ত মালতিবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস নিচ্ছে পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী
সিদ্ধান্ত মালতিবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস নিচ্ছে পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী  © সংগৃহীত

উলিপুর উপজেলার সিদ্ধান্ত মালতিবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা ১০৪ জন। তাদের জন্য শিক্ষক আছেন মাত্র মাত্র একজন। দোতলা ভবন, চেয়ার, বেঞ্চ, শ্রেণিকক্ষসহ সব সুযোগ-সুবিধা থাকলেও ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। দুই শিক্ষককে একসঙ্গে বদলি করায় এ অবস্থা বিদ্যালয়টির।

একজন শিক্ষক বিদ্যালয়টিতে পাঠদান করাতে হিমশিম খাচ্ছেন। পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী হরি প্রিয়া রায় ক্লাস নিচ্ছিল তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির। তার কথায়, ‘আপা একা কী করবে? তাই ক্লাস নিচ্ছি। শিক্ষক না থাকায় পড়ার খুব ক্ষতি হচ্ছে। এটাকে কি স্কুল বলে?’

অনিয়মের অভিযোগ ও দুই শিক্ষকের মধ্যে দ্বন্দ্বে বিদ্যালয়টির এ অবস্থা বলে জানা গেছে। কথাগুলো আয়েশা বেগম নামে এক অভিভাবকের ভাষ্য ‘ইস্কুলে স্যার নাই, ক্লাস হয় না। ছাওয়া পাঠায় কী লাভ? হামরা গরিব মানুষ। সংসারের কাজ করলে অনেক উপকার হয়।’

জানা গেছে, ১৯৮৯ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। সাত পদের বিপরীতে দীর্ঘদিন প্রধান শিক্ষকসহ চার শিক্ষকের পদ শূন্য ছিল। তিনজন শিক্ষক ছিলেন। গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মালারানী ও সহকারী শিক্ষক বিলকিচ জাহানকে বদলি করা হয়। একমাত্র শিক্ষক তামান্না ফেরদৌসী পাঠদান করছেন।

শিক্ষক তামান্না জানান, তিনি একা বিদ্যালয় চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের এক কক্ষে বসিয়ে পাঠদান করেন। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ক্লাস পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের দিয়ে করাচ্ছেন। বিদ্যালয় খোলা ও বন্ধসহ পিয়নের কাজও তাঁকেই করতে হয়। বিষয়টি শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানিয়েও লাভ হয়নি।

শিক্ষার্থী রাসেল মিয়া ও আইরিন আক্তারের কথা, শিক্ষক না থাকায় ক্লাস হয় না। ফলে বাবা-মা আসতে দেয় না। অন্য জায়গায় ভর্তি করতে চায়। তবে কান্নাকাটি করে তারা স্কুলে এসেছে। দ্বিতীয় শ্রেণির আপন জুয়েল জানায়, স্কুলে ক্লাস হয় না। খেলাধুলা করে বাড়ি চলে যায় সবাই।

আরো পড়ুন: এটিও পদে নিয়োগ জটিলতা কাটছে, সভা বুধবার

বদলি হওয়া ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মালারানীর বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ দিয়েছেন জানিয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাফিজুর রহমান বলেন, কর্তৃপক্ষ তদন্ত না করে বদলি করেছে দু’জনকে। শিক্ষক না থাকায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আমির হোসেন বলেন, শিক্ষক মালারানী ও বিলকিচ জাহানের মধ্যে বিবাদ চলছিল। কমিটি ও স্থানীয়দের মাধ্যমে মীমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে দুই শিক্ষককে সংযুক্তি বদলির প্রস্তাব দেন।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নবেজ উদ্দিন সরকার বলেন, দুই শিক্ষকের বিরোধ নিরসন ও শিক্ষার পরিবেশ ফেরাতে তাদের সংযুক্তি বদলি করা হয়েছে। শিগগিরই নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence