দেশে প্রতিষ্ঠিত হওয়া কঠিন দেখে স্কলারশিপ নিয়ে জার্মানিতে চলে এসেছি

শাহজালাল শুভ
শাহজালাল শুভ  © সংগৃহীত

বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ দেশের সিংহভাগ শিক্ষার্থীর স্বপ্ন। স্বপ্ন হবে না কেন? দেশ থেকে বিদেশে উচ্চশিক্ষা কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনের সহজ পথ। অন্যান্য অনেক দেশের মতো বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাও বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য বাহিরের দেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় আবেদন করে থাকেন। এই উচ্চশিক্ষা গ্রহণে স্কলারশিপ নিয়ে জার্মানিতে যাওয়ার জন্য যা করতে হবে, তা তুলে ধরছি আমি শাহজালাল শুভ—

বিদেশে উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন মোটামুটি বাংলাদেশের সব শিক্ষার্থীরি থাকে এবং আমিও এর ব্যাতিক্রম না। তাছাড়া অনার্স পাশ করার পর যখন দেখলাম নিজ দেশে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা অনেক কঠিন তখন সিদ্ধান্ত নিলাম জার্মানিতে উচ্চ শিক্ষার জন্য চলে যাওয়ার। 

সেই অনুযায়ী ২০২১ সাল থেকে আমি চেষ্টা শুরু করি। প্রথমেই জেনে রাখা ভালো যে জার্মান এম্বাসি(বাংলাদেশ) এর বর্তমান ওয়েটিং টাইম প্রায় ২০ মাস তাই সর্বপ্রথম পাসপোর্ট তৈরি করি এবং সেই তথ্য অনুযায়ী এম্বাসির এপয়েন্টমেন্ট নেয়া শুরু করি। শুরুতে এই জার্নিটা কঠিন মনে হলেও পরবর্তীতে বুঝতে পারলাম এটা তেমন কোনো কঠিন কাজ নয়। 

এপয়েন্টমেন্ট কনফার্ম হওয়ার পরে আইইএলটিএস এর প্রিপারেশন নেই এবং পরীক্ষা দেই। প্রয়োজনীয় স্কোর পাওয়ার পরে ভার্সিটি গুলোতে এপ্লাই করি। জার্মানিতে বছরে দুই সেমিস্টার এবং যেকেউ শুধুমাত্র এই দুই সেমিস্টারে (উইন্টার ও সামার) এপ্লাই করতে পারে। আমি উইন্টারে এপ্লাই করার পরে অফার লেটার পেলাম এবং সেখানে এনরোল্ড (ভর্তি) হয়ে গেলাম। তার কয়েক মাস পরে যখন এম্বাসির এপয়েন্টমেন্ট কাছাকাছি চলে আসলো তখন হেলথ ইনসুরেন্স এবং ব্লক মানি অর্থাৎ ব্যাংক স্টেটমেন্ট (প্রায় ১১৪০০ ইউরো) রেডি করে ফেললাম।

তবে ডলার ক্রাইসিসের জন্য ব্লক মানি রেডি করতে খুব ঝামেলায় পড়তে হয়েছিলো। এরপর সকল কাগজপত্র রেডি করে এম্বাসিতে পাঠানোর অনুমতি অর্থাৎ ডমুমেন্ট সাবমিশনের জন্য প্রহর গুনতে শুরু করি এর কিছুদিন পরে অনুমতি পাওয়ার সাথে সাথে ডকুমেন্টস সাবমিট করে দিলাম।

এবার শুরু হলো ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্য অপেক্ষা। পরবর্তীতে একদিন ইন্টারভিউ দেওয়ার তারিখ পেলাম এবং সেই অনুযায়ী সকল ডকুমেন্টস সহকারে যথাসময়ে এম্বাসিতে একরাশ ভয়ের সহিত উপস্থিত হলাম। ঠিকঠাক মত ইন্টারভিউ দিলাম।

এবার শুরু হলো ফাইনাল অপেক্ষার পালা অর্থাৎ উনারা আমাকে ৪-৬ সপ্তাহের মধ্যেই উনাদের সিদ্ধান্ত জানাবে যে আমি ভিসা পাবো কিনা। 

অবশেষে এলো সেই মহেন্দ্রক্ষন, বহুল প্রতিক্ষার পাসপোর্ট কালেকশন মেইল। যথারীতি পাসপোর্ট কালেকশন করতে গেলাম এবং দেখলাম উনারা আমাকে ১ বছরের ভিসার অনুমোদন দিয়েছে। সেই মোতাবেক সব গোজগাজ করে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে প্রিয় মাতৃভূমি ছেড়ে স্বপ্নের জার্মানিতে পাড়ি জমালাম।

লেখক: শিক্ষার্থী, শাহজালাল শুভ, হোকশুলে ব্রিমেন সিটি ইউনিভার্সিটি অব এপ্লাইড সাইন্স, জার্মানী


সর্বশেষ সংবাদ