লক্কড়-ঝক্কড় বাসে ভোগান্তিতে কুবি শিক্ষার্থীরা
- হাছান আল মাহমুদ
- প্রকাশ: ০৮ আগস্ট ২০২২, ০৫:০৮ PM , আপডেট: ০৮ আগস্ট ২০২২, ০৫:০৮ PM

‘‘সকাল সাড়ে ৮টায় শহরের পুলিশ লাইন থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে ছেড়ে আসা একটি বাস রাস্তার উপর নষ্ট হয়ে যায়। ফলে রাস্তায় জ্যাম লেগে যায়। রাস্তার লোকজন বিভিন্নভাবে স্লেজিং করা শুরু করে আমাদের। এক পর্যায়ে উপায়ন্তর না দেখে আমরা হাত দিয়ে ধাক্কা দিয়েই গাড়ি সরানোর চেষ্টা করি।’’
এভাবেই বাস নিয়ে ভোগান্তির বর্ণনা দিচ্ছিলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইশতিয়াক আহমেদ। এরকম ঘটনা আজই প্রথম নয়। প্রতিনিয়তই এমন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। বাসের এ সমস্যার কারণে অনেক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে সময় মতো এসে ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ভাড়ায় চালিত বিআরটিসির বাসগুলোর অধিকাংশই ফিটনেসবিহীন। রয়েছে ব্রেকিংয়ের সমস্যাও। যার কারণে বিভিন্ন সময়ে ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
অভিযোগ রয়েছে গাড়িগুলো অনেক পুরোনো হওয়ায় প্রায়ই রাস্তার উপর নষ্ট হয়ে যায়। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাদের।
আরও পড়ুন: নিজে চালিয়ে বাস উদ্বোধন করলেন কুবি উপাচার্য (ভিডিও)
তবে পরিবহন পুলের সেকশন অফিসার মো. জাহিদুল আলম বলেন, বাস রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়ার কারণ বাসের ফিটনেস নয়; বরং বাস ড্রাইভারদের অবহেলা। প্রতিদিন ১০ ইউনিট গ্যাস ভর্তি করার কথা থাকলেও তারা এক থেকে দুই ইউনিট কম ভর্তি করেন। ফলে বাস রাস্তায় দাড়িয়ে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব ৮টি বাস ও ভাড়ায় চালিত ৯টি বিআরটিসির বাস রয়েছে। বিআরটিসির বাসগুলোরগুলোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রতিদিন ভাড়া গুনতে হয় প্রায় ৮০-৯০ হাজার টাকা। মাস শেষে এই পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ২০ লাখ টাকার মত।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, এত টাকা ভাড়া পরিশোধ করেও এমন নিম্নমানের সার্ভিস সন্তোষজনক নয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাইলে এর পরিবর্তে নতুন বাস কিনে পরিবহন সমস্যার সমাধান করতে পারে।
বাসের তত্ত্বাবধানের জন্য ইঞ্জিনিয়ার দপ্তরের আবুল হোসেন নামে একজনকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। তিনি জানান, ইঞ্জিনিয়ার দপ্তরের কাজ করে আসলে ওইদিকে সময় দেয়া সম্ভব হয় না।
পরিবহন কমিটির উপদেষ্টা ও আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মু. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, শিক্ষার্থীদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে তাহলে ফেসবুকে লেখালেখি না করে আমাদের জানাবে। এতে আমাদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সুবিধা হয়। শিক্ষার্থীরা চাইলে বিআরটিসির কাছেও অভিযোগগুলো জানাতে পারেন।
বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ড. এ. এফ. এম. আবদুল মঈন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, যারা এ ব্যাপারে দায়িত্বে আছেন; তাদের সঙ্গে কথা বলে দেখবো যে আসলে কি অবস্থা। আর তারা যদি আমাকে না জানায় তাহলে তো আমি কিছুই করতে পারবো না।