ক্যাম্পাসে শূন্যতা, অতিথি পাখিতে মুখর ইবি

  © ফাইল ফটো

মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ও স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ক্যাম্পাস। প্রতি বছর শীতে এই ক্যাম্পাস মুখরিত হয় হরেক রকমের অতিথি পাখির আগমনে।

প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও শুধু উষ্ণতা ও খাবারের সন্ধানে হাজারের ও বেশি মাইল পাড়ি দিয়ে বিভিন্ন রকমের অতিথি পাখিদের মেলা বসেছে ইসলামী বিশ্ববদ্যালয় ক্যাম্পাসে। করোনার মধ্যে প্রকৃতি হয়েছে আরও সবুজ, ফুলগুলো হয়েছে আরও বর্ণিল। শিক্ষার্থীশূন্য শুনশান নিরব ক্যাম্পাসে অতিথি পাখির আগমনে যেনো নিরবতা ভেঙেছে।

হেমন্তের বিদায়ে কুয়াশার চাদর মুড়িয়ে প্রকৃতিতে আসে শীত। ষড়ঋতুর দেশ শস্য-শ্যামল সুবজে ঘেরা অপরুপ বাংলাদেশ। ষড়ঋতুর দেশ মানেই ভারি শীত প্রধান দেশগুলোর জন্য উষ্ণতা। তাই তুষারপাতে টিকতে না পারা পাখিদের আগমন ঘটে বাংলাদেশের মতো নাশীতাঞ্ষ অঞ্চলে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়নাভিরাম মফিজ লেক ও প্রকৌশল ভবনের পিছনের পুকুরে এসব পাখি বাসা বেঁধেছে। এসব পাখির মধ্যে সরালি হাঁস, ল্যাঞ্জা হাঁস, খুনতে হাঁস, বালি হাঁস, মানিকজোর প্রভৃতি রয়েছে। তবে এদের মোধ্যে সরালি হাঁস উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দেখা যাচ্ছে।

এরা জলাশয়ের পাড়ে অনেক সরালি ঝাঁক বেঁধে উড়ছে সাই সাই করে। আবার পরক্ষণেই ঝপাৎ করে বসে যাচ্ছে জলাধারে। কোনোটি আবার সাঁতার কাটছে আপন মনে। এসব পাখিদের ডানা মলে ঝাপটা- ঝাপটি, খুনসুটি ও কলকাকলিতে মুখরিত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।

ইতোমধ্যেই এসব অতিথি পাখিগুলোর নিরাপদ বাসস্থান নিশ্চিত করতে জলাশয়গুলোকে অভায়রণ্য ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ। এছাড়া জনসচেতনতামূলক নির্দেশিকা টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব অতিথি পাখিগুলো আবার মার্চের শেষদিকে ফিরে যায় আপন ঠিকানায়।

এ অতিথি পাখি পরিবেশের জন্য উপকারও বটে। সৌন্দর্যই শুধু নয়, প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখার জন্যেও পাখিদের বাঁচিয়ে রাখার প্রয়োজন আছে। পাখি হলো প্রকৃতির কীটনাশক। পাখির সংখ্যা কমে গেলে কীটপতঙ্গের অত্যাচারে অসম্ভব হয়ে পড়বে ফসল ফলানো। সেটিই যদি হয়, তাহলে নির্ভর করতেই হবে কীটনাশকের উপর। কিন্তু এটি তো পরিবেশের জন্যে খুবই ক্ষতিকর। কাজেই পাখি ঘাটতি অবশ্যই উদ্বেগের ব্যাপার। তাই এব পাখিদের নিরাপদ বাসস্থান নিশ্চিত করতে হবে।

ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সাখাওয়াত হোসেন শান্ত বলেন, সারা দেশে যখন অনেক দেশি প্রজাতির পাখি বিলুপ্তির পথে, ঠিক তখন তাদের দেখা মেলে পাখিদের অভয়ারণ্য মফিজ লেকে। পাখিরা তাদের অস্তিত্ব ধরে রাখতে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে উড়ে আসে এখানে ভিড় জমায়। সেই সাথে পাখিদের দেখতে বাড়ছে পাখিপ্রেমী দর্শনার্থীদের ভিড়।

ক্যাম্পাসে থাকলে হয়ত এসব পাখির কলকাকলিতে ঘুম ভাঙত শিক্ষার্থীদের। বিকাল হলে শিক্ষার্থীদের ভীড় ও পাখির কলকাকলি এক অন্যরকম অনুভূতি সৃষ্টি হয়। যেটা সবাই বাড়িতে বসে আক্ষেপ করছে।

এ অতিথি পাখির কিচিরমিচিরে ঘুম ভাঙতো শিক্ষার্থীদের। কিন্তু করোনার কারণে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় বাড়িতে অবস্থান করছে তারা। মহামারী প্রাণঘাতী করোনামুক্ত নতুন ভোরের সূর্য উদিত হোক। করোনামুক্ত সেই সোনালি দিনের অপেক্ষায় শিক্ষার্থীরা।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence