সাহিত্য চর্চা সমাজ ও রাষ্ট্রকে আলোকিত করে: চবি উপাচার্য

স্মারক বক্তৃতা প্রদানের সময় আমন্ত্রিত অতিথি
স্মারক বক্তৃতা প্রদানের সময় আমন্ত্রিত অতিথি  © টিডিসি ফটো

চট্টগ্রামের কৃতি সন্তান, কবি, সাহিত্যিক অশোক বড়ুয়া স্মরণে প্রবর্তিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের উদ্যোগে ‘সাহিত্যিক অশোক বড়ুয়া দ্বিতীয় স্মারক বক্তৃতা-২০১৯’ চবি ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ মিলনায়তনে সকাল সাড়ে ১০টায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ভাষণ দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। এতে ‘সমাজ প্রগতিতে শিল্পসাহিত্যের ভূমিকা’ শিরোনামে স্মারক বক্তৃতা প্রদান করেন বিশিষ্ট কথা-সাহিত্যিক, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান জনাব সেলিনা হোসেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চবি মাননীয় উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার। চবি বাংলা বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মহীবুল আজিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন প্রয়াত সাহিত্যিক অশোক বড়ুয়ার সুযোগ্য পুত্র চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন কৃতি ছাত্র মহামান্য রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের মাননীয় সচিব চবি সিন্ডিকেট সদস্য জনাব সম্পদ বড়ুয়া।

উপাচার্য তাঁর ভাষণে একজন গুণী কবি, সাহিত্যিক প্রয়াত অশোক বড়ুয়ার নামে প্রবর্তিত ‘সাহিত্যিক অশোক বড়ুয়া স্মারক দ্বিতীয় বক্তৃতা’ আয়োজন করায় আয়োজকবৃন্দকে স্বাগত ও আন্তরিক শুভেচ্ছা-অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, সাহিত্যিক অশোক বড়ুয়া ছিলেন বীর চট্টলার একজন খ্যাতিমান গুণী কবি ও প্রতিথযশা সাহিত্যিক। মাননীয় উপাচার্য এ সাহিত্যিকের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বলেন, শিক্ষার এমন কোনো শাখা নেই যেখানে সাহিত্য-সংস্কৃতির অবাধ বিচরণ নেই। সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার ফলে সমাজ ও রাষ্ট্র আলোকিত হয় এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

উপাচার্য আরও বলেন, শিল্প-সাহিত্য চর্চা মানুষের মেধা, মনন ও প্রজ্ঞাকে শাণিত করে। সমাজ থেকে অন্ধকার দূর করতে সাহিত্য চর্চার রয়েছে অনন্য ভূমিকা। প্রকৃতঅর্থে সাহিত্যপ্রেমি সমাজে কোনো রকম কুসংস্কার ও অন্ধকার থাকতে পারে না। মাননীয় উপাচার্য তরুণ প্রজন্মকে পড়ালেখার পাশাপাশি সমাজ প্রগতিতে শিল্প-সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে নিজেদের জ্ঞানকে বিকশিত করে সুন্দর, নির্মল, আলোকিত সমাজ প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালনের আহবান জানান। মাননীয় উপাচার্য আজকের স্মারক বক্তৃতার সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

স্মারক বক্তা জনাব সেলিনা হোসেন তাঁর ভাষণের শুরুতে সাহিত্যিক অশোক বড়ুয়ার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি পাহাড়ঘেরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অতি প্রাচীনতম বিভাগ বাংলা বিভাগের উদ্যোগে এ প্রতিথযশা সাহিত্যিক প্রয়াত অশোক বড়ুয়ার দ্বিতীয় স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তা হিসেবে উপস্থিত হতে পেরে নিজেকে গৌরবান্বিত মনে করেন তিনি। বলেন, সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় অশোক বড়ুয়ার ছিল অবাধ বিচরণ। বিচিত্র অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ হওয়ার কারণে তাঁর রচনায় যুক্ত হয়েছে গভীর জীবনবোধ, আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি, বিষয়ের বৈচিত্র্য এবং সর্বোপরি অনন্য স্বাতন্ত্র্যবোধ। শিল্প-সাহিত্য মানুষের চেতনাগত বিন্যাসকে ধারণ করে বলেই শিল্প-সাহিত্য মানবসভ্যতার স্থায়ী সম্পদ। এ সম্পদকে প্রজন্মের মাঝে সঞ্চারিত করার জন্য তিনি শিক্ষক-গবেষকদের আহবান জানান।

অনুষ্ঠানে চবি সিন্ডিকেট সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ, শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ, বিভাগীয় সভাপতি, ইনস্টিটিউট ও গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালকবৃন্দ, শিক্ষক-গবেষকবৃন্দ, অতিথিবৃন্দ এবং বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। স্মারক বক্তা জনাব সেলিনা হোসেনের জীবনী পাঠ করেন চবি বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শেখ সাদী। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন বাংলা বিভাগের এমএ শিক্ষার্থী উমে সিং মারমা।


সর্বশেষ সংবাদ