৫ মাসে তিনবার আবেদন, তবু সাড়া মেলেনি উপাচার্যের—অবশেষে ক্যান্সারে মারা গেলেন সেই শিক্ষার্থী
- ববি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৫, ১২:৪৭ AM , আপডেট: ২২ জুন ২০২৫, ০৩:২১ PM

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী জেবুন্নেসা হক জিমি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। মৃত্যুর আগে টানা পাঁচ মাস ধরে উপাচার্যের কাছে তিনবার আর্থিক সহায়তার আবেদন করেও কোনো সাড়া পাননি তিনি। অভিযোগ উঠেছে, বরাবরের মতো আবেদন গ্রহণ করলেও তা নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেননি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন।
গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর জিমির চিকিৎসার জন্য উপাচার্যের দপ্তরে প্রথম আবেদনটি জমা দেওয়া হয়। সহপাঠীরা জানান, সেই আবেদন গ্রহণ করা হলেও পরে তা ‘হারিয়ে গেছে’ বলে জানায় দপ্তর। এরপর তারা দ্বিতীয় এবং তৃতীয় দফায় একই আবেদন পুনরায় জমা দেন। কিন্তু প্রতিবারই তারা ফিরেছেন নিরাশ হয়ে। সর্বশেষ আবেদনটি জমা দেওয়া হয়েছিল মৃত্যুর মাত্র ১৫ দিন আগে। উপাচার্যের পক্ষ থেকে তখনও কোনো সাড়া মেলেনি।
জিমির এক সহপাঠী রবিউল ইসলাম বলেন, প্রায় পাঁচ মাস কেটে গেলেও উপাচার্য আমাদের আবেদনের একবারও উত্তর দেননি। আবেদন করার পর প্রতিবারই বলা হয়েছে কাগজ হারিয়ে গেছে, আবার জমা দিন। আমরা তিনবার জমা দিয়েছি, কিন্তু কোনো প্রতিক্রিয়া পাইনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা শহিদুল ইসলাম শাহেদ ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, জিমি আপুর হায়াত ছিল না তাই চলে গেছেন, কিন্তু আমাদেরকে দেখিয়ে দিয়ে গেছেন যে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় আজ কতটা অনিরাপদ আর অভিভাবকহীন। পাঁচ মাস ধরে আবেদনপত্র উপাচার্যের টেবিলে পড়ে থেকেছে, তিনি একবারও খুলে দেখেননি!
জিমির বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আব্দুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, আমরা বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মিলে জিমিকে ব্যক্তিগতভাবে সহায়তা করেছি। পরে উপাচার্যের বরাবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে সহায়তার জন্য আবেদন জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু সেটার কোনো আপডেট আর আমাদের জানানো হয়নি।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এদিকে জীবনের শেষ মুহূর্তে ন্যূনতম সহায়তা চেয়ে উপাচার্যের দপ্তরে একাধিকবার আবেদন করেও কোনো সহানুভূতি না পাওয়ার ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছেন সহপাঠীরা।