বেরোবির নাম ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’ করার দাবি

বেরোবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংবাদ সম্মেলন
বেরোবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংবাদ সম্মেলন  © টিডিসি

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) নাম পরিবর্তন করে প্রতিষ্ঠাকালীন ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’ নাম পুনর্বহালের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন বেরোবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে সংবাদ সম্মেলন করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেরোবে শিক্ষার্থীরা।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা জানান, রংপুরের মানুষের দীর্ঘ আন্দোলনের ফসল ছিল ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’। ২০০৮ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় নামে এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিল। পরে শেখ হাসিনা নিজেকে প্রতিষ্ঠাতা দাবি করতে ২০০৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টির নামফলক ও নাম পরিবর্তন করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) করেন। অথচ বেগম রোকেয়া সরকারি কলেজ নামে নগরীতে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, যা ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত। এ ছাড়া বেগম রোকেয়ার নামে পায়রাবন্দে একটি সরকারি কলেজ, একটি হাইস্কুল ও নগরীতে একটি বালিকা বিদ্যালয়ও রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পুনর্বহাল এবং শেখ হাসিনার নামে প্রতিষ্ঠিত একটি হলের নাম পরিবর্তন করে বেগম রোকেয়া হল করার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।ি

ছাত্র আন্দোলনের বেরোবি প্রতিনিধি মো. শামসুর রহমান সুমন বলেন, “পরিবর্তন নয়, চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’ নামটির পুনর্বহাল’। বিগত সরকার আমলের ফ্যাসিস্ট নীতি ছিল গণবিরোধী ও জনতার মনোবাঞ্ছাকে উপেক্ষা করার নীতি। সেই নীতির একটুও এদিক-সেদিক হয়নি রংপুরের মানুষ তথা আমাদের রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের সময়ে। রংপুরের মানুষের দীর্ঘ আন্দোলনের ফসল ছিল রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে (বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়) একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সেই অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করে।’

আরও পড়ুন: উচ্চশিক্ষায় ভর্তি: উঠে যাচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা ও পোষ্য কোটা!

তিনি বলেন, ‘বিভাগীয় শহরে প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় নামটি যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে। কিন্তু তৎকালীন ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন, নামফলক ও নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা দাবি করতে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিশ্ববিদ্যালের নাম পরিবর্তন করে মহীয়সী নারী ‘বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের’ নামটি নামমাত্র ব্যবহার করে, যার কোনো যৌক্তিকতা সে সময় ছিল না, বরং বেগম রোকেয়ার নামে বিশেষায়িত কোন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা যেত। কেননা, রংপুর শহরে (অর্থাৎ ৫ কিমির মধ্যে) ইতোমধ্যে আরেকটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠান (বেগম রোকেয়া সরকারি মহিলা কলেজ), যা আমাদের প্রতিষ্ঠানের সমমান (স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর) রয়েছে যেটি বেগম রোকেয়াকে ধারণ করে অর্ধশতকেরও বেশি সময় ধরে নারীদের উচ্চ শিক্ষায় অবদান রেখে চলছে, যা ১৯৬৩ সালে মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়ার নামে প্রতিষ্ঠিত ও তার প্রতিকৃতিও রয়েছে সেখানে। ফলশ্রুতিতে একই নামের পাশাপাশি দুটি সমমানের প্রতিষ্ঠান হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা পরিচয়দানে অস্বস্তিতে ভোগা শুরু করে।’

সংবাদ সম্মেলনে শামসুর রহমান  বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকার (ফ্যাসিজমের দুরদর্শিতা ও রাজনৈতিক চাতুরতার) সঙ্গে পরিবর্তিত নাম মহীয়সী রোকেয়ার নামে করেন, যাতে নাম পরিবর্তন নিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলে নারীবিদ্বেষীসহ নানা ট্যাগ লাগিয়ে সহজে কণ্ঠরোধ করা যায়। আওয়ামী স্বৈরাচারের শাসনামলেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পুনর্বহালের দাবি উঠলে তখন নানা ট্যাগ দিয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দমিয়ে রাখা হয়।’

আরও পড়ুন: সাত কলেজে ভর্তি: মন্ত্রণালয়-ইউজিসির সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ঢাবি

তিনি আরও বলেন, ২০১৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার তথা শেখ হাসিনা যখন রংপুরে একটি রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় নামে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় অনুমদনের সিদ্ধান্ত নেয়, তখন আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তারা বাধা দেন। পরে আন্দলনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে গণস্বাক্ষর আয়োজন করে ওই (রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়) নাম ব্যবহারের বিপক্ষে পরে ছাত্রদের কঠোর আন্দলনের মুখে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বাধ্য হয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও সরকার। রংপুরের পাবলিক বিশ^বিদ্যালয়টি সেই অঞ্চলের নামে প্রতিষ্ঠা পেলেও আওয়ামী লীগ সেটি অত্যান্ত সুচতুরতার সহিত পরিবর্তন করে। বিগত আওয়ামী স্বৈরাচার সরকারের সময়ে বড় বৈষম্যর শিকার উত্তরের বাতিঘর খ্যাত এই বিশ্ববিদ্যালয়।’

এ বিষয়ে উপাচার্য ড. শওকাত আলী বলেন, ‘এ বিষয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা কে অবগত করা হয়েছে। তিনি বিষয়টাকে পজেটিভলি দেখেছেন।  প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরাও চাই নাম পরিবর্তন হোক।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence