বেরোবির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আবু সাঈদের বিভাগের নীরব ভূমিকা

বেরোবির ইংরেজি বিভাগ
বেরোবির ইংরেজি বিভাগ  © টিডিসি

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বিশ্ববিদ্যালয়টির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের বিভাগের নীরব ভূমিকা দেখে অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (১২ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সব বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ব্যানার নিয়ে আনন্দ-উল্লাসের সঙ্গে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করলেও দেখা মেলেনি আবু সাঈদের বিভাগের শিক্ষকদের (একজন শিক্ষক ছাড়া)। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের  শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে নানা গুঞ্জন ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

ইংরেজি বিভাগের ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী কাজল বলেন, ‘আজ (১২ অক্টোবর) প্রিয় ক্যাম্পাসের ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। দিনটি সবাই উদযাপন করছে। প্রতিটি বিভাগ তাদের নিজস্ব ব্যানার নিয়ে র‍্যালিতে অংশগ্রহণ করে। এখানে ব্যতিক্রম ইংরেজি বিভাগ। আমাদের বিভাগের নিজস্ব কোনো ব্যানার এ র‍্যালিতে দেখা যায়নি। বিষয়টি হতাশাজনক। এই ছোট বিষয়গুলো নিয়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সচেতন হওয়া উচিত। আমাদের হাজারো ভালো কাজের মধ্যে এসব বিষয় বাহ্যিকভাবে চোখে পড়ে এবং দৃষ্টিকটু লাগে।’

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী রেজোয়ান বলেন, ‘আমাদের বিভাগের শিক্ষকরা আবু সাঈদ হত্যার শুরু থেকেই প্রহসন রচনা করে আসছেন। সরকার পতনের আগে তারা বিভাগের সামনে আবু সাঈদের অকাল মৃত্যুর কথা উল্লেখ্য করে ব্যানার টাঙিয়ে দিয়েছিলেন। আজ (১২ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে কলা অনুষদের অধীন ইংরেজি বিভাগ ব্যানার নিয়ে সামনে থাকার কথা ছিল, কিন্তু সামনে থাকো তো দূরে থাক ইংরেজি বিভাগের পক্ষ থেকে একটা ব্যানার পর্যন্ত তৈরি করা হয়নি।  অন্যান্য বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আনন্দ ও উল্লাসের সঙ্গে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অংশগ্রহণ করলেও আমাদের বিভাগের পক্ষ থেকে কোনো কিছু আয়োজন করা হয়নি।’

এদিকে আবাসিক হলে শিক্ষার্থীরা হলের প্রভোস্ট বডিকে দায়ী করে বলেন, ‘আমরা খুবই ব্যথিত যে গত বিশ্ববিদ্যালয় দিবসগুলোতে বেরোবির তিনটি হলে খাবারের ব্যবস্থা করা হতো প্রশাসন থেকে, কিন্তু এবার সেই ব্যবস্থা করা হয়নি। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। গত যে কোনো কর্মসূচিতে আমরা দেখেছি, ক্যাম্পাসের পাশাপাশি আমাদের হলগুলো খুব সুন্দরভাবে আলেকসজ্জা করা হতো, কিন্তু এবার আমরা সেটা থেকেও বঞ্চিত। এখন হলগুলোয় খুব কমসংখ্যক শিক্ষার্থী অবস্থান করছে, সেই দিক থেকে হলে শিক্ষার্থীদের খাওয়ার ব্যবস্থা করতে খুব একটা বেশি বাজেটও লাগত না।’ 

আরও পড়ুন: পুলিশের গুলিতে বেরোবি ছাত্র সাঈদের মৃত্যুর কথা উল্লেখ নেই এফআইআরে

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেরোবি প্রতিনিধি ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ইংরেজি বিভাগের অংশগ্রহণ ছিল। শুধু ব্যানারটা ছিল না। এ জন্যই এই অবস্থা। র‍্যালিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছিলেন। বিভাগীয় প্রধান ছুটিতে ছিলেন। তাই অন্য শিক্ষক নির্দেশনা দিয়েছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেওয়া জিনিসপত্র সংগ্রহ করে র‍্যালিতে অংশগ্রহণ করার। প্রাথমিকভাবে সম্ভবত ব্যানারও দেওয়ার কথা ছিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, শিক্ষকরা তাই জানতেন। কিন্তু যে জিনিসপত্র সংগ্রহ করেছে সে শিক্ষককে জানায়নি, ব্যানার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেয়নি। সকালে র‍্যালিতে এসে এটা নিয়ে যখন যোগাযোগ করা হয়, তখন আর কিছু করা সম্ভব হয়নি।

তবে শিক্ষকদের উপস্থিতি বিষয়ে তিনি বলেন, শিক্ষকদের মধ্যে শুধু ইমরানা বারী ম্যাম উপস্থিত ছিলেন ।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মো. ফেরদৌস রহমান বলেন, ‘আমরা প্রতিটি বিভাগে চিঠি দিয়েছি, কিন্তু ইংরেজি বিভাগকে প্রোগ্রাম এ দেখা যায়নি। কী কারণে এমনটা হলো, এটা ইংরেজি বিভাগের প্রধানই ভালো বলতে পারবেন।’

এ বিষয়ে জানতে ইংরেজি বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক আসিফ আল মতিনকে কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।

বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী বলেন, ‘গতকাল ব্যস্ততার কারণে বিষয়টা দেখা হয়নি। আজকে বিষয়টা দেখতে হবে।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence