অফিস সময়ের আগে বাসায় ফেরা নিয়ে মারামারিতে জড়ালেন ইবি কর্মকর্তারা
- ইবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৪, ০৭:৫৬ PM , আপডেট: ২৮ আগস্ট ২০২৪, ০৭:৫৬ PM
অফিস সময়ের আগে দুপুর দুইটার বাসে বাসায় ফেরা নিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কর্মকর্তাদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শাখার কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন রেজিস্ট্রার অফিসের শাখা কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেনকে চড়-থাপ্পড় এবং লাথি মারেন বলে জানা যায় ৷ পরে উপস্থিত অন্য কর্মকর্তারা দুজনকে থামিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। বুধবার (২৮ আগস্ট) বেলা আড়াইটার দিকে দ্বিতীয় প্রশাসন ভবন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, গত ২৫ আগস্ট অফিস সময়ের আগে দুপুর ২ টায় কর্মকর্তারা বাসায় ফিরতে শিক্ষার্থীদের বাসে উঠলে কর্মকর্তাদের নামিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। সেদিন বাস থেকে নেমে অফিসে ফিরে যান তারা। পুরো সময় অফিস করে ৪ টায় বাসায় যান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান আজ একইরকম কর্মকর্তারা দুপুর ২ টায় বাসায় ফেরার জন্য বাসে ওঠলে শিক্ষার্থীরা তাদের নেমে যেতে বলেন। এ সময় কয়েকজন কর্মকর্তা নেমে শিক্ষকদের বাসে উঠে চলে যান। অন্যরা বাসেই বসেছিলেন। এ ছাড়া বাসের পাশে কয়েকজন কর্মকর্তা দাড়িয়েছিলেন।
এমন সময় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের শাখা কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন এসে ধমকের সঙ্গে কর্মকর্তাদের ৪ টা পর্যন্ত অফিস করতে বলেন। সেখানে দাড়িয়ে থাকা রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন নেই, তেমন কাজও নেই। এ জন্য তারা দ্রুত বাসায় চলে যেতে চায়। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন চড়-থাপ্পড়, লাথি মারেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
অভিযুক্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শাখার কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা কর্মকর্তাদের যেতে নিষেধ করার পরেও তারা শুনছিলেন না। তখন আমি তাদেরকে দুইটার বাসে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের বাসে চলে যাওয়ার কারণ জানতে চাই এবং বাস থেকে নেমে চারটায় যেতে বলি। এটা সে মাইন্ড করেছে। তখন সাখাওয়াত আামকে বলে আপনি কথা বলছেন কেন? কথাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়।’
ভুক্তভোগী রেজিস্ট্রার অফিসের শাখা কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘বাসায় যাচ্ছি কেন তাই বিল্লাল হোসেন এসে আমাদের বকাবকি করছিলেন। এ সময় আমি বলেছি বিশ্ববিদ্যালয়ে উাপাচার্য, উপ-উপাচার্যসহ প্রশাসন নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে তেমন কাজও নেই। প্রশাসন আসলে আমরা ৪ টা পর্যন্ত অফিসে থাকি। কিন্তু এক পর্যায়ে তিনি আমাকে মেরেছেন। এমন করবে সেটা আমি কল্পনাও করতে পারিনি। বিল্লাল হোসেন নিজেই সবচেয়ে বেশি ফাঁকি দেন।’
অন্য কর্মকর্তারা জানান, এক কর্মকর্তা আরেক কর্মকর্তার গায়ে হাত তোলা কখনোই উচিত নয়। সে অধিকারও তাদের নেই। কারণ তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসক নন। এটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা চাই এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হোক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মামুনুর রশিদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা কর্মকর্তাদের অনুরোধ করেছে পুরো সময় অফিস করার জন্য। তবে এটা নিয়ে তারা মারামারি করবে এটা কোনোভাবেই উচিত নয়। কারণ তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের অথোরিটির কেউ নন। তবে আমরা চাই দুপুরে কর্মকর্তাদের বাস শিডিউলে না রাখা হোক। তাহলে এই সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষকদেরকে বলব আপনারা আপনাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবেন। অফিস সময়টা নিজেদের ডেস্কেই থাকবেন। যে কেউ বিশৃঙ্খলা করলে ছাত্র সমাজ তাকে প্রতিহত করবে। সকলে মিলে একসঙ্গে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করলে এ বিশ্ববিদ্যালয় অনন্য উচ্চতায় পৌছাবে।’