শিক্ষার্থীদের দাবি শিক্ষকদের মাধ্যমে পেশ করার আহ্বান তিতুমীরের উপাধ্যক্ষের

উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মহিউদ্দিন
উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মহিউদ্দিন  © টিডিসি ফটো

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর নানা দাবি-দাওয়া নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই সরকারি তিতুমীর কলেজ উপাধ্যক্ষের কক্ষে শত শত শিক্ষার্থী জড়ো হচ্ছেন। বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী ও ক্লাবের সদস্যরা তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে উপাধ্যক্ষের কাছে যাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে প্রশাসনিক কাজে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন বলে জানান তিতুমীর কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মহিউদ্দিন। রবিবার (২৫ আগস্ট) উপাধ্যক্ষের কার্যালয়ে এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি। 

উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মহিউদ্দিন বলেন, শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিভাগের সমস্যা নিয়ে আসছে, যা প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত করছে। সমস্যাগুলোর জন্য বিভাগের প্রধানের মাধ্যমে অভিযোগ পাঠানো হলে সুবিধা হয়, কারণ এতে সংখ্যা কম থাকে এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমের প্রভাব কম পড়ে। বিভাগের সমস্যাগুলি বিভাগীয় প্রধানের মাধ্যমে আমাদের কাছে আসলে সমস্যার সমাধান করা সহজ হবে।

তিতুমীর কলেজ শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক কাজী ফয়জুর রহমান বলেন, ক্যাম্পাসে শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে এবং ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক কিছুটা দূরে সরে গেছে। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দাবি নিয়ে উপাধ্যক্ষের কক্ষে ভিড় করছে, যা প্রশাসনিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করছে। একসাথে অনেক শিক্ষার্থী আসার কারণে সুশৃঙ্খল সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হচ্ছে এবং বিভ্রান্তি বাড়ছে। শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান: শান্ত থাকুন, অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা দূর করুন, এবং বিভাগীয় প্রধানের মাধ্যমে সমস্যাগুলি জানিয়ে সমাধানের উদ্যোগ নিন। একসাথে কাজ করলে সমস্যার সমাধান সহজ হবে এবং ক্যাম্পাসের পরিবেশ শৃঙ্খল রাখা সম্ভব হবে।

ফেসবুকে এ সংক্রান্ত একটি পোল ক্রিয়েট করে একটি পোস্ট দিয়েছে তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতি। যেখানে লেখা, ‘কলেজে প্রতিনিয়ত প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করছেন একদল শিক্ষার্থী। এতে ব্যাহত হচ্ছে প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম। আপনি কি এটাকে সমর্থন করেন? আপনার কোনো মতামত থাকলে সেটিও জানাতে পারেন কমেন্টবক্সে’। এ পোলে গত চব্বিশ ঘণ্টায় ৯% ভোট হ্যাঁ এবং ৯০% ভোট না পড়েছে।

কমেন্টবক্সে আরিফ এম রাজন মন্তব্য করে বলেন,  প্রয়োজনীয় দাবি দাওয়া তো চাইবেই। এটাকে সমর্থন যে করবে না, কিন্তু সুবিধা ভোগ করবে, তাদের বয়কট করা উচিত৷ তবে একইসাথে একদল অপ্রয়োজনীয় ও ব্যক্তিগত আক্রোশে শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করছে৷ যা আমি সমর্থন করি না৷

অন্যদিকে, প্রতীক সরকার নামের একজন লিখেছেন, একটি ছোট সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে আরেক বড় সমস্যা সৃষ্টি করা কাম্য নয়। আমি এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

এদিকে, একটি সফল অভ্যুত্থানের পর সুশৃঙ্খল সমাজে ফিরে যাওয়ার প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বলেন, শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যে ধরনের সম্পর্ক আশা করা হয়, সেটি ফিরিয়ে আনতে হবে এবং কাউকে ব্যক্তিগতভাবে অপমানিত করা যাবে না। তিনি শিক্ষাঙ্গনে ভদ্রতা রক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।


সর্বশেষ সংবাদ